Kerala Blasters Face Jamshedpur FC: জামশেদপুরের বিরুদ্ধে খেলবেন নোয়া সদাউই? কোচ দিলেন ইঙ্গিত

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL 2025) ২০২৪-২৫ মরশুমের ম্যাচ উইক ২৪-এ কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি (Kerala Blasters) তাদের ঘরের মাঠে জামশেদপুর এফসি-র (Jamshedpur FC) মুখোমুখি হতে চলেছে।…

TG Purushothaman Provides Key Update on Noah Sadaoui

ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL 2025) ২০২৪-২৫ মরশুমের ম্যাচ উইক ২৪-এ কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি (Kerala Blasters) তাদের ঘরের মাঠে জামশেদপুর এফসি-র (Jamshedpur FC) মুখোমুখি হতে চলেছে। মরশুমের এই শেষ পর্বে এসে মাত্র তিনটি ম্যাচ বাকি থাকায়, অন্তর্বর্তী কোচ টিজি পুরুষোত্তমনের নেতৃত্বে থাকা ‘টাস্কার্স’-দের জন্য প্রতিটি ম্যাচ এখন জীবন-মরণের লড়াই। প্লে-অফে ওঠার সামান্য আশা বাঁচিয়ে রাখতে দলটিকে তাদের বাকি তিনটি ম্যাচেই জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। শনিবার জামশেদপুরের ‘রেড মাইনার্স’-দের বিরুদ্ধে এই ম্যাচটি তাদের জন্য একটি কঠিন পরীক্ষা হতে চলেছে।

রক্ষণাত্মক দুর্বলতা নিয়ে চ্যালেঞ্জ
কেরালা ব্লাস্টার্স গত দুটি লিগ ম্যাচে পাঁচটি গোল হজম করেছে, যা তাদের গোল পার্থক্যকে -৫-এ নামিয়ে এনেছে। প্লে-অফে ওঠার ক্ষেত্রে গোল পার্থক্য অনেক দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে দলের রক্ষণকে শক্তিশালী করা এখন অত্যন্ত জরুরি। কোচ টিজি পুরুষোত্তমন দলগত কাজের ওপর ভরসা রেখে বলেছেন, “সমস্ত চ্যালেঞ্জ আমাদের দলগতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমরা একসঙ্গে খেলি—রক্ষণে, আক্রমণে এবং ট্রানজিশনে। আমাদের ফোকাস সেখানেই থাকবে। জামশেদপুর যে চ্যালেঞ্জই আনুক না কেন, আমরা আমাদের সমস্ত শক্তি দিয়ে তা কাটিয়ে উঠব।”

   

টানা পরাজয়ের পর কী হবে কৌশল?
কেরালা ব্লাস্টার্স টানা দুটি লিগ ম্যাচে হেরে চাপে রয়েছে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এই হারগুলি দলের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরাজয় নিয়ে কোচ পুরুষোত্তমন বলেন, “গত দুটি ম্যাচে আমরা নেগেটিভ ফলাফল পেয়েছি, এটা সত্যি। এটা লুকানোর কিছু নেই। আমরা, কোচিং স্টাফরা, এর পুরো দায়িত্ব নিচ্ছি—খেলোয়াড়দের নয়। আমরা এই নেগেটিভ দিকগুলো বিশ্লেষণ করে কীভাবে তা কাটিয়ে উঠব, সেদিকে কাজ করছি।”

মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হওয়া ম্যাচ নিয়ে তিনি বলেন, “সেই ম্যাচে আমরা অনেক সুযোগ তৈরি করেছিলাম, কিন্তু তা গোলে রূপান্তর করতে পারিনি। গোয়ার বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে প্রথম মিনিট থেকেই কিছু মুহূর্তে আমরা ব্যর্থ হয়েছি, যা আমাদের ঠিক করতে হবে।” তিনি আরও জানান, দলের মানসিকতা কঠিন পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। “এই চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের অতিক্রম করতে হবে। আমাদের ভালো খেলার ধরন বজায় রাখতে হবে, আরও সুযোগ তৈরি করতে হবে, গোল করতে হবে এবং ম্যাচ জিততে হবে।”

নোয়া সাদাউইয়ের প্রত্যাবর্তন: গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন
দলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় নোয়া সাদাউইয়ের ফিটনেস নিয়ে কোচ পুরুষোত্তমন বলেন, “তিনি এখন রিহ্যাবে রয়েছেন। আজকের সেশনের পর মেডিকেল রিপোর্ট পাব। তারপর আমরা রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” সাদাউই এই মরশুমে ১৭টি ম্যাচে ৭টি গোল এবং ৫টি অ্যাসিস্ট করে দলের আক্রমণের মূল ভরসা হয়ে উঠেছেন। তাঁর ফিরে আসা মঞ্জাপ্পাড়া সমর্থকদের জন্য বড় উৎসাহের খবর হবে।

জামশেদপুরের কঠিন চ্যালেঞ্জ
জামশেদপুর এফসি বর্তমানে পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ চারে রয়েছে এবং প্লে-অফে তাদের জায়গা নিশ্চিত করেছে। দলটির কোচ খালিদ জামিলের নেতৃত্বে তারা প্রতিটি ম্যাচে লড়াকু মনোভাব নিয়ে মাঠে নামে। এই বিষয়ে পুরুষোত্তমন বলেন, “আমি খালিদ জামিলকে চিনি এবং জামশেদপুর কী ধরনের দল, তা জানি। তারা সবসময় লড়াই করে। আমরা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত। আশা করি, আমরা আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে পারব।” তিনি সহজ ম্যাচের আশা করছেন না বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন।

দলের বর্তমান অবস্থান
কেরালা ব্লাস্টার্স এই মরশুমে ২১টি ম্যাচ খেলে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় অষ্টম স্থানে রয়েছে। গত দুটি ম্যাচে পরাজয় তাদের প্লে-অফে ওঠার সম্ভাবনায় ধাক্কা দিয়েছে। তাদের বাকি তিনটি ম্যাচ—জামশেদপুর এফসি (১ মার্চ), মুম্বই সিটি এফসি (৭ মার্চ), এবং হায়দ্রাবাদ এফসি (১২ মার্চ)—জিততে না পারলে তাদের এই মরশুম শেষ হয়ে যাবে। অন্যদিকে, জামশেদপুর এফসি প্লে-অফে জায়গা পাকা করলেও, তারা শীর্ষ দুইয়ে থাকার লক্ষ্যে খেলবে, যা তাদের সরাসরি সেমিফাইনালে পৌঁছে দেবে।

দলের দুর্বলতা এবং শক্তি
কেরালার রক্ষণে দুর্বলতা সাম্প্রতিক ম্যাচগুলিতে প্রকাশ পেয়েছে। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে তারা ০-৩ গোলে এবং গোয়ার বিরুদ্ধে ০-২ গোলে হেরেছে। তবে, আক্রমণে তারা এখনও শক্তিশালী। নোয়া সাদাউইয়ের সঙ্গে অ্যাড্রিয়ান লুনা এবং জেসুস জিমেনেজের মতো খেলোয়াড়রা সুযোগ তৈরি করতে সক্ষম। পুরুষোত্তমনের কৌশল হবে এই আক্রমণকে কাজে লাগিয়ে রক্ষণের ভুলগুলো ঢাকা।

জামশেদপুরের শক্তি তাদের সামঞ্জস্যপূর্ণ পারফরম্যান্সে। তারা এই মরশুমে শীর্ষ দলগুলির বিরুদ্ধেও ভালো ফল করেছে। স্টিফেন এজে এবং জাভি হার্নান্ডেজের মতো খেলোয়াড়রা তাদের আক্রমণ ও রক্ষণে ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে, জাভি সিভেরিও চারটি হলুদ কার্ডের কারণে এই ম্যাচে অনুপস্থিত থাকবেন, যা কেরালার জন্য সামান্য সুবিধা হতে পারে।

সমর্থকদের প্রত্যাশা
মঞ্জাপ্পাড়া সমর্থকরা এই ম্যাচে তাদের দলের কাছ থেকে একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তন আশা করছেন। কোচি’র জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে তাদের উৎসাহ এবং সমর্থন দলের মনোবল বাড়াতে পারে। গত ম্যাচে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে জয়ের পর ঘরের মাঠে এই ম্যাচটি তাদের জন্য আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার সুযোগ।

ভবিষ্যদ্বাণী
জামশেদপুরের বর্তমান ফর্ম এবং প্লে-অফে জায়গা নিশ্চিত হওয়া তাদের এগিয়ে রাখলেও, কেরালার ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা এবং জয়ের জন্য মরিয়া মনোভাব ম্যাচটিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলবে। যদি নোয়া সাদাউই ফিরে আসেন এবং দল তাদের সুযোগ কাজে লাগাতে পারে, তবে কেরালা ২-১ গোলে জয় ছিনিয়ে নিতে পারে। তবে, জামশেদপুরের রক্ষণ যদি শক্ত থাকে, তবে ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সম্প্রচার

ম্যাচটি কোচি’র জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে শনিবার সন্ধ্যা ৭:৩০-এ (ভারতীয় সময়) শুরু হবে। এটি স্পোর্টস ১৮ নেটওয়ার্ক এবং স্টার স্পোর্টস ৩-এ সরাসরি সম্প্রচারিত হবে। অনলাইনে জিও সিনেমায় এটি স্ট্রিম করা যাবে।

কেরালা ব্লাস্টার্স কি তাদের প্লে-অফের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে পারবে, নাকি জামশেদপুর তাদের শক্তি দেখাবে? শনিবারের মাঠই দেবে এর উত্তর।