Qatar WC: স্টেডিয়াম সাফাই করে জাপানিরা দিল জিতলেন, দুর্ধষ্য জার্মানির সমর্থন নেই

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা সিটি: কাতারে (Qatar) হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে কতজন জাপানি আছেন। যদিও জাপানিদের মুখের আদল পুরো মিলে যায় চিনা, থাই, কোরিয়ানদের…

সুজানা ইব্রাহিম মোহনা, দোহা সিটি: কাতারে (Qatar) হাতে গুনে বলে দেওয়া যাবে কতজন জাপানি আছেন। যদিও জাপানিদের মুখের আদল পুরো মিলে যায় চিনা, থাই, কোরিয়ানদের সাথে। সকালে এক ব্যক্তিকে তাঁর দেশ জাপানের (Japan) পতাকা সহ দেখে ভাবলাম এদের কি খেয়ে দেয়ে কোনও কাজ নেই, খামোকা বেগার খেটে চলেছে। ছোট্টখাট্টো মোটাসোটা লোকটা ঝাঁটা আর প্লাস্টিকের বড় থলি নিয়ে ময়লা ফেলার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিশ্বকাপ (Qatar WC) উপলক্ষে এমন জাপানিদের গত কয়েকদিন ধরেই দেখছি। আজ মনে হলো কথা বলি। ভাঙা ভাঙা ইংরাজিতে তিনি বললেন, আমরা এমন করতে ভালোবাসি। ময়লা থাকা ভালো না।

বোঝো কান্ড! জাপানিরা বিশ্বকাপের আসরে চলে এসেছে খেলা দেখতে নয়, নিজের দেশের হয় তারস্বরে গলা ফাটাতেও নয়। এরা এসেছে ঝাঁটা মারতে। কে বলবে দুর্ধষ্য জার্মানির সামনে প্রথমেই পড়েছে জাপান। বুধবার জাপান-জার্মান ফুটবল যুদ্ধের আগে নীরবে নিজেদের ভালোবাসার কাজ অর্থাৎ ময়লা সরাচ্ছেন জাপানিরা।

বিশ্বে অন্যতম পরিচ্ছন্ন দেশ জাপান। তাদের রকম সকমই আলাদা। ময়লা সরানো তাদের ভালোলাগা-ভালোবাসা।স্টেডিয়ামে জাপানি দর্শকরা যেমন খেলা দেখছেন, তেমনই অন্যান্য দেশের দর্শকদের ফেলে যাওয়া বিস্তর ব্যাগ, থলি, পানির বোতল (জলের বোতল) তুলে নিচ্ছেন ভালোবেসে। পরিচ্ছন্নতা তাদের প্রাথমিক কর্তব্য। কাতার এমনিতে পরিচ্ছন্ন দেশ। তবে বিশ্বকাপ উপলক্ষে আসা বিভিন্ন দেশের বিপুল দর্শকদের চাপে নাজেহাল পরিস্থিতি।

এই জাপানি সমর্থকরা যেভাবে স্টেডিয়াম পরিচ্ছন করছেন তাতে স্টেডিয়াম সাফাইকর্মীদের কাজ বহু কমে গেছে। একেকজন জাপানি কমপক্ষে একশ দর্শকাসন ঝাঁটা দিয়ে সাফাই করছেন। কাতার তো কোন ছার, সারা দুনিয়ার দিল জিতে নিয়েছেন জাপানিরা।

মঙ্গলবারের রাত ছিল পুরো আরব দুনিয়ায় উল্লাস।আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে সৌদি আরব। অন্য হিসেবে বিশ্বকাপে এশিয়ার গর্জন শুনেছে বিশ্ব। বুধবার তাই কাতার সহ পুরো এশিয়ার নজর জাপানের উপর। শক্তিশালী দল তারাও। জাপানের বিশ্বকাপ অভিযান নতুন নয়। কিন্তু প্রতিপক্ষ দল জার্মানি। তারা দুর্ধষ্য বলে পরিচিত।

তবে চারবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও জার্মানদের নিয়ে তেমন উন্মাদনা কই, এ যেন ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা। তার চেয়ে বরং ‘নীল সামুরাই’ জাপানকে নিয়ে নতুন করে আশা দেখছেন এশিয়ানরা। সৌদি আরবের মতো একটা ইতিহাস কি জাপানিরা গড়বেন? চাপ বাড়ছে জাপানের উপরেও।

তবে বিশ্বকাপের উন্মাদনার মাঝেও নীরব জাপানিরা। দেশের হয়ে গলা ফাটানোর বদলে স্টেডিয়ামে শ্বেচ্ছাশ্রম দেওয়া আর ভালোলাগার কাজ মানে সাফাই করতে তারা বেশি আগ্রহী।