কলকাতার ফুটবলে কণিকা বর্মণের (Kanika Burman) নাম আজ আর নতুন নয়। ২৯ বছরের, শিলিগুড়ির এই মহিলা তার রেফারিং জীবনের শুরুর যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে ছিলেন অদম্য, হার না মানা মনের জোর নিয়ে। পরিবেশ অনুকূল ছিল না। আর্থিক সহায়তাও না বলার মত ছিল। কলকাতায় সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরির ধকল।
অন্যদিকে রেফারিংয়ের পরিশ্রম। লক্ষ্য স্থির রেখে সাধনায় সাফল্য এসেছিল। শুধু মেয়েদের ম্যাচ নয়, কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগে ছেলেদের ম্যাচ, এমনকী মোহনবাগান-মহমেডান ডার্বি ম্যাচও পরিচালনা করেছেন কণিকা। সেই ডার্বিতে হওয়া ফুটবলারদের গন্ডগোলের উত্তাপও ঠাণ্ডা মাথায় সামলে সুনাম অর্জনের অভিজ্ঞতা কণিকার ঝুলিতে।
২০১২-তে রেফারিং জীবন শুরু করে ২০২০-তে ফিফা-ব্যাজ পেয়েছেন। সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। জীবনের গতিপথ বদলেছে। বিবাহিত কণিকাদের সংসারে এখন রয়েছে ছোট্ট একটি মেয়ে। যে কারণে, সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে মাঝে প্রায় দুটো মরশুম নষ্ট হয়েছে। কিন্তু সেই অদম্য মানসিকতা! নতুন উদ্যমে আবার ফিরে এসেছেন। ২০১৮ থেকে দেশের মহিলাদের ফ্রাঞ্চাইজি লিগে (আইডব্লিউএল) ম্যাচ পরিচালনা করছেন। এবছর ফাইনাল-সহ ১০টি ম্যাচ পরিচালনা করেছেন।
২০২২-য়ে সেই কণিকার মুকুটে আরও এক বিরল পালক লাগল। এএফসি-র এলিট রেফারির প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন কণিকা। তার সঙ্গে এই প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন মণিপুরের রঞ্জিতা দেবী আর লাইন্সম্যান হিসেবে উভেনা ফার্ণান্ডেজ আর রিওলাং ধর।
ফোনে কথা বলার সময় কণিকার স্বতঃস্ফুর্ত মন্তব্য, “আনন্দ যে হচ্ছে না তা নয়। এবার এশিয়ায় মেয়েদের সেরা ম্যাচগুলো পরিচালনা করার সুযোগ পাব। কিন্তু স্বপ্ন তো তাতে থেমে যায় না। আপাতত আমার স্বপ্ন, অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপে ম্যাচ পরিচালনা করা। এবছর হল না। আমার লক্ষ্য ২০২৫-এ পরের অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপের রেফারিদের প্যানেলে অন্তর্ভূক্ত হওয়া।”