শেন ওয়ার্নের (Shane Warne’s) আকস্মিক মৃত্যু এখনও মেনে নিতে পারছে না ক্রিকেট বিশ্ব। পরিবারের লোকজন বা বন্ধুরা এটাকে এখনও দুঃস্বপ্ন বলেই ভাবছেন। মৃত্যু শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি তিন সন্তান জ্যাকসন, সামার ও ব্রুক। আসলে বয়সটা ছিল মাত্র ৫২ বছর। এমনকি, সকালে টুইট করে শোকজ্ঞাপন করেছিলেন স্বদেশীয় কিংবদন্তি রড মার্শের মৃত্যুতে। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টা পরেই যে মার্শের অনুসারী হবেন তিনি, তা ঘুণাক্ষরেও কেউ ভাবতে পারেননি।
তবে ওয়ার্নকে সমাহিত করার আগে তাঁর মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার জন্য শুরু হয়েছে ময়নাতদন্ত। তার এরই মধ্যে নতুন তথ্য প্রকাশ্যে আনল থাইল্যান্ড প্রশাসন। থাই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওয়ার্নের ঘরে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। থাইল্যান্ডের কো সামুইয়ের ভিলায় বন্ধুদের সঙ্গে ছিলেন ওয়ার্ন। শুক্রবার রাতে তিনি খেতে আসছেন না দেখে ডাকতে যান এক বন্ধু। তখনই অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তির লেগস্পিনারের ঘরে ঢুকে দেখেন, অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছেন ওয়ার্ন। পরে তাঁর এক বন্ধু জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন ওয়ার্ন। শনিবার থাই পুলিশের তরফে অবশ্য নয়া রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, মৃত্যুর আগে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন।
আগে থেকেই হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন ওয়ার্ন। সেইসঙ্গে অ্যাস্থমার সমস্যাও ছিল। কো সামুইয়ের বো ফুট থানার পুলিশ জানায়, হৃদরোগের সমস্যার জন্য চিকিৎসাও করাচ্ছিলেন তিনি। পাশাপাশি তাঁর শরীর থেকে কোনও মাদক দ্রব্য মেলেনি বলেও নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে, দ্য ব্যাংকক পোস্টের খবর অনুযায়ী, যে ঘরে ওয়ার্ন পড়েছিলেন, সেখানকার মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। এমনকী তাঁর স্নানের টাওয়েল ও বালিশেও দেখা গিয়েছে রক্তের ছিটে। কোথা থেকে এল রক্ত? রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে এটা নিয়েই। জানা গিয়েছে, অজি তারকার সর্দি-কাশি ছিল। তাই অনেকের ধারণা, কাশতে কাশতে রক্ত বেরিয়েছে তাঁর নাক-মুখ থেকে।
ওয়ার্নকে যখন অচৈতন্য অবস্থায় দেখা গিয়েছিল, তখন প্রায় ২০ মিনিট ধরে মুখে মুখ লাগিয়ে সিপিআর দেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে করে ওয়ার্নকে নিয়ে যাওয়া হয় থাই ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালে। সিপিআর দেওয়ার সময়েই ওয়ার্নের মুখ দিয়ে কফের সঙ্গে রক্ত বেরিয়ে থাকতে বলে ধারণা থাই পুলিশের প্রাদেশিক কমান্ডার সাতিত পলপিনিতের। তিনি বলেছেন, ‘ওয়ার্নের ঘরে অনেক রক্ত দেখা গিয়েছে। যখন সিপিআর দেওয়া শুরু হয়েছিল, তখন ভেজা কাশির সঙ্গে রক্ত পড়া শুরু হয়।’
এদিকে, ওয়ার্নের ম্যানেজার জেমস এরস্কিন রবিবার জানান, কিংবদন্তি তারকার অকাল মৃত্যুতে এখনও বিস্মিত তাঁর সন্তানরা। ইতিমধ্যেই তিন সন্তান র সঙ্গে কথা বলেছেন জেমস। গোটা বিষয়টি তাঁদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতোই মনে হচ্ছে।