চরম আর্থিক সঙ্কট মেটাতে মজুত সোনা বিক্রির সিদ্ধান্ত শ্রীলঙ্কা সরকারের

তীব্র আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা (srilanka)। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের মজুত সোনা (gold) বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে (rajapaksha)। শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল ব্যাংক…

তীব্র আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা (srilanka)। পরিস্থিতি সামাল দিতে দেশের মজুত সোনা (gold) বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে (rajapaksha)। শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল ব্যাংক এক বিবৃতিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। সম্প্রতি শ্রীলঙ্কায় মুদ্রাস্ফীতি (inflation) নতুন রেকর্ড করেছে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে খাদ্যদ্রব্যের। সাধারণ মানুষের অবস্থা একেবারে নাজেহাল।

শ্রীলঙ্কার অন্যতম খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ এবং সেদেশের সেন্ট্রাল ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ডব্লিউএ উইজেওয়ার্ধানে ডেইলি মিররকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিকল্প কোনও রাস্তা খোলা না থাকলে তখন মজুত সোনা বিক্রি করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় থাকে না। এই মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিকাঠামো একেবারে ভেঙে পড়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সোনা বিক্রি করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। সরকার ঠিক সেই রাস্তাতেই হেঁটেছে।

জানা গিয়েছে, ২০২০ সাল থেকেই শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। এরই মধ্যে উপস্থিত হয় করোনা। এই মারণ ভাইরাস দেশের অর্থনীতিতে আরও বড় আঘাত হানে। করোনাজনিত কারণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা। সে দেশের বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। অন্যদিকে দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আকাশছোঁয়া হয়েছে । ইতিমধ্যেই চিনের কাছে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। চিনের কাছ থেকে নেওয়া এই ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই কার্যত দেউলিয়া হয়ে পড়েছে এই দ্বীপ রাষ্ট্র। এই মুহূর্তে শ্রীলংকার মাথার উপরে রয়েছে ৩৩ মিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণের বোঝা। আর্থিক বিশেষজ্ঞরা স্পষ্ট বলেছেন, দেশের বৃদ্ধির অতি মন্থরগতির জন্যই এই আর্থিক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এই আর্থিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসা শ্রীলঙ্কার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবরের মধ্যে শ্রীলঙ্কাকে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিদেশি ঋণ শোধ করতে হবে। সেটা যে কীভাবে হবে তা ভেবে কূলকিনারা করতে পারছে না রাজাপক্ষে সরকার। ইতিমধ্যেই আর্থিক সঙ্কট মোকাবিলা করতে দেশের নেতা-মন্ত্রীদের সব ধরনের খরচ কাটছাঁট করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এভাবে খরচ কমিয়ে স্বল্পমেয়াদে কিছুটা হলেও দীর্ঘমেয়াদি কোনও সুরাহা মিলবে না।