নিউটাইনে রেস্তোরাঁর মালিককে মারধরের ঘটনায় শেষপর্যন্ত ভুল স্বীকার করলেন অভিনেতা ততা চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। ক্ষমা চেয়ে সাসক দলের বিদায়কের দাবি, ‘হিট অফ দ্য মোমেন্ট’-এ ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন তিনি, যা বাঞ্ছনীয় ছিল না।
সাপুরজির একটি রেস্তোরাঁয় ‘ফেলু-বক্সী’র দ্বিতীয় শেডিউলের শ্যুটিং সারছিলেন অভিনেতা। সেখানেই পরিস্থিতি হঠাৎ জটিল হয়ে পড়ে। রেস্তোরাঁর কর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিধায়ক সোহম ও তাঁর অনুগামীরা। রেস্তোরাঁ মালিককে সোহন মারধর করেন বলেও অভিযোগ। অভিয়োগ দায়ের হয় থানায়।
ঘটনা ঘিরে হইচই পড়ে যায়। প্রশ্নের মুকে পড়ে জনপ্রতিনিধির ভূমিকা। এরপরি সংবাদ মাধ্যমে মুখ খোলেন সোহম চক্রবর্তী। ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘ছাদে আমাদের শ্যুট চলছিল। সেই সময় চিৎকার চেঁচামেচি ঝামেলার আওয়াজ পাই। এরপর উপর থেকে দেখি আমার নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের সঙ্গে হোটেল স্টাফদের ধাক্কাধাক্কি, বচসা হচ্ছে। আমি অবাক হয়ে যাই যে পুলিশের গায়ে হাত দিচ্ছে এ কী কাণ্ড।’
চণ্ডীপুরের বিধায়কের সংযোজন, ‘এরপর নিচে গিয়ে কথা বলি। আর একটা গাড়ি সরানো নিয়ে এত ঝামেলা কেন আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তারপর শুনি উনি বলছেন আমরা কোনও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিনি না। কোনও বিধায়ক বুঝি না। এই সব উল্টো পাল্টা কথা বলেছেন।’
অভিনেতা তথা তৃণমূল বিধায়কের দাবি, ‘আমি তখনই রেগে গিয়েছি। আমিও দু-একটা কথা বলি। ধাক্কাধাক্কি হয়। হিট অফ দ্য মোমেন্ট আমি চড়-থাপ্পড় মারি। স্বীকার করছি। হয়ত হওয়া উচিৎ ছিল না। হয়ত এটতা মাথা গরম করা উচিৎ হয়নি।’
রেকর্ড ভোটে জয়, তারপরই সটান দিল্লিতে! মন্ত্রী হতে পারেন বাংলার এই বিজেপি সাংসদ
তবে প্রহীত রেস্তোরাঁ মালিকের দাবি, তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি।
রেস্তোরাঁর মালিক আলম জানান, পার্কিংকে নিয়ে সব ঝামেলার সূত্রপাত। বলেন, ‘রেস্তোরাঁ আমার। দু-তিন দিন আগে সোহম এখানে শ্যুট করবে বলে এসেছিল। ম্যানেজার আমাকে বললে, আমি অনুমতি দিয়ে দিয়েছিলাম। কোনও পয়সা নেব না বলেও জানাই। সেদিন সকালে এসেছি। দেখলাম রেস্তোরাঁর সামনে ওদের গাড়ি ভর্তি। আমি বললাম, আমার একটা গেস্ট আসবে, তাঁর পার্কিংয়ের অন্তত ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক। সোহমের যিনি নিরাপত্তারক্ষী তিনি বলেছেন, আমরা পুলিশ। কোনও গাড়ি সরবে না। আমি তাতে বলি, বাবু আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। একটা গাড়ির জায়গা দিচ্ছি। তোমরা সরিয়ে নাও।’
আলমের দাবি, ‘এরপরই ওনার যে স্টাফ, তাঁরা আমার স্টাফদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়ে। আমার স্টাফদের গায়ে হাত তোলে। আমি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে হাত জোড় করে বলি, ঝামেলা কোরো না। মিটিয়ে নাও। লোকাল থানায় ফোন করো। ওদের একজন এসে আমার জামার কলার ধরে বলছে, জানিস সোহম হচ্ছে অভিষেকের বন্ধু। আমি তাতে বলি, অভিষেক না মোদী কার বন্ধু আমার জানার দরকার নেই। এসবে আমি যাব না। তোমরা শুধু একটা গাড়ি সরিয়ে নাও। তাতে ওরা রীতিমতো একএক করে আমাদের স্টাফদের ধরে মারতে শুরু করে। এমন অবস্থায় সোহম উপর থেকে উঠে এসে আমার কলার ধরে এখানে (চোখ দেখিয়ে) এসে একটা ঘুষি মারল। তারপর একটা লাথি মারল। এই সমস্ত কিছুর ভিডিয়ো ফুটেজ আছে আমার কাছে।’
থানায় গেলেও তিনি শুরুতে সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ রেস্তোরাঁ মালির আলমের। তবে, পরে শনিবার দুপুরে অভিযোগ দায়ের করা হয়।