Recipe: ৫ রকম খিচুড়িতে জমজমাটি বর্ষা

Recipe: বর্ষা ও খিচুড়ি দুটি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বৃষ্টির টুপটাপ শুরু হওয়া মানেই মন চায় গরম গরম খিচুড়ি রেঁধে পাত পেড়ে খাই। স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এমন…

5-types-of-kichri-recipe

Recipe: বর্ষা ও খিচুড়ি দুটি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বৃষ্টির টুপটাপ শুরু হওয়া মানেই মন চায় গরম গরম খিচুড়ি রেঁধে পাত পেড়ে খাই। স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এমন চাল-ডালের মিশ্র পদ যেন পরম তৃপ্তি যোগায়। পেট ও মন দুটোই ভরে যায় এতে। তাই বর্ষার শুরুতেই রইল নিরামিষ-আমিষ নানা স্বাদের একাধিক খিচুড়ির রেসিপি।

কিমা খিচুড়ি

যা যা লাগবে: মুরগি/ খাসির কিমা ৫০০ গ্রাম, গোবিন্দভোগ চাল ৫০০ গ্রাম, মুগ ডাল ২৫০ গ্রাম, মুসুর ডাল ২৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুনকুচি ১/২ টেবল চামচ, আদা কুচি আধ টেবল চামচ, লঙ্কা কুচি আধ টেবল চামচ, টমেটো কুচি ১/২ কাপ, গোটা গরম মশলা ১ চা-চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা-চামচ, ঘি ২ টেবল চামচ, তেল ২ টেবল চামচ, নুন স্বাদ মতো, গরম জল (এক কাপ চালে দেড় কাপ জল)।

কীভাবে রান্না করবেন

প্রেশার কুকারে তেল গরম করে গোটা গরম মশলা ফোঁড়ন দিন।
সুগন্ধ বেরোলে পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, লঙ্কা কুচি এবং রসুন কুচি দিয়ে নাড়াচাড়া করে ভাজুন।
এবার মাংসের কিমা দিয়ে নাড়ুন।
ভাজা ভাজা হলে টমেটো কুচি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়ুন।
খানিক মাখামাখা হয়ে এলে চাল, ডাল ও নুন দিয়ে ভালো করে মেশান।
এরপর লঙ্কা ও হলুদ গুঁড়ো সহ বাকি মশলা দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে গরম জল দিন।
কুকারের ঢাকা আটকে একটা সিটি দিয়ে নিন।
পরবর্তীতে প্রেশার কুকারের ঢাকা খুলে ঘি ও গরম মশলা গুঁড়ো ছড়িয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিলেই তৈরি কিমা খিচুড়ি।

মাশরুম খিচুড়ি

যা যা লাগবে: বাসমতী চাল ১০০ গ্রাম, মাখন ১ টেবল চামচ, মসুর ডাল ১০০ গ্রাম, পেঁয়াজ কুচি (১টি), আদা বাটা ২ চা-চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ চা-চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা-চামচ, কাজু কিশমিশ ৮-১০টি, গোটা গরম মশলা ১ চা-চামচ, সর্ষের তেল ৪ টেবল চামচ

মাশরুমের জন্য

টুকরো করে কাটা মাশরুম ২ কাপ, তেল ১ টেবল চামচ, মাখন ২৫ গ্রাম, মেথি সামান্য, জিরে ১/২ চা-চামচ, রসুন কুচি ১ টেবল চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ টেবল চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ

কীভাবে রান্না করবেন

চাল-ডাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন।
কড়াইতে তেল ও মাখন একসঙ্গে গরম করে মাশরুমের সমস্ত উপকরণ দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
মাশরুম সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়ে গেলে তুলে রাখুন।
অন্য কড়াইতে তেল গরম করে তেজপাতা, গোটা জিরে, গোটা গরম মশলা ফোঁড়ন দিন।
সুন্দর গন্ধ বেরোলে চাল-ডাল বাদে খিচুড়ির সব উপকরণ দিয়ে ভালো করে কষান।
এরপর চাল-ডাল দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন।
চাল-ডাল ভাজা ভাজা হলে আঁচ কমিয়ে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢেকে রান্না করুন।
চাল-ডাল মোটামুটি সেদ্ধ হয়ে এলে কষানো মাশরুম দিয়ে কিছুক্ষণ দমে বসান।
নামানোর আগে মাখন ছড়িয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

মাটন খিচুড়ি

যা যা লাগবে:খাসির মাংস – ১ কেজি, আদা বাটা – ২ টেবিল চামচ, রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ, টক দই – ৩ টেবিল চামচ, জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ, গরম মসলা গুঁড়া – ১ চা চামচ, লাল মরিচ গুঁড়া – ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ, পেঁয়াজকুচি – ১/২ কাপ,তেল – আনুমানিক ১/২ কাপ, লবন – ১ চা চামচ বা স্বাদমত

খিঁচুড়ির জন্যঃ বাসমতি চাল ২ কাপ,মসুর ডাল ১/২ কাপ, মুগ ডাল ১/২ কাপ (হালকা ভেজে নিতে পারেন), পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, গোটা কাঁচা লঙ্কা ৩টি, হলুদ গুঁড়ো ১ চা–চামচ, আদা বাটা ১ টেবল চামচ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, এলাচ ৬টি, দারচিনি ৪টি, তেজপাতা ৪টি, তেল ১/৪ কাপ, লবণ স্বাদ মতো, গরম জল আনুমানিক ৫ কাপ

কীভাবে রান্না করবেন

পেঁয়াজ কুচি এবং তেল ছাড়া বাকি সব উপকরণ দিয়ে মাংস ২ ঘন্টা মেরিনেট করে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ হালকা বাদামি করে ভাজুন।
ভাজা পেঁয়াজে ম্যারিনেট করা মাংস দিয়ে ভালো করে কষান।
আঁচ কমিয়ে, ঢেকে ২ ঘণ্টা রান্না করুন মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত (প্রয়োজনে অল্প করে গরম জল মেশান)।
খিচুড়ির জন্য চাল-ডাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
কড়াইতে তেল গরম করে গোটা গরম মশলা ফোঁড়ন দিন।
সুন্দর গন্ধ বেরোলে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে নাড়তে থাকুন।
পেঁয়াজ মজে আসলে আদা–রসুন বাটা দিয়ে কষান।
এরপর চাল-ডাল দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন।
হালকা ভাজা ভাজা হলে নুন, হলুদ, কাঁচা লঙ্কা দিয়ে ভালো করে মেশান।
২-৩ মিনিট পর গরম জল দিয়ে আঁচ কমিয়ে, ঢেকে ১৫- ১৬ মিনিট রান্না করে নামিয়ে নিন। (চাল-ডাল ৮০% রান্না হওয়া পর্যন্ত)
একটা বড় হাঁড়িতে ভালো করে ঘি লাগিয়ে নিন।
এবার অর্ধেক খিচুড়ি দিয়ে তার ওপর অর্ধেক মাংস দিন।
এরপর বাকি খিচুড়ি দিয়ে তার উপর অবশিষ্ট মাংস দিয়ে উপর থেকে আরও কিছুটা ঘি ছড়িয়ে নিন।
পাত্রটি ঢেকে কম আঁচে ৪৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা দমে বসান।
জল শুকিয়ে সব কিছু ভালো মতো সেদ্ধ হয়ে গেলেই তৈরি মাটন খিচুড়ি।

চিংড়ির খিচুড়ি

যা যা লাগবে
বাসমতী চাল ১০০ গ্রাম, ঘি ১ চামচ, মসুর ডাল ১০০ গ্রাম, মাঝারিম মাপের চিংড়ি ৮-১০টি, পেঁয়াজ কুচি (১টি), আদা বাটা ২ চা-চামচ, জিরে গুঁড়ো ২ চা-চামচ, লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা-চামচ, কাজু কিশমিশ ৮-১০টি, গোটা গরম মশলা ১ চা-চামচ, সর্ষের তেল ৪ টেবল চামচ

কীভাবে রান্না করবেন:
চাল-ডাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে রাখুন।
কড়াইতে তেল গরম করে নুন-হলুদ মাখানো চিংড়ি ভেজে নিন।
ওই তেলেই তেজপাতা, গোটা জিরে, গোটা গরম মশলা ফোঁড়ন দিন।
সুন্দর গন্ধ বেরোলে ঘি বাদে বাকি উপকরণ দিয়ে ভালো করে কষান।
এরপর চাল-ডাল দিয়ে আরও কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করুন।
চাল-ডাল ভাজা ভাজা হলে আঁচ কমিয়ে পরিমাণ মতো জল দিয়ে ঢেকে রান্না করুন।
চাল-ডাল মোটামুটি সেদ্ধ হয়ে এলে চিংড়ি দিয়ে কিছুক্ষণ দমে বসান।
নামানোর আগে ঘি ছড়িয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

সয়াবিনের খিচুড়ি

যা যা লাগবে:

গোবিন্দভোগ চাল ১ কাপ, মুগ ডাল আধ কাপ, মসুর ডাল আধ কাপ, নুন স্বাদ মতো, টমেটো কুচি ১ কাপ, সেদ্ধ করা সয়াবিন ২ কাপ, হলুদ গুঁড়ো ২ চা-চামচ, চেরা কাচা লঙ্কা ২টি, শুকনো লঙ্কা ১টি, তেজপাতা ১টি, জিরে গুঁড়ো ২ চা-চামচ, আদা বাটা ২ চা-চামচ, ঘি ১ টেবল চামচ, গোটা গরম মশলা (এলাচ ২টি, দারচিনি ১টি, লবঙ্গ ১টি, গোলমরিচ ২টি)
তেল ২ টেবল চামচ, সামান্য চিনি, গরম মশলা গুঁড়ো এক-চিমটে, গরম জল প্রয়োজন মতো

কীভাবে রান্না করবেন:

সামান্য আদা বাটা, নুন এবং গোলমরিচ দিয়ে সয়াবিনগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখুন।
চাল এবং মুসুর ডাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে নিন।
মুগ ডাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে শুকনো খোলায় ভেজে নিন।
কড়াইতে তেল গরম করে তেজপাতা, গোটা গরম মশলা এবং শুকনো লঙ্কা ফোঁড়ন দিন।
সুগন্ধ বেরোলে টমেটো, জিরে গুঁড়ো, আদা বাটা, নুন, হলুদ, চিনি এবং কাঁচা লঙ্কা দিয়ে কম আঁচে কষান। প্রয়োজনে সামান্য জল যোগ করুন।
এবার দুই রকম ডাল এবং চাল দিয়ে নাড়তে থাকুন।
চাল-ডাল একটু ভাজা ভাজা হয়ে এলে গরম জল দিয়ে ভালো করে মেশান।
এরপর আঁচ কমিয়ে ঢেকে রান্না করুন।
জল কমে কাদা কাদা হয়ে এলে ভেজে রাখা সয়াবিনগুলো দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পুনরায় ঢেকে দিন।
সব কিছু সেদ্ধ হয়ে গেলে সামান্য গরম মশালা গুঁড়ো এবং ঘি মিশিয়ে নিলেই তৈরি সয়াবিনের খিচুড়ি।