শুক্রবার বিকেলে সংবাদের শিরোনামে দুটি প্লট চলছিল৷ একদিকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে চলছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভবিষ্যত নির্ধারণ৷ অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে ৭ লোক কল্যাণ মার্গে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বৈঠক শেষে রাজ্যের বকেয়া টাকার খসড়া এল জনসমক্ষে৷ কিন্তু যা এল না তা হল সাংবাদিকদের সামনে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠক নিয়ে সারমর্ম৷ তাই আলোচনা বিষয়বস্তু বোঝা গেলেও মমতা বিনা শব্দব্যয় নিয়েও খোঁচা দিতে ছাড়েনি সিপিআইএম।
টুইট করে মোদী মমতার বৈঠক নিয়ে কটাক্ষ করেছেন সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য সুজন চক্রবর্তী৷ তিনি লেখেন, “মোদী- মমতার বৈঠক!!রাজ্যের পাওনা-গন্ডার জরুরী হিসেব নিকেষের মিটিং! কিন্তু সঙ্গে না আছে ফাইলপত্র, না আছে আধিকারিকরা। কেন? প্রশাসনিক সভা হলে সাংবাদিকদেরই বা এড়িয়ে গেলেন কেন? ডিল- ২, নাকি বিশেষ সেটিং? মোদি – মমতার একান্ত গোপনীয় বন্দোবস্ত কেন? ধরা পড়ে যাচ্ছেন- মুখ্যমন্ত্রী।”
যদিও সিপিআইএমের তরফে এর আগেও এই বৈঠককে ‘সেটিং’ বলেই কটাক্ষ করা হয়। পাল্টা যুক্তি দিয়ে তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কিছুদিন আগেই আসানসোলে লোকসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছে। যাঁরা তৃণমূলনেত্রীকে অপবাদ দিচ্ছেন, তাঁদের অন্তত ছ’মাস মুখে কুলুপ দিয়ে থাকা উচিত। মামলার নিষ্পত্তি না হলে মানিকতলার বিধানসভা উপনির্বাচন হবে না। আমরা চাই, সেই ভোটও দ্রুত হয়ে যাক। তা হলে মানুষ কাকে চাইছেন, তার ফয়সলা হয়ে যাবে।
শুক্রবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে ব্যাঙ্কশাল আদালত৷ ইডির গতিবিধি দেখে শুরু থেকেই এদিন মনে হয়েছিল নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জেল হেফাজতের জন্য সমস্ত প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ আরও বাকি রয়েছে৷ এমনটাই ইডি সূত্রে খবর ছিল। আদালতের রায়ে সেটায় সবুজ সংকেত মিলল।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজকের বৈঠকে অনেকেই মনে করেছিলেন, এবার হয়তো শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তেও ভাটা পড়তে চলেছে। মনে করা হচ্ছিল, এই মামলার গতিবিধি অনেকটা সারদা, নারদকাণ্ডের মতো হবে৷ এমনকি কেন্দ্রের নেতাদের কাছে বারবার অনুরোধ করেছেন শুভেন্দু-সুকান্তরা৷ শুভেন্দুদের কথাতেই সায় দেবেন কেন্দ্রের নেতারা, প্রশ্ন ছিল রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপি সূত্রে খবর, গোটা বিষয়টি আদালতের তত্ত্বাবধানে চলছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গতিবিধি নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ তাই এবিষয়ে এখন ধীরে চলো নীতি নিয়ে এগোচ্ছেন তাঁরা। তবে এই নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রাজ্য বিজেপির৷ তবে তদন্তের স্বার্থে কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে সমস্ত তথ্য তুলে দেবেন তাঁরা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরলেই দিল্লি সফরে যাবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ সেখানে গিয়ে আরও একবার কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দরবার করবেন তিনি। তুলে দিতে পারেন আরও এক তথ্য৷