জরুরি অবস্থা জারির সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক, টুইটার-সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দিল শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka) সরকার।চরম আর্থিক সঙ্কটের কারণে ক্রমশ খারাপ হচ্ছে শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি। চলতি বছরের শুরু থেকেই দ্বীপরাষ্ট্রে আর্থিক অনটন শুরু হলেও শুক্রবার রাত থেকেই দেশজুড়ে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ। সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ক্রমশই বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন।
শ্রীলঙ্কায় আগামী ৪ এপ্রিল সোমবার অবধি এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে। একইসঙ্গে ফেসবুক, টুইটার- সহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গোটা দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস অমিল। কাঁচালঙ্কা থেকে শুরু করে দুধ বা পাঁউরুটি সবকিছুর দাম এতটাই বেড়েছে যে তা সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
বড় শপিংমল থেকে শুরু করে এলাকার ছোটখাট দোকান কোনও জায়গাতেই জিনিসপত্র মিলছে না। এরই মধ্যে ভারত থেকে পাওয়া ডিজেল ও চাল দিয়ে পরিস্থিতি সাময়িক সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে শ্রীলঙ্কা সরকার। কিন্তু এভাবে কতদিন পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
শ্রীলঙ্কার আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটন। কিন্তু করোনার ধাক্কায় দুবছর ধরে পর্যটন শিল্প সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। যার প্রভাব পড়ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে। এরই মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দিতে চিনের কাছ থেকে চড়া সুদে নেওয়া ঋণের ধাক্কায় আরও বেসামাল হয়েছে কলম্বো। সুদ মেটাতে গিয়েই নাজেহাল শ্রীলঙ্কা। দেশটির জনজীবন কার্যত স্তব্ধ।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত শুরু সাধারণ মানুষ প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে বাধ্য হয়ে পথে নেমেছেন। চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। পরিস্থিতি সামাল দিতেই শনিবার থেকে দেশে ৩৬ ঘণ্টার জন্য জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়। সোমবার সকাল ৬ টা অবধি জরুরি অবস্থা জারি থাকবে।
সরকারের দাবি, ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়া রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ ভুয়ো খবরের জেরে দেশে উত্তেজনা বাড়ছে। সরকারি নির্দেশে জানানো হয়েছে, জরুরি অবস্থার নিয়ম অনুযায়ী কার্ফু চলাকালীন অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া সাধারণ মানুষ বাড়ি ছেড়ে বের হতে পারবে না। সেনাবাহিনীর হাতে দেশের শাসনভার তুলে দেওয়া হয়েছে।
এই দ্বীপরাষ্ট্রকে সাহায্য করতে ভারত ইতিমধ্যেই ডিজেল, চাল, অত্যাবশ্যকীয় ওযুধ পাঠিয়েছে। আগামী দু-একদিনের মধ্যেই আরও ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার-সহ বিভিন্ন দেশের কাছে সরাসরি সাহায্য চেয়েছে কলম্বো।