রাজনৈতিক ডামাডোলে ‘মানিক জোড়’ দেখলেন ত্রিপুরাবাসী

প্রসেনজিৎ চৌধুরী: নীরবে ছোট বাক্যের পদত্যাগ পত্র লিখে রাজনৈতিক বোমা ফাটিয়েছেন ত্রিপুরার সদ্য প্রাক্তন মু়খ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি ত্রিপুরার দশম মু়খ্যমন্ত্রী ছিলেন। টানা সিপিআইএমের পঁচিশ…

প্রসেনজিৎ চৌধুরী:

নীরবে ছোট বাক্যের পদত্যাগ পত্র লিখে রাজনৈতিক বোমা ফাটিয়েছেন ত্রিপুরার সদ্য প্রাক্তন মু়খ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি ত্রিপুরার দশম মু়খ্যমন্ত্রী ছিলেন। টানা সিপিআইএমের পঁচিশ বছরের শাসনের পর বিজেপি আইপিএফটি জোটের হয়ে পদভার গ্রহণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলতেন ত্রিপুরায় মানিক যুগ শেষ হয়ে হীরা যুগ এসেছে।

মোদীর ‘হীরা’ আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগেই ঔজ্বল্যতা হারিয়ে এখন প্রাক্তন। ত্রিপুরায় গত পাঁচ দশকে এই প্রথমবার জোড়া মানিকের বিধানসভা হলো।

সরকারে মানিক আর বিরোধী নেতাও মানিক! ত্রিপুরা বিধানসভায় দুই মানিক মুখোমুখি হবেন অধিবেশনে। রাজ্যে এমন জোড়া মানিক বিধানসভা আগে হয়নি।

ত্রিপুরার একাদশতম মুখ্যমন্ত্রী হলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ ড.মানিক সাহা। আর বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। তিনি টানা আড়াই দশকের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন ও সিপিআইএম শীর্ষ নেতা।

ত্রিপুরা বিধানসভার খতিয়ান বলছে ১৯৬৩ সালে প্রখম মুখ্যমন্ত্রী হন শচীন্দ্রলাল সিংহ। তারপর কংগ্রেস জমানা পেরিয়ে এ রাজ্যে প্রথম বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। মুখ্যমন্ত্রী হন নৃপেন চক্রবর্তী। বাম সরকারের পতন হয় ১৯৮৮ সালে। ফের কংগ্রেস দখলে গিয়েছিল ত্রিপুরা। পরপর মুখ্যমন্ত্রী বদল করে গোষ্ঠীকোন্দল সামাল দেয় কংগ্রেস। মু়খ্যমন্ত্রী হন সুধীর রঞ্জন মজুমদার ও সমীর রঞ্জন বর্মণ।

তীব্র রাজনৈতিক ডামাডোল ও সশস্ত্র উপজাতি সন্ত্রাসবাদে রক্তাক্ত ত্রিপুরায় ফের বামফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে। মুখ্যমন্ত্রী হন ত্রিপুরার কিংবদন্তি কমিউনিস্ট নেতা দশরথ দেব। সেই শুরু। এরপর সিপিআইএমের তরফে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় মানিক সরকারকে। তিনি টানা ২০ বছর মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

২০১৮ সালে মানিক সরকারের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়। এ রাজ্যে প্রথমবার ক্ষমতায় আসে বিজেপি ও উপজাতি দল আইপিএফটি জোট। তবে সরকারের তীব্র গোষ্ঠিদ্বন্দ্বের জেরে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরলেন বিপ্লব দেব। নতুন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা।

সরকারে মানিক ও বিরোধীতেও মানিক। জোড়া মানিক দেখলেন ত্রিপুরাবাসী।