Bengal Football Academy: প্রস্তুতিতে আধুনিক, কিন্তু এক্সপোজারের অভাব

রাজ্য সরকারের ফুটবল অ্যাকাডেমি (Bengal Football Academy)। পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০১৪-য়। আজ ২০২২। গত ৮ বছরে অ্যাকাডেমি থেকে বাংলার ফুটবলের প্রাপ্তির ভাঁড়ার কিন্তু শূন্য…

Bengal Football Academy

রাজ্য সরকারের ফুটবল অ্যাকাডেমি (Bengal Football Academy)। পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০১৪-য়। আজ ২০২২। গত ৮ বছরে অ্যাকাডেমি থেকে বাংলার ফুটবলের প্রাপ্তির ভাঁড়ার কিন্তু শূন্য নয়। অনূর্ধ্ব-১৫ আই লিগের আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন। অনূর্ধ্ব-১৮-র আই লিগেও আঞ্চলিক প্রতিযোগিতায় নজরকাড়া পারফরম্যান্স ছিল তাদের। ২০১৮-১৯ মরশুমে হওয়া শেষ অনূর্ধ্ব-১৫ আই লিগেও তৃতীয় স্থানে শেষ করেছিল অ্যাকাডেমি।

এর বাইরে অ্যাকাডেমির আরও এক প্রাপ্তি, কলকাতা ফুটবল লিগের মূল স্রোতে, মানে প্রিমিয়ার ডিভিশন থেকে পঞ্চম ডিভিশন লিগ পর্যন্ত অ্যাকাডেমির ছেলেদের নিয়মিত বিভিন্ন ক্লাবের জার্সিতে খেলে যাওয়া। ইতিমধ্যে অ্যাকাডেমির দুটি ছেলে জুনিয়র জাতীয় দলের প্রস্তুতি শিবিরে ডাক পেয়েছে। সাফল্যের এই ন্যুনতম গতিটা কিন্তু অ্যাকাডেমি পেয়েছিল ২০১৮-য়। প্রধান কোচ হিসেবে অনন্ত ঘোষের যোগ দেওয়ার পর। স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (সাই) প্রাক্তন ফুটবল কোচ বহুবছর ধরে তৃণমূল স্তরে ফুটবলার তৈরির কাজ করে চলেছেন। মোহনবাগান অ্যাকাডেমি, মহমেডান স্পোর্টিংয়েও ছিলেন।

Bengal Football Academy

উত্তর ২৪ পরগণার খড়দহে, রহড়া রামকৃষ্ণ মিশনের পাশে প্রায় ১০ একর জমির ওপর তৈরি হয়েছে ফুটবল অ্যাকাডেমির মাঠ, তার পাশে ১০০-বিছানার আধুনিক মানের হোস্টেল। বর্তমানে সেখানে ছাত্রের সংখ্যা ৫৮। অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে রয়েছে ২৮ আর অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে ফুটবলারের সংখ্যা ৩০। অনন্ত ঘোষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ফুটবলারেদের উন্নতমানের ট্রেনিংয়ের জন্য রাখা হয়েছে ডায়েটিশিয়ান, ফিজিওথেরাপিস্ট। প্র্যাক্টিসের ভিডিও দেখার ব্যবস্থা। অনন্তবাবু বললেন, “বেলুড় স্পোর্টস বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ হয়েছে। প্রত্যেক সপ্তাহে ফুটবলারদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। জিপিএস ট্র্যাকার ও আরও অত্যাধুনিক যন্ত্রের সহায়তায় প্রত্যেক ফুটবলারের শারীরিক সক্ষমতা, শারীরিক প্রয়োজনীয়তা-সব কিছু পরিমাপ করে বলে দেওয়া হয়। তারপর তাদের বানিয়ে দেওয়া চার্ট অনুযায়ী অ্যাকাডেমিতে ছেলেদের ট্রেনিং করা হয়।”

কোভিডের জন্য প্রায় আড়াই বছর অনুশীলন বন্ধ ছিল। এবছর জুলাইয়ে আবার শুরু হয়েছে ট্রেনিং। যে কারণে, মাঠ এখনও আগের অবস্থায় পৌঁছয়নি। কিন্তু সমস্যা এটা নয়। অনন্ত ঘোষের অভিজ্ঞ পর্যবেক্ষণ বলছে, পর্যাপ্ত পরিমাণে ছেলেদের ম্যাচ-এক্সপোজার নেই! বছরে দুটো টুর্নামেন্ট খেলা ছাড়া (অনূর্ধ্ব-১৮ ও অনূর্ধ্ব-১৫ আই লিগ) সারাবছর ছেলেদের সামনে কোনও প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ থাকে না। “ম্যাচ না খেললে প্রতিভার বিকাশ কীভাবে হবে?” প্রশ্ন অনন্ত ঘোষের। এবছর কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে রাজ্য সরকারের এই ফুটবল অ্যাকাদেমির খেলার কথা ছিল। আইএফএ-ও রাজি ছিল। প্রস্তুতি অনেকদূর এগিয়েও ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে অ্যাকাডেমির আর লিগ খেলা হয়নি! আগামী মরশুমে বঞ্চিত না হওয়ার আশ্বাস অবশ্য অ্যাকাডেমি পেয়েছে। একইসঙ্গে সুব্রত কাপে খেলার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু রাজ্য ক্রীড়ামন্ত্রক এখনও সবুজ সংকেত দেয়নি!

তাই ম্যাচ-এক্সপোজারের অভাবে একাধিক প্রতিভাবান ফুটবলার থাকলেও তাদের প্রকৃত বিকাশ হচ্ছে না। এই সমস্যার সমাধান করতে পারেন একমাত্র রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। এখন সময়ই শেষ কথা বলবে।