‘সাগরকন্যা’ সায়নী ভয়াল কুক প্রণালী জয়ের পথে, বাম পরিবারের কন্যা আর ‘তৃণমূলের বাধা’ পান না

বাম সমর্থক পরিবারের কন্যা সায়নী দাসের প্রশিক্ষণে বাধা দিয়ছিল তৃণমূল এই অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক মহল হয়েছিল সরগরম। সেই সায়নী ইংলিশ চ্যানেল সহ একাধিক কঠিন সমুদ্র…

বাম সমর্থক পরিবারের কন্যা সায়নী দাসের প্রশিক্ষণে বাধা দিয়ছিল তৃণমূল এই অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক মহল হয়েছিল সরগরম। সেই সায়নী ইংলিশ চ্যানেল সহ একাধিক কঠিন সমুদ্র প্রণালী পার করে সাগরকন্যা হিসেবে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত। তিনি নীরবে গঙ্গায় অনুশীলন চালিয়ে যান। পূর্ব বর্ধমানের কালনার সায়নী দাস। এবার নিউজিল্যান্ডের স্ট্রেইট চ্যানেল বা কুক প্রণালী পার করার অনুমতি পেয়ে গেলেন তিনি। অত্যন্ত বিপদসংকুল বলে কুখ্যাত কুক প্রণালী। এই প্রণালী দিয়ে জাহাজ চলাচল করা খুবই কঠিন। ইংলিশ চ্যানেল জয়ী সায়নীর লক্ষ্য কুক প্রণালী পার করা।

সায়নীর পিতা রাধেশ্যাম দাস সিপিআইএমের শিক্ষক সংগঠনের নেতা। অভিযোগ, আলাদা রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্য তৃণমূল নানা ভাবে সায়নীকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে ইংলিশ চ্যানেল জয়ের পর সায়নীকে সংবর্ধনা দেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। বিতর্কটা থেকে গেছে। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি চ্যানেল পার করেছেন সায়নী। এবার অনুমতি পত্র অনুযায়ী সায়নী দাস আগামী ১৫ ই মার্চ নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইট প্রনালী পার করতে যাচ্ছেন। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ থেকে ৫ ই এপ্রিলের মধ্যে যে কোন এক দিন সায়নী জলে নামবে তার লক্ষ্য নিয়ে। সোমবার এই অনুমতি পত্র সায়নীর কাছে এসে পৌঁছেছে বলে জানান বাবা রাধেশ্যাম দাস।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে কালনার সায়নী হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মলকাই চ্যানেল জয় করেন। ভারতীয় সময় অনুযায়ী ৪৪ কিমি দীর্ঘ এই চ্যানেল পার হতে তার সময় লাগে ১৯ ঘন্টা ১০ মিনিট। এমনকি সায়নী ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল, ২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার রটনেস্ট এবং ২০১৯ সালে আমেরিকার ক্যাটালিনা চ্যানেল জয় করেন। এবারে সায়নীর লক্ষ্য ২০২৪ সালে নিউজিল্যান্ডের কুক স্ট্রেইট চ্যানেল জয় করার।

ভয়াল কুক প্রণালী পার করতে সাগরে ঝাঁপাবেন সায়নী।কুক প্রণালী নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপ ও দক্ষিণ দ্বীপকে পৃথককারী সামুদ্রিক প্রণালী। প্রণালীটি পশ্চিমে তাসমান সাগরকে পূর্বদিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করেছে। এটি সর্বনিম্ন ২৩ কিলোমিটার থেকে সর্বাধিক ১৪৫ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হতে।এর গড় গভীরতা ১২৮ মিটার বা ৪২০ ফুট ১৭৭০ সালে ব্রিটিশ অভিযাত্রী ক্যাপ্টেন জেমস কুক সম্পূর্ণ প্রণালীটি আবিষ্কার করেন এবং তার নামে এর নামকরণ করা হয়। নিউজিল্যান্ডের আদিবাসী জাতি মাওরিদের ভাষাতে এই প্রণালীটির নাম “রাউকাওয়া সাগর”।

কুক প্রণালীর দুই তীরেই খাড়া পার্বত্য ঢাল রয়েছে।এই প্রণালীতে সমুদ্রস্রোত বিপজ্জনক ও এখানকার জলবায়ু প্রায় ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ থাকে। এটি নৌযোগে অতিক্রম করা অত্যন্ত দুরূহ। জাহাজডুবির কারণে কুখ্যাত কুক প্রণালী। তাই নিউজিল্যান্ডের উত্তর দ্বীপের ওয়েলিংটন শহর থেকে দক্ষিণ দ্বীপের ব্লেনহাইম শহরে মূলত বিমানযোগে আকাশপথে কিংবা রেল ফেরির মাধ্যমে পরিবহন সম্পন্ন হয়।