Buddhadeb Bhattacharya: কোটি কোটি টাকার দুর্নীতিতে মমতার মন্ত্রী হেফাজতে, এখনও নীরব বুদ্ধবাবু

তিনি মুখ খোলেন না। কিছু বিশিষ্ট মানুষের প্রয়াণে শোকবার্তা দেন অবশ্য। এর বেশি তেমন কোনও ভূমিকা নেই। অভিযোগ, পরাজয় না মানতে পারা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Buddhadeb…

Buddhadeb Bhattacharya

তিনি মুখ খোলেন না। কিছু বিশিষ্ট মানুষের প্রয়াণে শোকবার্তা দেন অবশ্য। এর বেশি তেমন কোনও ভূমিকা নেই। অভিযোগ, পরাজয় না মানতে পারা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে (Buddhadeb Bhattacharya) জাগতিক তেমন কিছু নাড়া দেয়না তেমন। সর্বশেষ যেবার অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন, ‘রাজ্যবাসী কেমন আছেন’,  ‘আমার জন্য অন্য কারোর যেন অসুবিধা না হয়’ এটাই বলেছিলেন।

রাজ্য তো বটেই দেশ তোলপাড় তৃণমূল কংগ্রেস সরকার তথা মমতা সরকারের আমলে শিক্ষক নিয়োগ সহ একাধিক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে। এসএসসি নিয়োগে কোটি কোটি টাকা আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব ও বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইডি হেফাজতে। পুরো তদন্ত প্রক্রিয়ায় আরও তৃণমূলের হেভিওয়েটরা হেফাজতে আসতে চলেছে বলেই ইঙ্গিত বিশিষ্ট আইনজীবীদের।

মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সঙ্গে বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের তুলনা চলছে। সর্বক্ষেত্রে একই মন্তব্য, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সততা প্রশ্নাতীত। তাঁর সরকারের মন্ত্রীদের দূর্নীতিতে জেল হয়নি। এমনকি সরকার চলে যাওয়ার পরেও দুর্নীতির কোনও মামলায় সিপিআইএম তথা বাম মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এমন ইডি, সিবিআই অভিযানের রোমহর্ষক পর্ব দেখা যায়নি।

তবে প্রশ্ন উঠছে, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের হিমশীতল নীরবতা নিয়ে। বাম নেতাদের অনেকেই মনে করছেন, বুদ্ধবাবু এমন নোংরা বিষয় নিয়ে মন্তব্য করবেন না তা জানাই ছিল।

কিন্তু এও প্রশ্ন, লক্ষাধিক চাকরি প্রার্থীর মেধা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা, ঘুষ দিয়ে অযোগ্যদের চাকরি দানের মতো আর্থ সামাজিক ইস্যুটি যখন দগদগে কুষ্ঠের মতো ছড়িয়েছে তখনও ছোট্ট ফ্ল্যাটের নিভৃতে এক চিলতে ঘরে কেন নীরব প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী?

এ রাজ্যে সাড়ে তিন দশকের বামফ্রন্ট শাসনের দু’জন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দ্বিতীয়জন কর্মসংস্থানের প্রশ্নে শিল্পায়ণের স্বপ্নে বুঁদ হয়েছিলেন। জমি অধিগ্রহণ ইস্যুতে তাঁর দুর্ভেদ্য সরকারের ভিত নড়িয়ে সরকাটিকে ফেলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বশেষ লড়াইয়ে বামফ্রন্ট শূন্য হয়ে গেছে এ রাজ্যে। সরকার পতনের বছরে পদত্যাগপত্র রাজ্যপালের হাতে তুলে দিয়ে ধীরে ধীরে একাকী হয়ে গেলেন বুদ্ধবাবু। তিনি আর দলকে নেতৃত্ব দিতে নামেননি। সরে গেছেন আড়ালে।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নীরব। তাঁর নীরবতা কি কোনও কথাহীন প্রতিবাদ! পাম অ্যাভিনিউয়ের আটপৌরে কামরাগুলো হয়ত সাক্ষী।