ভারতীয় ক্লাব ফুটবলে যথেষ্ট সফল একটি ক্লাব হায়দরাবাদ এফসি (Hyderabad FC)। প্রথমদিকে খুব একটা ছন্দময় পারফরম্যান্স না থাকলেও পরবর্তীতে যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠে নিজামের শহরের এই ফুটবল ক্লাব। যার দরুন, স্প্যানিশ কোচ মানালো মার্কেজের হাত ধরে ২০২২ মরশুমে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে যায় এই ফুটবল ক্লাব।
তবে লড়াইটা খুব একটা সহজ ছিল না। ফাইনালে তাদের পরাজিত করতে হয়েছিল ভুকোমানোভিচের কেরালা ব্লাস্টার্স দলকে। উল্লেখ্য, এই টুর্নামেন্ট শুরু থেকেই একাধিকবার ফাইনাল খেলেছে কেরালা। কিন্তু ট্রফির মুখ দেখা সম্ভব হয়নি তাদের। সেক্ষেত্রে ফাইনাল ম্যাচে তারা কতটা হিংস্র হয়ে উঠতে পারে তা আন্দাজ করেছিলেন হায়দরাবাদ কোচ।
তবুও শেষ পর্যন্ত লড়াই করে খেতাব ছিনিয়ে নিয়েছিল হায়দরাবাদ। ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ভিক্টরের নেতৃত্বে এসেছিল খেতাব। পরের মরশুমঅর্থাৎ ২২-২৩ মরশুমে ও যথেষ্ট ভয়ংকর থেকেছে এই ফুটবল দল। হোলিচরন নার্জারি থেকে শুরু করে বার্থোলেমিউ ওগবেচে। একের পর এক দাপুটে ফুটবলারদের উপস্থিতিতে ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে ওঠে এই দল।
যার দরুন গত সিজনে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে উঠে নিজামের শহরের এই ফুটবল ক্লাব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাইবেকারে তাদের পরাজিত হতে হয়েছিল মোহনবাগান সুপারজায়ান্টসের কাছে। তবে দলের এই দাপুটে লড়াইয়ে খুশী ছিল সকলেই। তবে এই চলতি মরশুমে একেবারে দিশেহারা অবস্থা এই ফুটবল ক্লাবের। বিশেষ করে অর্থনৈতিক সমস্যা জেরে একেবারে ডাউনলোড পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে ক্লাব ও ম্যানেজমেন্টের অন্দরে।
সেই কারণেই এই নতুন মরশুম শুরু হওয়ার আগেই দল ছেড়েছেন একাধিক দাপুটে ফুটবলার। এমনকি এই দল ছেড়ে এফসি গোয়া পাড়ি দিয়েছেন খোদ দলের কোচ মানালো মার্কেজ। পরবর্তীতে সময় যত এগিয়েছে ততই কমেছে দাপুটে ফুটবলারদের সংখ্যা। চিংলেসানা সিং থেকে শুরু করে সাহিল টাভোরা হোক কিংবা নিখিল পূজারী। এবারের এই উইন্টার ট্রান্সফার উইন্ডোতে দল থেকে বিদায় নিয়েছেন সকলেই। বর্তমানে তাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দলের সাধারণ কর্মচারীদের ও বেতন দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে এই ফুটবল ক্লাবকে। যতদূর শোনা গিয়েছে, বিগত ছয় থেকে সাত মাস বেতন পাননি দলের একাধিক কর্মী।
তার প্রতিবাদেই গতকাল বিশেষ ব্যানার বানানো হয়েছিল ক্লাব কর্মীদের একাংশের তরফ থেকে। যেখানে কর্মীদের প্রাপ্য পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেওয়ার কাতর আবেদনের উল্লেখ ছিল। বলতে গেলে, ম্যাচ জুড়ে সেদিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সকলের। তবে তা বেশিক্ষণ থাকেনি। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার আগেই স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা রক্ষীদের সক্রিয়তায় মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হয় কর্মীদের। জোর করে খুলে দেওয়া হয় সেই ব্যানার। যা দেখে রীতিমতো নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করেছে নেট মাধ্যমে।