দুর্নীতি ইস্যুতে বিজেপিকে ছেড়ে সিপিআইএমকে ‘ভয়’ পাচ্ছেন মমতা

      একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের। পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি আড়াল করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলের নেতাদেরই। বেসামাল হচ্ছেন তৃণমূল…

short-samachar

 

   

একের পর এক দুর্নীতিতে নাম জড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের। পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি আড়াল করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে দলের নেতাদেরই। বেসামাল হচ্ছেন তৃণমূল (TMC) শীর্ষস্থানীয় নেতারা। তাই তাঁদের বক্তব্যে ‘দাওয়াই’য়ের কথা শোনা যাচ্ছে৷ কিন্তু স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) মুখে শোনা গেল নিজ দলের স্বচ্ছতার বচন৷ আর মাপকাঠিতে রাখলেন সিপিআইএমকে (CPIM)৷

রাজ্যে যখন বামদের সূর্য মধ্যগগণে তখন বিরোধী পক্ষে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা দেশজুড়ে তাঁকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে শুরু থেকেই। খুব কাছ থেকে দেখেছেন বাম রাজত্বের কার্যকলাপ। তাই এখন একের পর এক নেতারা সিবিআই, ইডির জালে জড়াতেই স্বচ্ছতার মাপকাঠি নিয়ে বারবার বাম আমলের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন৷ তবে কী বাম নেতাদের ভয় পাচ্ছেন মমতা? উঠছে প্রশ্ন।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই মুহুর্তে যিনি তৃণমূলের ফাঁক ফোঁকর নিয়ে দিল্লির দরবার করছেন তিনি আর কেউ নন, তাঁরই এক সময়ের মমতার সহযোদ্ধা ও এhc বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যিনি জেলায় জেলায় গিয়ে নাম ধরে বলে দিচ্ছেন কোন নেতা কোন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আবার তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, কাগজে মুড়ে টাকা নিতে যাতে দেখা গেল তাঁকে ডাকা হল না কেন? সারদা মামলায় সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে শুভেন্দুর নাম উল্লেখ থাকলেও তাঁকে ডাকা হচ্ছে না কেন?

শুভেন্দুর প্রসঙ্গ শুধুমাত্র তৃণমূল তোলেনি৷ শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ টানা হয়েছে ২৪ নম্বর আকবর রোডেও। যখন ঘন ঘন ইডির তলবে হাজিরা দিচ্ছিলেন রাহুল গান্ধী৷ যদিও শুভেন্দু সম্পর্কে রবিবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধুমাত্র নন্দীগ্রামের কাসুন্দি ছাড়া আর কিছু ঘাঁটলেন না। বরং নিজের ছেলের সঙ্গে তুলনা করলেন শুভেন্দুকে।

অন্যদিকে, স্বচ্ছতার মাপকাঠি নিয়ে বাম নেতাদের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমেই উঠে আসছে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুজন চক্রবর্তীদের নাম৷ কখনও বার্থ সার্টিফিকেটের ফাইল নিয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে হুঁশিয়ারি, কখনও চিরকুটে চাকরি। রবিবার আবার চিটফান্ডে সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে সরব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সম্প্রতি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেটাকে ‘সেটিং’ বলেও ব্যাখা দিয়েছেন সিপিআইএম। সরাসরি বাম নেতাদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, সিপিএমের ইয়েচুরি গেলে সেটিং হয় না। আর আমি গেলেই সেটিং? আমায় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর নিয়ম মেনে যেতে হয়। রাজ্যের পাওনা নিয়ে কথা বলতে যেতে হয়।

সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, তৃণমূল দুর্নীতির আখড়া। অনুব্রত তাঁর নাটবল্টু। নাটবল্টু ঢিলে হলে মমতার তো চিন্তা হবেই। মমতা অনুব্রতের পাশেই ছিলেন। অনুব্রত ওর ঘরের লোক। অনুব্রত টাকা চুরি করে যদি কালীঘাটে না পাঠায় তাহলে এত ঠাঁটবাট হবে কী করে?

সুজন চক্রবর্তী বলেন, অনুব্রতর কাছে মধুভাণ্ড রয়েছে। তাই তাঁর পাশে নেতারা থাকবেন। এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু তৃণমূলকে যাঁরা সমর্থন করেছিলেন তাঁরা এখন বুঝতে পারছেন, তাঁদের সমর্থনকে সামনে রেখে তৃণমূল নেতারা কী ভাবে বাংলাকে লুটেপুটে খাচ্ছেন৷