Roy Krishna: পিছিয়ে পড়লেন রয় কৃষ্ণা

ভারতীয় ফুটবলে বিশেষত, সবুজ মেরুন সমর্থকদের কাছে হোসে রামিরেজ ব্যারেটোর পরেই যে নামটা মুখে আসে তিনি হলেন ফিজির ফুটবলার রয় কৃষ্ণা (Roy Krishna)। তিন মরসুম…

Roy Krishna

ভারতীয় ফুটবলে বিশেষত, সবুজ মেরুন সমর্থকদের কাছে হোসে রামিরেজ ব্যারেটোর পরেই যে নামটা মুখে আসে তিনি হলেন ফিজির ফুটবলার রয় কৃষ্ণা (Roy Krishna)। তিন মরসুম ২০১৯-২০, ২০২০-২১,২০২১- ২২ সবুজ মেরুন জার্সি গায়ে বল পায়ে ভারতীয় ফুটবল সার্কিটে প্রতিপক্ষকে নিয়ে ছেলেখেলা করতে দেখা গিয়েছে ফিজিয়ান ‘গোল্ডেন বয়’কে।

কিন্তু সব শুরুরই একটা শেষ আছে। ইন্ডিয়ান সুপার লিগের(ISL) পরিসংখ্যান ঘাটলে গোল করানোর (অ্যাসিস্ট) ক্ষেত্রে হুগো বৌমসের থেকে অনেকটাই পিছনে পড়ে গিয়েছেন রয় কৃষ্ণ। তালিকাতে পাঁচ নম্বরে, ৬০ ম্যাচে ১৮ টা অ্যাসিস্ট রয়েছে ফিজিয়ান ফুটবলারের নামের পাশে।তালিকাতে টপার হুগো বৌমস ৭৫ ম্যাচে ২৯ টা অ্যাসিস্ট রয়েছে। দুই’এ ব্র‍্যান্ডন ফার্নান্ডেজ ৭১ ম্যাচে ১৯,তিনে মার্সেলো পেররা ৮৭ খেলায় ১৯ টা আর চতুর্থ নম্বরে আমেদ জাহ ৯১ ম্যাচে ১৯ টা অ্যাসিস্ট রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ATK এফসি এবং মোহনবাগানের সঙ্গে মার্জ করার পর ATK মোহনবাগান জার্সিতে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ(ISL), AFC কাপের গ্রুপ পর্বে রয় কৃষ্ণর পারফরম্যান্স যেকোনো স্ট্রাইকারের কাছেও ঈর্ষণীয়।

এই সময়ে গোল করে এবং গোল করিয়ে ভারতীয় ফুটবলের সবুজ গালিচা জুড়ে প্রতিপক্ষ দলের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছিলেন ফিজিয়ান ‘গোল্ডেন বয়’ রয় কৃষ্ণ। পারফরম্যান্সের জোরে বাগানে একের পর এক ফুল ফুটিয়ে নয়নের মনি হয়েও উঠেছিলেন রয় কৃষ্ণ।

কিন্তু সব শুরুর একটা শেষও আছে,আগেই উল্লেখ করেছি। পারফরম্যান্সের রোশনাই ২০২১-২২ মরসুমে এসে ক্রমশই দ্যুতি হারিয়ে ফেলতে থাকে। যে রয় কৃষ্ণকে বিগত তিন মরসুমে বোতলবন্দি করতে পারেনি প্রতিপক্ষ ক্লাব দল ৯০ মিনিটের ফুটবল লড়াই’তে, এবার তারাই রয় কৃষ্ণ’র তোর খুজে বের করে আনলেন। কড়া মার্কিং তো ছিল, সঙ্গে নিজের খেলার স্টাইলের বদল না ঘটানো এবং ইনজুরি ধীরে ধীরে সবুজ গালিচাতে কৃষ্ণ বাশির তেজ ম্রিয়মাণ হয়ে পড়লো। এক্ষেত্রে আন্তোনিও লোপেজ হাবাস থেকে হুয়ান ফেরান্দো সময়কালে রয় কৃষ্ণ’কে নিয়ে কোচদের ফুটবল বোধ অনেকটাই দায়ী রয়ের পারফরম্যান্সে ভাটা পড়ার ক্ষেত্রে। কোনও আড়াল বা ঢাল না রেখে এক্কেবারে লড়াই’র মাঠে প্রতিপক্ষের মুখে সটান ছুঁড়ে ফেলা দেওয়ার ফুটবল দর্শন কোচেদের স্পষ্টতই ধরা পড়ে। আর এইভাবে রয় কৃষ্ণ’র বাশির সুর সাময়িকভাবে বেসুরো হয়েছিল।

তবে রয় কৃষ্ণ ফুরিয়ে যায়নি, এখনও তার মধ্যে ফুটবল বাকি আছে, ফুটবলকে দেওয়ার আছে তা সদ্য সমাপ্ত ডুরান্ড কাপে বেঙ্গালুরু এফসির (BFC) হয়ে রয় কৃষ্ণর সামগ্রিক পারফরম্যান্সের দিকে চোখ রাখলে আসন্ন আইএসএল টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষ দলের কাছে অশনি সংকেত। কেননা, BFC’তে গিয়ে রয় কৃষ্ণ অনেকটাই চাপমুক্ত। অনেক বেশি খোলা মনে থাকার কারণে রয় কৃষ্ণ ফুটবল নিয়ে নিজের চিন্তা এবং বোধ এর সঙ্গে ফুটবল স্টাইলে বদল ঘটাতে পেরেছে।

আর রেজাল্ট হাতেনাতে। কলকাতায় এসে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের সবুজ গালিচাতে ফুটবল ঝলক দেখিয়েছে রয় কৃষ্ণ। টিম ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। টাইটেলশিপে রয় কৃষ্ণ’র পারফরম্যান্স দেখে সবুজ মেরুন টিম ম্যানেজমেন্ট থেকেদ শুরু করে সমর্থকরা আঙুলের নখ খুঁটছে।

অন্যদিকে, ফিজিয়ান ফুটবলার রয় কৃষ্ণ কলকাতায় এসে BFC দলের হয়ে নিজের পারফরম্যান্সের দ্যুতি ছড়িয়ে দিয়ে ATK মোহনবাগান টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সবুজ মেরুন সমর্থকদের মুখে ঝামা ঘষে দিয়েছে, যে সমর্থকদের একাংশ বলেছিল রয় কৃষ্ণ’র ফুটবলকে দেওয়ার আর কিছু নেই, ও ফুরিয়ে গিয়েছে।