United Sports Club: বাংলার ফুটবলার গড়ার ‘কারখানা’ ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব

আজ থেকে নয়, যখন আমাদের অনেক স্পনসর ছিল ও অনেক আর্থিক সমৃদ্ধি ছিল সেই সময় থেকেই আমাদের (United Sports Club) সিনিয়র টিমের সঙ্গে জুনিয়র টিমের…

United Sports Club
nabab-bhattacharya
নবাব ভট্টাচার্য

(ডিরেক্টর, United Sports Club)

আজ থেকে নয়, যখন আমাদের অনেক স্পনসর ছিল ও অনেক আর্থিক সমৃদ্ধি ছিল সেই সময় থেকেই আমাদের (United Sports Club) সিনিয়র টিমের সঙ্গে জুনিয়র টিমের পরিচর্চার একটা কংক্রিট ভিশন ছিল। বিভিন্ন সময়ে যে সকল বিদেশি প্রশিক্ষক এসেছেন , আমরা এমন জায়গা থেকে বিদেশি প্রশিক্ষক আনার চেষ্টা করেছি যাদের দেশে ফুটবল ডেভেলপমেন্টটা একটু শক্তিশালী। উদাহরণস্বরূপ এলকো শাতোরি, রেমকো বোয়েরে সহ আরো অনেকে। এরা নেদারল্যান্ড থেকে এসেছিলেন। তাঁদের দেশের ইউথ ডেভেলপমেন্টটা খুব উন্নত। 

এখন বেলজিয়ামের র‍্যাঙ্কটা একটু নেমেছে কিন্তু তাও এদের ফুটবল টিম স্ট্রং। এদের ইউথ ডেভেলপমেন্ট এতটা স্ট্রং যে এদের থেকে একটা আইডিয়া নিয়ে আমরা চেষ্টা করেছি সেটাকে রেপ্লিকেট করতে আমাদের সিস্টেমে।

সেটা কী রকম? আমাদের যখন চিরাগ ইউনাইটেড বা প্রয়াগ ইউনাইটেড টিমটা কলকাতার প্রিমিয়ার ডিভিশন, আই লীগের টপ ডিভিশনে খেলেছে তখন আমাদের একটা ডেভেলপমেন্ট টিম ফিফথ ডিভিশন থেকে ফার্স্ট ডিভিশনে তোলার চেষ্টা করেছি। তারা এখন সিনিয়র টিমের পর্যায়ে। যখন পাঠচক্র প্রিমিয়ার বি থেকে প্রিমিয়ার এ-তে উঠল ইউনাইটেডের সঙ্গে কম্পিট করল।

আমাদের একটা সিস্টার ক্লাব রয়েছে, যেটার নাম শ্যামনগর তরুণ সংঘ। এটার নাম আমরা সকলেই জানি। উত্তর ২৪ পরগনার খুব পরিচিত নাম। এই ক্লাব প্রচুর তারকাকে জন্ম দিয়েছে। সেই ক্লাবের হয়ে আমাদের নার্সারি লীগ এবং গ্রাসরুট ডেভেলপমেন্ট-এর পুরোটা হয়। সেটা এই ক্লাবের মাঠেই হয়। নার্সারি লীগ ইউনাইটেড স্পোর্টস ক্লাব নিজের নামে খেলে না, খেলে শ্যামনগর তরুণ সংঘের নামে। এটা আমাদের ক্লাবের থেকে আলাদা কিছু না। গ্রাসরুট ডেভেলপমেন্ট ৮ থেকে ১২ বছর অবধি আমাদের নির্দিষ্ট সিস্টেমেটিক উপায়ে সকলকে ট্রেনিং দেওয়া হয় এবং এরপরে ১৩, ১৫ এবং ১৭। এই তিনটে বয়সভিত্তিক দলের ট্রেনিং সুস্পষ্ট ভাবে স্পেসিফায়েড কোচ রেখে করানো হয়।

পুরোটাই সুপারভাইজ করেন হেড কোচ। তাঁর দেখিয়ে দেওয়া পদ্ধতিতেই কিন্তু প্রতিটি টিমের প্র্যাকটিস হয় এবং একদম ওয়েল সিক্রনাইজ উপায়ে হয়। টুর্নামেন্ট থাক বা না থাক ১৩, ১৫, ১৭-র টিমকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আমাদের আন্ডার ১৯-এরও টিম রয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে কোনো সর্বভারতীয় লীগ নেই। মানে ইউথ লীগ আন্ডার ১৯ এই বছর হচ্ছে না।

কলকাতা লীগ শেষ হয়ে গেছে বলে কিন্তু আমরা তাদের ছেড়ে দিইনি। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান বাদে আমরাই এমন একটা দল যাদের রিজার্ভ টিম রয়েছে। গ্রাসরুট, নার্সারি লীগ, আন্ডার ১৫, আন্ডার ১৭ এবং আন্ডার ১৯ টিম…সকলেরই ট্রেনিং দলের পরিচিত মুখ দেবরাজ চ্যাটার্জির তত্ত্বাবধানে হচ্ছে এবিং লক্ষ্য কিন্তু আরএফডিএল, যেটাকে আমরা ইউথ আইএসএল বলে চিনি। এখানে সকলকে ফিট করার কাজ চলছে। এরপর পাঠচক্রে ও ইউনাইটেডে খেলানোর চেষ্টা। একটা খেলোয়াড়কে বড় করার দায়িত্ব পুরো দলের কাঁধে।

খেলোয়াড়, কোচ তো রয়েছেনই এর পাশাপাশি তাঁদের মনিটরিং করার জন্য স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট পাশ করা একাডেমিক ম্যানেজার রয়েছেন। বয়সভিত্তিক দলের জন্য অবশ্যই অনেক টাকা খরচ হচ্ছে কিন্তু আমরা সেটা করেছি। পুরো সিস্টেমটাকে পরিচালনা করার জন্য স্টিভ হার্বার্টস ও ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা তো আছেন। আমরা পুরোটাই চেষ্টা করেছি সর্বভারতীয় লেভেলে কম্পিট করার জন্য। যেটা সদ্য সমাপ্ত আন্ডার ১৭ এর লীগের ফলাফল থেকেই পরিষ্কার। ওড়িশার দুটো দলকে আমরা তাঁদেরই মাঠে হারিয়েছি। আর এটা পুরোটা করার জন্য কিন্তু আমরা সবাই সর্বভারতীয় ফেডারেশন থেকে কোনো গ্র্যান্ট পাইনা। অনেকেই পায় কিন্তু আমরা পাই না ইউথ ডেভেলপমেন্ট-এর জন্য।

এছাড়া আমাদের আরো একটা সিস্টেম রয়েছে যেটা ইউনাইটেড স্পোর্টস ফুটবল স্কুল, এটা একদম সম্পূর্ণ নিজেদের তৈরি করা একটা প্রজেক্ট। এই প্রজেক্ট-এর লক্ষ্য যারা ইউনাইটেড সিস্টেমে খেলতে চান তাদের যথাসম্ভব সাহায্য করা, স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা। আমাদের দলের এমন তিনজন আছেন যাদের ১০০% স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই স্কুলের শ্যামনগর ও কল্যানীতে প্র্যাকটিস হয়। এছাড়া উত্তরবঙ্গের দুন হেরিটেজ স্কুলে কমপ্লিট রেসিডেন্সিয়াল মডেল রয়েছে। পড়াশোনা , খেলাধুলো সবই হয়। একদম ইন হাউস সিস্টেম। সম্প্রতি আমরা বেলডাঙ্গা এবং ব্যারাকপুরে সেন্টার করছি। একদম হাইক্লাস সিস্টেম এবং ভালো কোচ এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ৫ থেকে ১৩ বছরের ইউথদের।