Mohd Tauseef: ছাদ থেকে পড়ে পা ভেঙেছিলেন মা, বাবার চাকরি বদল, তবু হাল ছাড়েনি ছেলে

উত্তরপ্রদেশের লং জাম্পার মহম্মদ তৌসিফ (Uttar Pradesh Long Jumper Mohd Tauseef) ২০২০ সালে বরেলিতে সাই এসটিসি-তে যোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে, তার মা প্রতাপগড়ে তাদের…

Mohd Tauseef

উত্তরপ্রদেশের লং জাম্পার মহম্মদ তৌসিফ (Uttar Pradesh Long Jumper Mohd Tauseef) ২০২০ সালে বরেলিতে সাই এসটিসি-তে যোগ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে, তার মা প্রতাপগড়ে তাদের বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে তার উভয় পা ভাঙেন। আঘাত পান হাতে। তার বাবা তখন সৌদি আরবে ড্রাইভারের চাকরি করেন। তখন ১৫ বছর বয়সী কিশোর তৌসিফকে সব ছেড়ে ফিরে আসতে হয়েছিল বাড়ি। থেমে গিয়েছিল কেরিয়ারের পথ চলা।

দেশে ফিরে তৌসিফের অনুশীলনের কোনও সুযোগ-সুবিধা ছিল না। মাঠে ফেরার সমস্ত আশা এক প্রকার হারিয়ে ফেলেছিলেন। মা সুস্থ হয়ে ওঠার পর প্রায় এক বছর পর ধীরে ধীরে নিজ জন্মস্থানে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তাতেই কাজ হয়েছে। খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমসে ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন তৌসিফ। ৭.০৬ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করে জিতেছেন পদক।

   

“যখন আমি আমার মায়ের দুর্ঘটনার খবর পাই তখন আমি সাই কেন্দ্রে মাত্র এক সপ্তাহ বা ১০ দিনের জন্য ছিলাম। আমার বাবাও বিদেশে ছিলেন এবং আমার ছোট ভাইদের পক্ষে মায়ের যত্ন নেওয়া কঠিন ছিল। তাই পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য ক্যারিয়ার ও প্রশিক্ষণ পেছনে ফেলে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি,” বলেন তৌসিফ, যার দুই বড় ও দুই ছোট ভাই রয়েছে।

“সেই সময় প্রশিক্ষণের চিন্তা মাথায় ছিল না। আমি আমার পরিবারকে সাপোর্ট করতে চেয়েছিলাম। হাল ছাড়তে চাইনি, কিন্তু প্রশিক্ষণের অভাবে আমার পারফরম্যান্স থমকে গিয়েছিল।”

তৌসিফের মা সুস্থ হয়ে ওঠার সময় তৌসিফের বাবাও ভারতে ফিরে এসেছিলেন। মুম্বইয়ে একটি চাকরি নিয়েছিলেন এবং ছেলে প্রশিক্ষণ পুনরায় শুরু করার জন্য উত্সাহিত করেছিলেন। আসলে, তার বাবাই তার মধ্যে লং জাম্পার হওয়ার অনেক সম্ভাবনা দেখেছিলেন। ২০১৯ সালে কাবাডি থেকে অ্যাথলেটিক্সে পরিবর্তন করার ব্যাপারে দিয়েছিলেন পরামর্শ।

ছেলের কথায়, “আমি কাবাডি খেলা শুরু করেছিলাম, খেলাটি খুব উপভোগ করেছি। কিন্তু ২০১৯ সালে বাবা যখন ছুটিতে বাড়ি এলেন, তখন ‘নাগপঞ্চমী মেলা’র সময় আমাদের একটি স্থানীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল। বাবা লং জাম্পে আমার দক্ষতা দেখে খুব মুগ্ধ হন। তিনিই আমাকে এই খেলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন।”

“দুটি পদক একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার সামর্থ্যের উপর বিশ্বাস ফিরে পেতে সাহায্য করেছে। আমার পরিবার সব সময় পাশে থেকেছে। এই ব্রোঞ্জটি (খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস ২০২৩) আমার ক্যারিয়ারের তৃতীয় ব্রোঞ্জ।” ব্রোঞ্জ পদক জয়ের হ্যাটট্রিকের পর ১৮ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় এবার আরও বড় কিছু করতে চান।