চাঁদের পর সূর্যের উপর জয় ভারতের। উত্তেজনায় ফুটছে দেশবাসী। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) শনিবার নির্দিষ্ট সময়ে দেশের প্রথম মহাকাশ-ভিত্তিক মিশন ‘Aditya L1’ মহাকাশযানটিকে সূর্যের গবেষণার জন্য পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে তার চূড়ান্ত গন্তব্য কক্ষপথে স্থাপন করেছে।
মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে সূর্য-পৃথিবী সিস্টেমের ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট 1t (L1) এর চারপাশে একটি হেলো অরবিটে পৌঁছেছে। ‘L1 বিন্দু পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে মোট দূরত্বের প্রায় এক শতাংশ।
ইসরোর আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে ‘L1 পয়েন্ট’ এর চারপাশে হেলো অরবিটে স্যাটেলাইট থেকে সূর্যকে একটানা দেখা যায়। যারফলে সৌর ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণে এবং বাস্তব সময়ে মহাকাশের আবহাওয়ার উপর এর প্রভাব পর্যবেক্ষণে আরও বেশি সুবিধা হবে।’লাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট’ হল সেই অঞ্চল যেখানে পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে মাধ্যাকর্ষণ নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। হেলো অরবিট হল একটি পর্যায়ক্রমিক, ত্রিমাত্রিক কক্ষপথ L1, L2 বা L3 ‘ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট’-এর একটির কাছাকাছি।
শুক্রবার ইসরোর এক আধিকারিক পিটিআইকে জানিয়েছিলেন, “শনিবার বিকেল ৪টার দিকে Aditya L1-কে L1-এর চারপাশে হেলো অরবিটে রাখা হবে। যদি আমরা তা না করি, তাহলে সম্ভবত এটি সূর্যের দিকে যাত্রা চালিয়ে যাবে।” সেই অনুযায়ী আজ শনিবার ঠিক ৪টের সময় অরবিটে স্থাপন করা হল।
পিএসএলভি ৬৩ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ওড়ার পর Aditya-L1-কে পৃথিবীর চারপাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে স্থাপন করে। উল্লেখ্য, ISRO-এর পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (PSLV-C57) ২রা সেপ্টেম্বর শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের (SDSC) দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে Aditya-L1 সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে। তিনি বলেছিলেন যে মহাকাশযানটি বিভিন্ন পর্যায় অতিক্রম করে এবং পৃথিবীর প্রভাব বলয় এড়িয়ে সূর্য-পৃথিবী ‘ল্যাগ্রাঞ্জ পয়েন্ট 1’ (L1) এর দিকে চলে গেছে। ‘Aditya L1’ সৌর করোনার দূরবর্তী পর্যবেক্ষণের জন্য এবং পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে ‘L1’ (সান-আর্থ ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান পয়েন্ট) এ সৌর বায়ুর প্রকৃত পর্যবেক্ষণ পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
এই সূর্য মিশনের মূল উদ্দেশ্য সৌর বায়ুমণ্ডলের গতিশীলতা, সূর্যের বায়ুমণ্ডলের তাপ, সূর্যের পৃষ্ঠে সৌর ভূমিকম্প বা ‘কোরোনাল মাস ইজেকশন’ (সিএমই), সূর্যের জ্বলন্ত ক্রিয়াকলাপ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য এবং পৃথিবীর নিকটবর্তী স্থানের আবহাওয়াগত সমস্যাগুলি বোঝা। Aditya L1-এর সাফল্যের সঙ্গে সূর্যের সমস্ত রহস্য জানা যাবে বিশ্ববাসীর কাছে।