গরু, কাঠ কিংবা কয়লা পাচারের পর এবার পরমাণু বোমা তৈরিতে ব্যবহ্ত মৌল ক্যালিফোর্নিয়ামের (Californium) হদিশ মিলল তৃণমূল (TMC) নেত্রীর বাড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে সম্প্রতি শিলিগুলি (Siliguri) শহরের অদূরে অবস্থিত নকশাল বাড়িতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছ, দার্জিলিং জেলার নকশালবাড়ি ব্লকের বেলগাছি চা-বাগান এলাকায় দেশবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ফ্রান্সিস এক্কা নামে এক ব্যক্তি। ফ্রান্সিসের গ্রেফতারের সঙ্গে এক নতুন দিক উন্মোচিত হয়েছে, যেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা অমৃতা এক্কার স্বামীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ (Military Intelligence) এবং দার্জিলিং জেলা পুলিশের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
Bangladesh: বাংলাদেশ- ISKCON ইস্যুতে ব্যবস্থা নিক ভারত, মোদীর পাশে থাকার বার্তা মমতার
ধৃত ফ্রান্সিস এক্কা কার্শিয়াং বন বিভাগের একটি চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসেবে কাজ করতেন, এবং বেশ কিছুদিন ধরে দেশবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে সুকনা ত্রিশক্তি কর্পসের গোয়েন্দাকর্তারা, কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং দার্জিলিং জেলা পুলিশের পানিঘাটা ফাঁড়ির পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে ফ্রান্সিস এক্কাকে গ্রেফতার করেন।
এদিনের অভিযানে, ধৃতের বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাসস্থান থেকে একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়াম (Californium) পাওয়া গেছে, যা একটি রেডিওএকটিভ উপাদান। এটি মূলত নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহৃত হলেও, এর অবৈধ ব্যবহার অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়াম সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের মতে, ফ্রান্সিসের কাছ থেকে উদ্ধার করা নথি ও ক্যালিফোর্নিয়ামের উপস্থিতি একটি বড় ধরনের চক্রান্তের ইঙ্গিত দেয়।
রাজ্যে ট্যাব কেনার টাকা সাইবার হানায় গায়েব, কড়া পদক্ষেপে মমতার
ফ্রান্সিস এক্কার বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ ওঠেছে যে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশের নিরাপত্তার পক্ষে হুমকি হতে পারে এমন কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন। পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের সূত্রে জানা গিয়েছে, ফ্রান্সিসের সাথে কিছু আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠনের যোগাযোগ রয়েছে, যারা ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া নথি এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থ এসব ষড়যন্ত্রের সত্যতা প্রমাণ করতে পারে।
তদন্তকারী দলের মতে, ফ্রান্সিসের কর্মকাণ্ড শুধু একটি স্থানীয় অপরাধ নয়, বরং একটি বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ হতে পারে, যা দেশের নিরাপত্তার পক্ষে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তেজস্ক্রিয় পদার্থ ক্যালিফোর্নিয়ামের উপস্থিতি এ বিষয়ে আরও গভীর সন্দেহ তৈরি করেছে, কারণ এটি সাধারণত অস্ত্র এবং পরমাণু পরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
স্বাস্থ্যসাথীর ব্যবহারে অনিয়ম, তদন্তের ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
গ্রেফতারির পর, পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যে একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের প্রধান লক্ষ্য হল ফ্রান্সিসের সঙ্গে আরও কেউ বা কোনও সংগঠন জড়িত কি না তা অনুসন্ধান করা। গোয়েন্দারা সন্দেহ করছেন যে, ফ্রান্সিস এক্কার সঙ্গেও আরও কিছু স্থানীয় ব্যক্তি বা দলের যোগসাজশ থাকতে পারে, যারা তার মাধ্যমে দেশবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত।
এছাড়া, পুলিশ আরও তদন্ত করছে যে কিভাবে ক্যালিফোর্নিয়াম পদার্থটি তার কাছে পৌঁছালো এবং কী উদ্দেশ্যে এটি সংগ্রহ করা হয়েছিল। তেজস্ক্রিয় পদার্থটি সঠিকভাবে কোথা থেকে এসেছে, তা জানা না গেলে পুরো চক্রান্তের গতি আরও স্পষ্ট হতে পারে।