শ্রীলঙ্কার মতোই হাল হতে চলেছে পাকিস্তানের!

শ্রীলঙ্কার মতোই আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান (Pakistan)। বিশিষ্ট মহলের দাবি, পাক সরকারের কোষাগার খালি। ফলে প্রশ্ন উঠছে কীভাবে ঋণ শোধ করবে দেশটি?দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ…

economic-crisis-at-pakistan

শ্রীলঙ্কার মতোই আর্থিক সংকটে ভুগছে পাকিস্তান (Pakistan)। বিশিষ্ট মহলের দাবি, পাক সরকারের কোষাগার খালি। ফলে প্রশ্ন উঠছে কীভাবে ঋণ শোধ করবে দেশটি?দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষের প্রথম তিন ত্রৈমাসিকে পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৮৮৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

এদিকে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক দুরবস্থার সাক্ষী হয়ে উঠেছে গোটা বিশ্ব। দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। চরম অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে দেশটি। খাবার এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাও এখন মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছে। এখন একই রকম পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে আরেক প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানকে। পাকিস্তানের অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়েও খারাপ হতে পারে। পাকিস্তানে একদিকে বৈদেশিক ঋণ বাড়ছে, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত কমছে।

নগদ অর্থের সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক অর্থনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। ক্রমবর্ধমান ঋণের মধ্যে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত খালি হয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০.৮৮৬ বিলিয়ন ডলার।

২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৮৮৬ বিলিয়ন ডলারে, যা ২০২১ সালের পুরো অর্থবছরে ছিল ১৩ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।

২০২২ সালের প্রথম প্রান্তিকে ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৬৫৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২০-২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৩ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৩৫৭ বিলিয়ন ডলার এবং তৃতীয় প্রান্তিকে ৪ দশমিক ৮৭৫ বিলিয়ন ডলার।

এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাহ্যিক ক্ষেত্রে পাকিস্তান একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। গত মাসে চিন থেকে ২৩০ কোটি ডলার ঋণ পেলেও স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। প্রতি ত্রৈমাসিকে পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ বৃদ্ধি ইঙ্গিত দেয় যে সরকার তার বিদেশী ঋণ পরিশোধের জন্য উচ্চ হারে ঋণ নিচ্ছে।

স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের জুন মাসের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। জুনে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২২.৬২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

পাকিস্তানের পিটিআই সরকার ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আগে থেকেই ইসলামাবাদকে ঋণ দিতে প্রস্তুত ছিল চিন ৷ কিন্তু দেশে শাহবাজ শরিফের নতুন সরকার গঠনের পরও চিনের কাছ থেকে ঋণ পেতে দু’মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে ৷

পাকিস্তানের আর্থিক খাত এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা এখনও চিন থেকে ঋণের লুকানো ব্যয় নিয়ে সন্তুষ্ট নয়। চিন বেশি হারে এই ঋণ দিয়েছে বলে বাজারের সন্দেহ। সূত্রের খবরপাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ দেশটিকে আশ্বস্ত করে আসছেন যে, আইএমএফ থেকে কয়েক দিনের মধ্যে এক বিলিয়ন ডলারের কিস্তি মুক্তি পেতে পারে, কিন্তু তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও আইএমএফের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি।

আইএমএফের কাছ থেকে তহবিল না পেলে পাকিস্তানও বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে প্রকল্পের জন্য অর্থ পাচ্ছে না। ঋণ মওকুফ করছে পাকিস্তান

একজন সিনিয়র বিশ্লেষক বলেছেন যে চিন জানে যে পাকিস্তান ঋণ পরিশোধ করতে পারে না এবং আইএমএফ পাকিস্তানকে সাহায্য করার জন্য কোনও তাড়াহুড়ো করছে না। সেই কারণেই পাকিস্তানকে চড়া হারে ঋণ দিয়েছে চিন। ঋণ নিয়ে ঋণ শোধ করতে বাধ্য হচ্ছে পাকিস্তান, অর্থাৎ আগামী অর্থবর্ষে পাকিস্তানের উপর ঋণের বোঝা আরও বাড়বে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার থেকে ঋণ নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।