দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের প্রথম সিরিজ জয়ের এটাই সেরা সুযোগ: চেতেশ্বর পূজারা

Sports desk: ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা এই তিন দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে এটে উঠে সিরিজ ছিনিয়ে…

Cheteshwar Pujara

Sports desk: ক্রিকেটের ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যাবে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা এই তিন দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে এটে উঠে সিরিজ ছিনিয়ে নিয়েছে,ভারতীয় ক্রিকেট টিম এই তালিকায় এখনও নিজের নাম এন্ট্রি করতে পারে নি। টিম ইন্ডিয়ার কাছে এখন সুবর্ণ সুযোগ (Golden opportunity) প্রোটিয়ার্স বোলিং লাইন আপের চ্যালেঞ্জকে দুরমুশ করে সিরিজ জয়ের।

সিনিয়র ভারতীয় ব্যাটসম্যান চেতেশ্বর পূজারা আত্মবিশ্বাসী যে তার দলের ফাস্ট বোলাররা ২৬ ডিসেম্বর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজের প্রতিটি টেস্টে ভাল পারফরম্যান্স চালিয়ে যাবে এবং ২০ উইকেট নেবে।

ইতিমধ্যেই ভারতীয় দল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পা রেখে অনুশীলন শুরু করেছে এবং শনিবার দলের শীর্ষ ব্যাটসম্যানরা নেট সেশনে অংশ নিয়েছিল।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে পূজারা জানিয়েছেন, “আমাদের ফাস্ট বোলাররা আমাদের শক্তিশালী দিক এবং আমি আশা করি তারা এই কন্ডিশনের সদ্ব্যবহার করতে পারবে এবং প্রতি টেস্ট ম্যাচে আমাদের জন্য ২০ উইকেট পাবে। আমরা যখনই বিদেশে খেলি, তারা দুই দলের পার্থক্য প্রমাণ করে”।

পূজারা বলেন,”আপনি যদি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের দিকে তাকান, এমনকি আপনি যদি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দেখেন, আমরা বোলিং ইউনিট হিসেবে ভালো করেছি এবং আমি নিশ্চিত দক্ষিণ আফ্রিকাও তাই করবে”।

সাম্প্রতিক সময়ে ফাস্ট বোলাররা বিদেশের মাটিতে ভারতের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ব্যস্ত সময়সূচী এবং কোভিড-১৯’র নতুন প্রজাতি ‘ওমিক্রনের’ কারণে কোনো অনুশীলন ম্যাচ খেলা হবে না প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে সিরিজে। এমনকি সফরটি পূর্ব নির্ধারিত সফরসূচীতে কাটছাঁট করা হয়েছে এবং এখন চারটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ পরে খেলা হবে।

টিম ইন্ডিয়ার মূখ্য কোচ রাহুল দ্রাবিড় এবং তার সার্পোট স্টাফদের প্রশংসা করতে গিয়ে পূজারা বলেন, “ভালো ব্যাপার হল আমরা ভারতে কয়েকটি টেস্ট ম্যাচ খেলেছি। এই কারণেই বেশিরভাগ খেলোয়াড় ছন্দে আছেন এবং যখন প্রস্তুতির কথা আসে, আমাদের সাপোর্ট স্টাফরা দুর্দান্ত। তারা আমাদের ভালো সমর্থন করছে এবং প্রথম টেস্ট শুরু হতে এখনও বাকি পাঁচ থেকে ছয় দিন”। ভারতীয় দল ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছেছিল এবং পুজারা বিশ্বাস করেন যে সেঞ্চুরিয়নে বক্সিং ডে টেস্টের প্রস্তুতির জন্য ১০ দিন যথেষ্ট সময়।

পূজারা আরও বলেন “আমি নিশ্চিত আমাদের প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় আছে এবং খেলোয়াড়রা এই সিরিজের জন্য অপেক্ষা করছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের প্রথম সিরিজ জয়ের এটাই সেরা সুযোগ। তাই আমরা সবাই কৌতূহলী। বায়ো বাবোল পরিবেশে দিন কাটানোর মধ্যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে তবে পূজারা বিশ্বাস করেন এটি দলকে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসে”।

চেতেশ্বর পূজারা বলেন, “কখনও কখনও আমি মনে করি বায়ো বাবোল প্রক্রিয়া নিরাপদ পরিবেশ এই কারণে দলের পরিবেশের বুননে সাহায্য করে, যেখানে আপনি নিজের সতীর্থদের সাথে বেশি সময় কাটান, খেলোয়াড়রা একসাথে একটি রুমে থাকে, একসঙ্গে টিম ডিনার করেন।” তাই সামগ্রিকভাবে আমি মনে করি এটি দলকে সাহায্য করে, তবে হ্যাঁ এর পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। আপনাকে বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না, আপনি বেড়াতে যেতে পারবেন না।

অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা কোভিড-১৯ ভাইরাসের মতো বিশ্ব বিপর্যয়ের পরিস্থিতির মধ্যে থেকে লড়াই করে প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে সিরিজ জয় করতে হয়নি। বরংঞ্চ বিশ্ব জুড়ে মারণ ভাইরাসের ভ্রুকুটি হীন পরিবেশে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেই বাইশ গজের চূড়ান্ত ব্যাটলফিল্ডে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বেকায়দায় ফেলে সিরিজ ছিনিয়ে নিয়েছিল।

কিন্তু টিম ইন্ডিয়ার কাছে পরিবেশ এবং পরিস্থিতি দুটোই আলাদা। কোভিড-১৯ ভাইরাসের মাস্তানি গোটা দুনিয়া জুড়ে সঙ্গে কোভিড প্রটোকল মেনে “বাবোল টু বাবোল” প্রক্রিয়ার একঘেয়েমিতে দিনযাপন করে চলা, যা খেলোয়াড়দের শারিরীক এবং মানসিক চিন্তায় আঘাত হানতে পারে।

তাই বাইশ গজের “হাইভোল্টেজ ব্যাটলফিল্ডে” নামার আগের লড়াই প্রতিকূল পরিবেশ-পরিস্থিতি এবং এরপর অন ফিল্ড সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছানো দুই’র মিশেলে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েছে টিম ইন্ডিয়া প্রোটিয়ার্সদের বিরুদ্ধে সফরে। যা ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের বইতে শুধু “ব্যতিক্রমী লড়াই” বললেও টিম ইন্ডিয়ার লড়াই’র এই মানসিকতাকে অসম্মানিত করা হবে।