বড় ধাক্কা তৃণমূলে! শুভেন্দু অধিকারীর দেখানো পথে বাবা ও ভাই,

কাঁথি: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দেখানো পথে বাবা ও ভাই। আগেই দাদার দেখানো পথে বিজেপি’তে যোগদান করেছিল ভাই সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari)। ছেলেরা যে দিকে…

কাঁথি: বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দেখানো পথে বাবা ও ভাই। আগেই দাদার দেখানো পথে বিজেপি’তে যোগদান করেছিল ভাই সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari)। ছেলেরা যে দিকে আমিও সেদিকে থাকবো! লোকসভা নির্বাচনের মুখে কাঁথির বর্ষিয়ান সংসদ শিশির অধিকারীর মন্তব্য ঘিরে জোরজল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের ওপর আক্ষেপ উগরে তাঁর পরিস্কার কথা যেদিন দলের হুইপ উপেক্ষা করে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলাম সেদিন থেকেই আমরা বিজেপিতে। বাড়ীর মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে কাঁথির অধিকারী বাড়ির কর্তা শিশির অধিকারী ও সেজো ছেলে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলে থেকে যান। দু’জনে বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন এমন সম্ভাবনা বারবার শোনা গেলেও দু’জনে এখন আনুষ্ঠানিক ভাবে এখন বিজেপিতে যোগ দেননি। যদিও বর্ষিয়ান সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari)-র দাবি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ না দিলেও তাঁরা তৃণমূলে নেই। ছেলে শুভেন্দুর সঙ্গে রয়েছেন।

গত ২১ শে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল নিয়ে তাঁর গলায় আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছিল। তবে এরপর তাঁকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে সেভাবে দেখা না গেলেও ।এবারের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি আবার রাজনৈতিক টর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। তিনি পরিস্কার বুঝিয়ে দিলেন তিনি বা অধিকারী পরিবারের কেউ তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তবে তাঁর নিজের কোন সিদ্ধান্ত নেই ছেলেরা যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই তাঁর সিদ্ধান্ত। তিনি জানালেন ছেলেরা মানুষের সঙ্গে আছেন তাই এই চরম সময়ে তারা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই তাঁর ও পরিবারের সিদ্ধান্ত।

শিশিরবাবু বলেন ” এত অন্যায় দেখার পর তৃণমূলের সঙ্গে থাকা যায় না। আমরা রাজনীতি করেছি মানুষকে পাশে নিয়েই । মানুষের চাওয়া পাওয়াকে গুরুত্ব দেই। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। ২৪ শে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল নিয়ে আবারও আক্ষেপ সুর! তিনি আর তৃণমূলের সঙ্গে নেই তার কথায়’তে পরিস্কার। ৮৭ বছর বয়সেও রাজনীতি তিনি ছাড়ছেন না। যদি ছেলারা প্রার্থী হয় তাহলে জানপ্রাণ লড়িয়ে দেবেন। তাঁর পরিস্কার কথা কালীঘাটে গিয়ে চরম ভুল করেছি। আমরা না গেলে অনেকে নেতা হতে পারতেন না “।

২১ শে বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসনে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তকে ভুল সিদ্ধান্ত বলতে শোনা গেল । তবে বিধানসভা নির্বাচন কিংবা তার পরবর্তী সময়ে তাঁকে আর সেইভাবে রাজনীতির ময়দানে দেখা যায়নি। তবে মেজো ছেলে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর বিজেপিতে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের জোর চর্চার মধ্যেও তিনি চুপ থেকেছেন।

অপরদিকে, তাঁকে এগরার অমিত শাহর সভা মঞ্চে দেখা গেলেও তৃণমূলের পক্ষ থেকেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সেকারণে এখন তিনি খাতা কলমে তৃণমূলের সাংসদ শিশির অধিকারী । তবে তিনি তৃণমূলের সাংসদ হলেও তৃণমূল নেত্রীর নাম নিতে চায় না। শিশিরবাবু আরও দাবি ” আমি বেদনা হত। তৃণমূলের হাফপ্যান্ট নেতারা যেভাবে মন্তব্য করেছে এর পর আর কিছু বলার থাকতে পারে না “। আরও বলেন ” শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলেও আমি চুপ আছি। শুধু নন্দীগ্রামে ওনার দাঁড়ানো ভুল সিদ্ধান্ত বলে জানিয়ে ছিলাম। আমি ও আমার পরিবারকে তৃণমূলের লোকজনের আক্রমনের মুখে পড়তে হয়েছে “।

বস্তুত, কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে তিনি বিধায়ক ,সাংসদ, দলের জেলা সভাপতি সহ কাঁথি পুরসভার পুরপ্রধানের মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও লোকসভা নির্বাচনে মুখে দাঁড়িয়ে তার আক্ষেপ আর তৃণমূল নয়। অধিকারী পরিবারের জন্যে মমতা ব্যানার্জী আজও মুখ্যমন্ত্রী।

তৃণমূল নিয়ে তাঁর আক্ষেপ শোনা গেলেও তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা তা পরিস্কারভ করে কিছুই জানান নি। নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও মানুষের কাছে যাবো। যা দুর্নীতি হয়েছে। তা আর সহ্য করা যাচ্ছে না ! এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল শূণ্য হয়ে যাবে বিজেপি ৪২—৪২ আসন পাবে।

মন্তব্যের তীব্র কটাক্ষ করেছেন রাজস্ব শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও শিশির অধিকারীর মন্তব্য নিয়ে মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন ” কার জন্যে কার বা কোন পরিবারের কি হয়েছে মানুষ সবই জানে। ওনার বয়স হয়েছে। বয়সে মানুষ অনেক কিছু বলে। লোকসভা নির্বাচনের ফলা ফলে সব পরিস্কার হয়ে যাবে “।