মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে রেপো রেট বাড়াল আরবিআই

 অবশেষে বাড়ল রেপো রেট। ঠিক তিন বছর পর রেপো রেট বৃদ্ধি করল রিজার্ভ ব্যাংক। শুধু বৃদ্ধি নয়, এক ধাক্কায় রেপো রেট বাড়ানো হলো ৪০ বেসিস…

RBI

 অবশেষে বাড়ল রেপো রেট। ঠিক তিন বছর পর রেপো রেট বৃদ্ধি করল রিজার্ভ ব্যাংক। শুধু বৃদ্ধি নয়, এক ধাক্কায় রেপো রেট বাড়ানো হলো ৪০ বেসিস পয়েন্ট। এই বৃদ্ধির ফলে রিজার্ভ ব্যাংকের নতুন রেপো রেট হল ৪.৪০ শতাংশ। রেপো রেট বৃদ্ধির ফলে ঋণে সুদের হার নিশ্চিতভাবেই বাড়তে চলেছে।

রেপো রেট বলতে বোঝায়, রিজার্ভ ব্যাংক সুদের যে হারে অন্য ব্যাংকগুলিকে ঋণ দিয়ে থাকে। ২০২০ সালের মে মাসের পর এই প্রথম সুদের হার বাড়াল আরবিআই। স্বাভাবিকভাবেই রেপো রেট বৃদ্ধির ফলে যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন তাদের ইএমআই বাবদ কিছু বাড়তি অর্থ গুনতে হবে। তবে লাভবান হবেন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। এদিন রেপো রেট বৃদ্ধির খবর আসতেই এদিন দেশের শেয়ার বাজারে বড় মাপের ধস নামে।

রিজার্ভ ব্যাংকের আর্থিক নীতি নির্ধারণ কমিটির (এমপিসি) বৈঠক সর্বসম্মতিক্রমে রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আরবিআই-এর গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। শক্তিকান্ত আরও বলেন, দেশে প্রতিদিনই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিপুল মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে। সাধারণ মানুষের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতেই রেপো রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত। সুদের হার বৃদ্ধির জন্য শক্তিকান্ত চারটি কারণের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথমটি হল ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি। দ্বিতীয় কারণ হল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যুদ্ধের উত্তেজনা। তৃতীয়ত অপরিশোধিত তেলের লাগামছাড়া দর এবং চতুর্থ কারণ হল বিশ্বজুড়ে পণ্য সরবরাহের সঙ্কট।

রেপো রেটের পাশাপাশি এদিন ক্যাশ রিজার্ভ রেসিও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানো হয়েছে। আরবিআই-এর এই জোড়া সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে ব্যাঙ্কগুলি ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংযত হবে। যার ফলে বাজারে নগদের জোগান নিয়ন্ত্রিত হবে। আরবিআই-এর অনুমান, নগদের জোগান কমলে সাধারণ মানুষ বিলাসবহুল পণ্যের কেনাকাটা কমিয়ে ফেলবে। তারা শুধুমাত্র জরুরি বা প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটার পিছনেই অর্থ ব্যয় করবে। যা নিশ্চিতভাবেই বাজারের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়ক হবে। তবে আরবিআই-এর এই সিদ্ধান্ত সামনে আসার পরেই শেয়ারবাজারে এদিন বড় মাপের ধস নামে।

এদিন এলআইসির আইপিও বাজারে এসেছে। কাজেই এদিন শেয়ারনবাজার চাঙ্গা হবে এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু পরিবর্তে এদিন শেয়ার বাজারে পতন ঘটে। জানা গিয়েছে, এদিন বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার সূচক সেনসেক্স ৯৫৩.৮৩ পয়েন্ট পড়ে যায়। বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স ৫৬০২২.১৬ পয়েন্টে থিতু হয়। পাশাপাশি জাতীয় শেয়ার বাজারের সূচক নিফটি এদিন ১.৬৯ শতাংশ পড়ে ১৬৭৮১.৪৫ পয়েন্টে এসে দাঁড়ায়।