তদন্তের স্বার্থে এখনই পি কে হালদার কে বাংলাদেশে (Bangladesh) ফেরত পাঠানো যাবে না। এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগবে। ঢাকায় এমনই জানালেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দেরাইস্বামী।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দেরাইস্বামী মঙ্গলবার দেখা করেন বিদেশ সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে। পরে তিনি বলেন, এটি একটি আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়। গত সপ্তাহে ছুটির দিনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের কাছে যা তথ্য আছে, তার ভিত্তিতে একটা সময় বাংলাদেশকে জানানো হবে। বুঝতে হবে এটি কিন্তু বড়দিনের কার্ড বিনিময় নয়।
বাংলাদেশ থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা অর্থ পাচারকারী পি কে (প্রশান্ত কুমার হালদার) এখন কলকাতায় ভারতের আর্থিক দুর্নীতি তদন্তকারী সংস্থা (ইডি) জেরায় জেরবার। তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর আগে আরও কঠিন জেরা করতে চায় ইডি। সিবিআই স্পেশাল কোর্টের বিচারক মাসুক হোসেন খান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে।
পি কে হালদার বলেন, আমি এখনই কিছু বলছি না। তিন-চার দিন পর যা বলার বলব। মহামান্য আদালত কী রায় দেন দেখি। তারপর যা বলার বলব।
কী বলবেন বাংলাদেশের অর্থ পাচারকারী পি কে হালদার? এ নিয়ে তীব্র কৌতুহল।তদন্তে উঠে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী হলেন পি কে হালদারের বন্ধু। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে থাকাকালীন পি কে ও স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এদের নাম কি এবার বাইরে প্রকাশ করবেন পি কে হালদার? উঠছে এমন প্রশ্ন।
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ভারতে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারকে শনিবার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোকনগরের একটি বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে ইডি। আরও পাঁচজন ধরা পড়ে। এদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি। তারা হলো প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী, উত্তম মিত্র ও স্বপন মিত্র। এছাড়াও প্রণব হালদার নামে এক ভারতীয়কে গ্রেফতার করে ইডি। পরে সঞ্জীব হালদার নামে একজনকে আটক করার কথা জানায় ইডি। সে পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার জামাই।
পি কে হালদার সহযোগী সুকুমার মৃধা বাংলাদেশেই ধরা পড়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি। জানা গিয়েছে সঞ্জয় মৃধার পশ্চিমবঙ্গে মাছের ভেড়িতে টাকা ঢেলেছে স্থানীয় নেতা মন্ত্রদের সঙ্গেও তার ভালো সম্পর্ক।
পি কে হালদার ও সঞ্জয় মৃধার বিপুল অর্থের বিনিময়ে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দলের নেতা মন্ত্রীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতায়। ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আধার কার্ডের মতো বিভিন্ন সরকারি পরিচয়পত্রও সংগ্রহ করে পি কে হালদার। শিবশঙ্কর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে থাকছিল।
গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের অন্তত নয়টি স্থানে একযোগে অভিযান চালায় ইডি। পি কের বিপুল সম্পত্তি ২০ থেকে ২২টি বাড়ি আছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে ইন্টারপোল।