লাল-হলুদের ‘এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট’ ড্যারেন সিডোয়েল

মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডকে সমূলে “ঠোক নে কে লিয়ে” অর্থাৎ ‘খতম’ করার মোটিভ নিয়েই মুম্বই পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চ শহরবাসী মুম্বই এবং দেশবাসীকে একের পর এক ‘এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট’…

Encounter Specialist' Darren Sidwell

মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডকে সমূলে “ঠোক নে কে লিয়ে” অর্থাৎ ‘খতম’ করার মোটিভ নিয়েই মুম্বই পুলিসের ক্রাইম ব্রাঞ্চ শহরবাসী মুম্বই এবং দেশবাসীকে একের পর এক ‘এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট’ গড়ে তুলেছে। এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট হওয়ার রসদ জুগিয়েছে। মুম্বই পুলিসের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা সকল সময়ে ওই এনকাউন্টার স্পেশালিষ্টদের মোটিভেট করেছে মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডকে “জর সে খতম করনে কে লিয়ে।” মুম্বই পুলিসের ‘জাবাজ’ অর্থাৎ সাহসী এনকাউন্টার স্পেশালিষ্টদের নামের তালিকা দীর্ঘ।

দয়া নায়েক,প্রদীপ শর্মা,বিজয় সালাস্কর,সচিন ওয়াজে, রবীন্দ্রনাথ আঙরে এই ‘সুপার ফ্যাব কপ’ মুম্বই পুলিস ক্রাইম ব্রাঞ্চের গর্ব এবং অহংকার। কেন? এর উত্তর হল, এই ৫ এনকাউন্টার স্পেশালিষ্টদের নাম শুনলে দাউদ ইব্রাহিম গ্যাং এবং আবু সালেম গ্যাং’র,ছোটা রাজন গ্যাং’র শুটাররা; যারা মাদক পাচার, সুপারি কিলার অর্থাৎ ভাড়াটে খুনি,তোলাবাজি করে মুম্বইয়া ভাষাতে “ভাই”দের নির্দেশে ওই শার্প শুটাররা উল্টে ভয়ে কাঁপে। কারণ সুপার ফ্যাব কর্প মুম্বই পুলিস ক্রাইম ব্রাঞ্চের অপরাধ দমন শাখার হানাদারিতে,যা একেবারেই সারপ্রাইজ অ্যাটার্ক শার্প শুটারদের কাছে,মুম্বাইয়া ভাষায় শার্প শুটারদের গেমার বলা হয়ে থাকে,যারা অপরাধকে সাফল্যের জামা পড়ানো জন্য খুন করে অর্থাৎ “গেম” বাজায়।

আর এসসি ইস্টবেঙ্গলের রয়েছে এমনই একজন শার্প শুটার! ‘এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট’ যার নাম ড্যারেন সিডোয়েল। চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লীগে(ISL) লাল হলুদ মিডিও ড্যারেন সিডোয়েলের পারফরম্যান্স চমকে দেওয়ার মতো।

আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে লাল হলুদ জনতা গত বুধবার চেন্নাইন সিটি এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচের ৬১ মিনিটে নেওয়া ড্যারেন সিডোয়েলের ফ্রিকিক থেকে নেওয়া শুট আউট গোলেই মজে রয়েছে।শুধু তাইই নয়, এসসি ইস্টবেঙ্গলও নিজেদের টুইটার হ্যাণ্ডেলে ওই শুট আউটের মুহুর্তে সংক্ষিপ্ত ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপসনে লিখেছে,”𝙢𝙖𝙜𝙞𝙘 এর দুটি মুহূর্ত তার নির্ভরযোগ্য কাঁধে আমাদের কঠোর পরিশ্রমের ফল বহন করে, প্রতিদিন প্রশিক্ষণে।
আমরা চলতে থাকবে!
#জয়ইস্টবেঙ্গল #WeAreSCEB #আমাগোক্লাব।”

এসসি ইস্টবেঙ্গলের শার্প শুটার এনকাউন্টারে স্পেশালিষ্ট ড্যারেন সিডোয়েলের ফ্রিকিক থেকে নেওয়া ৬১ মিনিটের গোল গুরুত্বপূর্ণ এই কারণে যে ওই সময়ে লাল হলুদ ব্রিগেড ০-২ গোলে পিছিয়ে,যার মধ্যে চেন্নাইন এফসি’র বিরুদ্ধে প্রথম গোল হজমের কারণ হীরা মণ্ডলের আত্মঘাতী গোল।

নেদারল্যান্ডের মিডফ্লিডার ড্যারেন সিডোয়েল ড্যারেন সিডোয়েল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে স্প্যানিশ দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব কর্ডোবা সিএফ থেকে এসসি ইস্ট বেঙ্গলে যোগ দেয়। চলতি ISL টুর্নামেন্টের ৯ ম্যাচে ৫৬১ মিনিট মাঠে কাটিয়ে তিন গোল এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে,প্রতি খেলায় বিপক্ষের জালে বল জড়ানো নিরিখে ০.৩৩ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত লাল হলুদ জার্সি গায়ে টুর্নামেন্টে ১৭৯ টি পাস বাড়ানো সঙ্গে ২৬৩ টি টার্চেস, প্রতি খেলায় পাসিং ফুটবলের শতকরা গড় বিচারে ১৯.৮৯।বিপক্ষের বল ক্লিয়ারেন্স ১৫ অন্যদিকে বিপক্ষের আক্রমন আটকে দেওয়ার নিরিখে ৫ টি Interception।

প্রসঙ্গত, রিয়েল লাইফে মুম্বই পুলিসের এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট অফিসার দয়া নায়েক ৮৩ টি এনকাউন্টার করেছে মুম্বই আন্ডারওয়ার্ল্ডের বিরুদ্ধে। যদিও দয়া নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল গোপনে আন্ডারওয়ার্ল্ড সংযোগ নিয়ে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে সাসপেন্ড হতে হয় মুম্বই পুলিসের এই এনকাউন্টার স্পেশালিষ্টকে। বর্তমানে দয়া নায়েক নাগপুরে কর্মরত।

মুম্বই পুলিসের এই এনকাউন্টার স্পেশালিষ্টকে নিয়ে বেশ কয়েক বছর আগে অভিনেতা নানা পাটেকর অভিনীত চলচ্চিত্র “অব তক ছপ্পন” মুক্তি পায় রিল দুনিয়ার পর্দাতে, দুই পার্টে।

মুম্বই ক্রাইম ব্রাঞ্চের আর এক সাহসী এনকাউন্টার স্পেশালিষ্ট বিজয় সালাস্কর শহীদ হয়েছে মুম্বইতে ২৬/১১ জঙ্গি হামলার জেরে। মরণোত্তর পুলিস আধিকারিক বিজয় সালাস্করকে ২০০৯ সালে অশোক চক্র উপাধিতে সম্মানিত করে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান করা হয়। ৭৫-৮০ টি এনকাউন্টার করেছিলেন প্রয়াত মুম্বই পুলিসের আধিকারিক বিজয় সালাস্কর আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন অরুণ গাউলি গ্যাং’র বিরুদ্ধে।