Sports News: ক্ষোভের আগুনে পুড়ছে প্রাক্তন ভারতীয় গোলরক্ষক তনুময় বসু

অভিযোগ (Sports News), ২২টি জেলার মধ‍্যে ১৫ টি জেলার ক্রীড়া প্রশাসকদের কাছে একদা ভারতীয় ফুটবলের তারকা তনুময় বসু নাকি বিশ্বাস যোগ‍্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাঁর কাছ…

অভিযোগ (Sports News), ২২টি জেলার মধ‍্যে ১৫ টি জেলার ক্রীড়া প্রশাসকদের কাছে একদা ভারতীয় ফুটবলের তারকা তনুময় বসু নাকি বিশ্বাস যোগ‍্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাঁর কাছ থেকে একে একে জেলাগুলি সরে আসতে শুরু করেছিল বেশ কিছুদিন আগে থেকেই। এতদিন চাপা পড়ে থাকলেও এখন সেটা প্রকাশ‍্যে এসে গিয়েছে। বিশেষ করে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশনের এজিএমকে আটকাতে তনুময় বসু আদালত থেকে মিটিংয়ের স্থগিতাদেশ নিতেই তাঁকে ঘিরে জেলায় জেলায় হতাশা,বিরক্তি এবং ক্ষোভ চরমে উঠেছে।

২২ টি জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাথার উপরে আছে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশন। গত চার বছর ধরে এই সংস্থার সভাপতি আছেন তনুময় বসু। কোভিডের জন‍্য নতুন কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। নতুন কমিটি গড়ার জন‍্য নাকি দুই মাস আগে তনুময় চেয়েছিলেন দীঘায় অ‍্যানুয়াল জেনারেল মিটিং হোক। শিরভাগ জেলা এজিএমটি করতে চেয়েছিলেন মালদা শহরে। ঠিক হয় এজিএম হবে ৮ মার্চ। তখন তনুময় জেলা কর্তাদের জানান, ১০ মার্চ তাঁর মেয়ের বিয়ে। মিটিংটা ১০ তারিখের পরে করা হোক। পরে তনুময়ের সেই অনুরোধ মেনে ৮ মার্চে মিটিংয়ে বদলে ৪ মার্চ করা হয়। কিন্তু এই ৪ মার্চের মিটিং অবৈধ বলে চুচুড়ার সিটি সিভিল কোর্টে মামলা করেন তনুময়। আদালত ১৫ মার্চ পযর্ন্ত এজিএম না করার নির্দেশ দেন। একাধিক জেলার কর্তাদের দাবি, ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশনের সভাপতি হয়ে আদালতে গিয়ে ফেডারেনকে নিস্ক্রিয় করে ঠিক করেননি তনুময় বসু। এই ঘটনার পর থেকেই তনুময়কে ঘিরে জেলায় জেলায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। 

জেলার একাধিক কর্তাদের দাবি, তনুময় বসু নাকি ফেডারেশনের সচিব হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ১৫ থেকে ১৬ টি জেলার কর্তা তনুময়বাবুকে সচিব পদে চাননি। সমস‍্যাটা তৈরি হয় এখান থেকেই। অভিযোগ, তারপরেই তনুময়বাবু নাকি নিজের জেলার চুচুড়ার নিম্ন আদালতে মামলা করেন।

উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব সুদীপ বিশ্বাস-এর কথায়, “আদালতে মানুষ কখন যায়? শেষ পর্যায়ে যায়। সেই রকম পরিস্থিতি তো তৈরি হয়নি। পরিবারেও তো সমস‍্যা হয়, ঝামেলা হয়। পরে আলোচনার মধ‍্যে সমস‍্যার সমাধানও হয়। সেটা করলেন না। আদালতে যাওয়ায় মিউচুয়াল রেসপেক্টে ধাক্কা খেল। একদিন বিচার ব‍্যবস্থা সম্পন্ন হবে ঠিকই কিন্তু এই যে সম্পর্কের দুরত্ব তৈরি হল, তা কি পূর্ণ হবে? আদালতে গিয়ে আমাদের ফেডারেশন নিস্ক্রিয় হওয়ায় সব থেকে ক্ষতি হল জেলার খেলোয়াড়দের। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমি কখনও দেখিনি, কোনও জেলার ক্রিকেটার আন্ত: জেলা ক্রিকেটের সার্টিফিকেট নিতে এসেছে। ফুটবলাররা কিন্তু আসে। এই সার্টিফিকেট থাকলে সিভিক ভলেন্টিয়ার পদে চাকরির ক্ষেত্রে সাহায‍্য করে। আন্তঃজেলা ফুটবল পরিচালনা করে ওয়েস্ট বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস ফেডারেশন। ফুটবল না হলে গ্রামের ফুটবলারদের ক্ষতি। প্রতিভাও উঠে আসবে না। অবিলম্বে ফুটবলারদের স্বার্থেই ফেডারেশনকে সক্রিয় করে হোক।” শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ-এর সচিব কুন্তল গোস্বামী জানান, “তনুময় বসুর আদালতে যাওয়া সমর্থন করি না। তনুময় বাবু বিখ‍্যাত গোলকিপার ছিলেন। এজিএমে নির্বাচন হলে স্পোর্টিংলি অংশ নিলেই ভাল দেখাতো। যেটা ঘটল তা অত‍্যন্ত দূঃখ জনক ঘটনা।”

জেলা সূত্রের খবর,এখনও পযর্ন্ত তনুময়ের পক্ষ‍্যে মাত্র চারটি জেলা পাশে আছে। মালদায় ১৫ জেলা কর্তা একত্রিত হয়েছিল। এরপরেও আরও তিনটি জেলা তনুময়ের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মত দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। অর্থাৎ ১৮ টি জেলা তনুময় বসুর বিরুদ্ধে চলে গেছে।