কোনও আশা নেই তিস্তার জল বণ্টন চুক্তিতে। বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকারের দীর্ঘ কয়েক দশকের চাহিদা আন্তর্জাতিক নদী তিস্তা (Teesta) নদীর জল পাওয়া। ঢাকার কটাক্ষ, সে আশায় ‘পানি’ (জল) ঢেলেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী (Sheikh Hasina) শেখ হাসিনার লক্ষ্য অসমের কুশিয়ারা নদীর ‘পানি’র ভাগ আদায়। সে আশা মিটবে বলেই মনে করছে ঢাকার কূটনৈতিক মহল।
তেলে জলে মাখামাখি শেখ হাসিনার দিল্লি সফর
বাংলাদেশ ও ভারতের এই কূটনৈতিক আসরে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে সাতটি সমঝোতা হবে। বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, আন্তর্জাতিক নদী জলের ভাগীদারি যেমন দরকার তেমনই জ্বালানি সংকট কাটাতে ভারতের উপর ভরসা করা হচ্ছে। ঢাকা মনে করছে, ইউক্রেনে যুদ্ধ সংকটের জন্য রাশিয়ার জ্বালানি তেল এখন ভারত থেকেই নিতে হবে।
বাংলাদেশে জ্বালানি সংকটের কারণে সে দেশে নিয়ম জারি করে লোডশেডিং চলছে। তবে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক সূত্রে খবর জ্বালানির দাম কমানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আপাত জ্বালানি তেল মূল্য কম। এর জন্য প্রতিবেশি দেশে তেল পাচার হচ্ছে। নাম না করে তিনি ভারতের দিকেই ইঙ্গিত করেন।
পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে তিস্তা চুক্তি সম্পাদন এখনই সম্ভব হচ্ছে না, তবে অসমের বরাক উপত্যকা থেকে বাংলাদেশের সিলেটে প্রবাহিত কুশিয়ারা নদীর জল ভাগাভাগি নিয়ে এই সফরে ঐকমত্যে পৌঁছনো যাবে বলে দিল্লি ও ঢাকা আশা করছে। অসমের বিজেপি সরকার কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক বলেই মনে করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ততকালীন মু়খ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর উদ্যোগে বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক গঙ্গা চুক্তি হয়। সেই চুক্তির মেয়াদ ফুরোনোর কথা ২০২৬ সালে। গঙ্গা চুক্তির সেটির নবায়ন নিয়েও অগ্রগতির সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক কর্মকর্তারা।
শেখ হাসিনার পাঁচ দিনের ভারত সফরে নয়াদিল্লি প্রস্তুত বঙ্গবন্ধু কন্যা তথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে কূটনৈতিক বরণের জন্য। তাঁর এবারের সফর বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের কূটনীতিকদের স্পষ্ট ধারণা, তেমন কোনও শক্ত প্রতিপক্ষ না থাকা ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক দাপটে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিভিন্ন নদীর জলবন্টন অধরা নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও জয় পাবেন শেখ হাসিনা।
হাসিনার সফরের আগে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেনের বিতর্কিত মন্তব্য ছিল “আমি ভারতে গিয়ে যেটি বলেছি যে শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।” তাঁর এই দাবির পরে বিব্রত হয় নয়াদিল্লি। তড়িঘড়ি সব সামাল দিতে আসরে নামে আওয়ামী লীগ। বিতর্ক ধরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বজায় রাখতে পারেনি অন্যতম বিরোধীপক্ষ বিএনপি। আর বাংলাদেশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ঘুমন্ত। ফলে আওয়ামী লীগ পেয়েছে বাড়তি অক্সিজেন।