Tuesday, October 14, 2025
HomeWest Bengalবাম ভোটে নজর বিজেপির

বাম ভোটে নজর বিজেপির

লোকসভা ভোটে গেরুয়ার টার্গেট লাল। বাম ভোট রামে টানতে মরিয়া বিজেপি। বাম ভোটকে রামে টানাতে কি মরিয়া পদ্মশিবির। কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের মন্তব্য ঘিরে নতুন করে এই সব প্রশ্ন উঠছে। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী এবং বিদায়ী সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। চব্বিশের ভোটে তাঁর নজর বামেদের ভোটে।

Advertisements

সোমবার কোচবিহারে বিজেপির নির্বাচনী সভা। সেখানে পদ্মের প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, ‘যেখানে যেখানে বামপন্থী ভাইদের যত পার্টি অফিস তৃণমূল দখল করেছে, তাঁরা উদ্ধার করতে না পারলে নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর, ভারতীয় জনতা পার্টি সেই সব পার্টি অফিস উদ্ধার করে বামপন্থী ভাইদের হাতে তুলে দেবে। কিন্তু অনুরোধ একটাই, ভোটগুলো নষ্ট করবেন না। যেখানে ভোট দিলে আপনাদের ভোট কাজে লাগবে, আপনাদের ভোট সেখানে দেবেন।’

Advertisements

পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে নিশীথ প্রামাণিকের এই মন্তব্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, একসময় বামেদের গড় ছিল কোচবিহার। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত টানা এই লোকসভা কেন্দ্রে জেতে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। ২০১৪ সালে জেতে তৃণমূল। ২০১৯ সালে বিজেপি। ভোটের ফলেই স্পষ্ট, বামেদের ভোট রামে যাওয়াতেই ২০১৯ সালে কোচবিহারে জেতে বিজেপি। ২০১৪ সালে কোচবিহারে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী পান প্রায় ৩৩ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালে তা দাঁড়ায় তিন শতাংশে। অর্থাৎ বামেদের ভোট কমে প্রায় তিরিশ শতাংশ।

কোচবিহারে বামেদের ভোট ক্ষয় হয়েছে আর বিজেপি বেড়েছে। ২০১৪ সালে কোচবিহারে বিজেপি প্রায় ১৬ শতাংশ ভোট পায়। উনিশে সেটাই হয় প্রায় ৪৮ শতাংশ। অর্থাৎ বিজেপির ভোট বাড়ে ৩২ শতাংশ। এতেই স্পষ্ট বামেদের ভোট গিয়েছিল বিজেপিতে।

শুধু কোচবিহার নয়, ২০১৯ সালে রাজ্যজুড়েই এই সমীকরণ দেখা গিয়েছে। যার জেরেই বিজেপি ২ থেকে একলাফে পৌঁছে যায় আঠেরোয়। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বামেরা পায় ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট। উনিশে যা কমে হয় সাড়ে সাত শতাংশ। অর্থাৎ বামেদের ভোট কমে প্রায় ১৮ শতাংশ। আর উনিশে কংগ্রেসের কমেছিল প্রায় সাত শতাংশ ভোট। দুই দল মিলিয়ে ভোট কমে প্রায় ২৫ শতাংশ। আর ষোলোর তুলনায় উনিশে বিজেপির ভোট বাড়ে প্রায় তিরিশ শতাংশ। এই অঙ্কেই স্পষ্ট, উনিশের লোকসভা ভোটে বামেদের ভোটের একটা অংশ গিয়েছিল রামে।

সেই পথেই ফের বামেদের ভরসাতেই ভোটের বৈতরণী পার করতে চাইছে বিজেপি। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে দেরি করেনি তৃণমূল। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেছেন, ‘বামেদের পার্টি অফিস ফেরত দেওয়ার আগে ত্রিপুরায় গিয়ে সিপিআইএমের যত অফিস বিজেপি দখল করেছে তার একটা অংশ ফেরত দিক। যে কথাটা বলেছে সেটা ওর চরিত্রের সঙ্গে মানানসই। কারণ ও হচ্ছে, সুপারি কিলারের মতো। সুপারি কিলার যেমন পয়সার বিনিময়ে মানুষ খুন করে, ও তেমন ভোটের বিনিময়ে সিপিআইএমের পার্টি অফিস উদ্ধারের কথা বলছে।’

অন্যদিকে, এ বিষয়ে তৃণমূল-বিজেপি দুই দলকেই আক্রমণ করেছে বামেরা। কোচবিহারের সিপিআইএম জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেছেন, ‘নিশীথ প্রামাণিক আগে তৃণমূলের নেতা ছিলেন। তাঁর হয়ে প্রচারে আসা শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। এখন বড় বড় কথা বলছেন। এগুলো হচ্ছে মানুষকে বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্র। বাংলার মানুষ তৃণমূল-বিজেপি দুই দলকেই চিনে নিয়েছে। দুই দলেরই হেডকোয়ার্টার নাগপুর। যার নেতা মোহন ভগবত। এখানে এরা নাটক করছে।’

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments