Qatar WC: হিজাব বিদ্রোহীদের ফের ফাঁসি ইরানে, ফুটবলারদের নিয়ে উদ্বেগে ফিফা

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সামিল আরও এক ব্যক্তির ফাঁসি দিল ইরান সরকার। এই নিয়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগের।…

Hijab rebels hanged in Iran, concern over footballers

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সামিল আরও এক ব্যক্তির ফাঁসি দিল ইরান সরকার। এই নিয়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। পরিস্থিতি রীতিমতো উদ্বেগের। কী হবে হিজাব বিরোধী ইরানি বিশ্বকাপারদের? কারণ পর পর ফাঁসি শুরু হয়েছে ইরানে। তীব্র আলোড়িত কাতারের জনজীবন। বিশ্বকাপ আসরে (Qatar WC) প্রবল উদ্বেগ ছড়াল। আমি একটু আগে তেহরানে এক পরিচিত ব্যক্তিকে ফোনে ধরতে চেষ্টা করি। তিনি বারবার ফোন কেটে দিচ্ছেন। বোঝা যাচ্ছে প্রবল আতঙ্কে আছেন তিনিও। ইরানি বিশ্বকাপ দলের এক ফুটলারের সাথে ওই ব্যক্তির যোগাযোগ আছে। এই খবর কলকাতায় পাঠাচ্ছি আর তীব্র উদ্বেগ আমার মধ্যে তৈরি হচ্ছে।

বিবিসির খবর, এবার যার ফাঁসি হলো তার নাম মজিদরেজা রাহনাভার্ড। তার বিরুদ্ধে দুই নিরাপত্তা কর্মীকে মেরে ফেলার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ইরান সরকারের দাবি, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ফাঁসি হওয়া মজিদরেজা রাহনাভার্ড ‘মোহারেবেহ’ বা আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল। ইরানের ধর্মীয় আইনে এই অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

আল জাজিরা ব্রেকিং দিচ্ছে এক সপ্তাহ আগে মোহসেন শেকারি নামে ২৩ বছরের এক যুবকের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর হওয়া দুজনই হিজাব বিরোধী আন্দোলনে সামিল হয়েছিল।

কাতার ট্রিবিউনের পরপর ফ্ল্যাশ নিউজ ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে। দোহা শহরে চাপা উত্তেজনা। কাতার বিশ্বকাপেই ইরানি ফুটবলাররা হিজাব বিরোধী বিদ্রোহ দেখিয়েছিলেন খেলতে নামার আগে। সেই ম্যাচের সাক্ষী আমিও।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে ইরানি ফুটবলাররা বিদ্রোহের সমর্থনে নিজেদের জাতীয় সঙ্গীতের সময় মুখ বন্ধ রাখেন। প্রবল আলোড়িত হয়েছিল বিশ্ব। পরে তীব্র চাপের মুখে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে তারা জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলেন। ইরান দল বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়ে দেশে ফিরে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সম্ভাবনা নিয়ে আশঙ্কা বিশ্বজুড়ে। কারণ ইরানের জাতীয় আইনসভা ‘মজলিস’-এ বিদ্রোহীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠতার জেরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

হিজাব ঠিকমতো না পরার কারণে ইরানে নীতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন ইরানি-কুর্দিস জাতির মাহশা আমিনি। পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যুর পর থেকে তীব্র হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ চলছে ইরানে। এই বিক্ষোভ ১৯৭৯ সালে রাজতন্ত্র হটানোর আন্দোলনের থেকেও বড়। সেই বিক্ষোভের পর শুধু গণতন্ত্র নয়, জবরদস্তি ইসলামিক প্রজাতন্ত্র তৈরি করা হয়। এই ধর্মভিত্তিক নিয়মের মহিলাদের হিজাব বাধ্যতামূলক ইরানে। সেই হিজাবের বিরুদ্ধেই চলছে তীব্র আন্দোলন।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, আন্দোলনের বিশালতায় রীতিমতো ভীত ইরান সরকার। ফলে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ভয় দেখানো শুরু হয়েছে। যদিও ইরান সরকারের দাবি, আন্দোলন নয় বিক্ষোভ আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদতে দেশে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা ও হিংসাত্মক কার্যাকলাপ চলছে। হিংসায় জড়িতদের শাস্তি দান চলবেই।

ইরানের জাতীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা জানাচ্ছে, বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তির হাত আছে। আর মানবাধিকার সংস্থাগুলির দাবি সরকারের দমন নীতির কারণে প্রায় ৫০০ জন বিক্ষোভকারী নিহত। ১৮ হাজার গ্রেফতার। কমপক্ষে ১১ জনের বিরুদ্ধে কুখ্যাত ধর্মীয় আইনের বিরোধিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।