Jamshedpur FC: জিতেও মোহনবাগানে মজেছেন জামশেদপুর কোচ

লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে ড্র-ই ছিল যথেষ্ট। এমনকি, এক গোলের ব্যবধানে হারলেও, লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হত তারা (Jamshedpur FC)। স্বাভাবিক ভাবেই এটিকে মোহনবাগানের থেকে চাপ ছিল…

লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে ড্র-ই ছিল যথেষ্ট। এমনকি, এক গোলের ব্যবধানে হারলেও, লিগ শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হত তারা (Jamshedpur FC)। স্বাভাবিক ভাবেই এটিকে মোহনবাগানের থেকে চাপ ছিল অনেকটাই কম। তবে ড্র হার কোনটিই নয়, শেষ পর্যন্ত জয়ের রথ গড়গড়িয়ে ছুটেছে ইস্পাতনগরীর দলের। এক গোলে মোহনবাগানকে হারিয়েই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা।

তবে ম্যাচ জিতলেও জামশেদপুর এফসি-র কোচ আওয়েন কোইল-এর মুখে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা তো শোনা বাগান ফুটবলারদের। যদিও নিজের দলের প্রশংসা করতে মোটেও বোলেননি কোইল। তিনি বলেন, ‍‘ক্লাবের সমর্থক, কর্তৃপক্ষ, চেয়ারম্যান এবং সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই আমি খুশি। দলের অন্যান্য কোচেদেরও অভিনন্দন প্রাপ্য। তাদের সাহায্য ছাড়া দলটাকে এই জায়গায় আনতে পারতাম না। এটা আমাদের দলের ছেলেদের কঠোর পরিশ্রমের ফল। যার জন্য আমরা গত এগারোটা ম্যাচের মধ্যে দশটাতেই জিততে পারলাম। টানা সাতটা ম্যাচ জিতলাম। আক্রমণ, রক্ষণ সবেতেই আমরা নিজেদের সেরা প্রমাণ করেছি। ৪৩ পয়েন্ট পেয়ে নতুন নজিরও গড়েছি আমরা। সব কৃতিত্বই দলের ফুটবলারদের। ওদের পারফরম্যান্সে আমি খুবই খুশি। তবে নক আউটে সফল হতে গেলে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।’

মোহনবাগান অ্যাকাডেমির ছাত্র ঋত্বিকের গোলেই হার মানতে হয়েছে সবুজ-মেরুনকে। তরুণ তুর্কিকে নিয়ে কোচ বললেন, ‍‘এটা আসলে দায়িত্ববোধের ফল। আমাদের দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই যা ভরপুর আছে। আলাদা করে কারও কথা বলা উচিত হবে না। তীব্রতায় ভরা ফুটবল খেলার জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, সেই ফিটনেস আমাদের ছেলেদের আছে। যার ফলে ওদের চোট-প্রবণতাও কম। দলের প্রত্যেকে দারুণ ভালো খেলেছে।’ দলের এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা নিয়ে তিনি জানান, ‍‘আসলে আমাদের ছেলেদের জয়ের খিদে মারাত্মক। প্রতিদিন সকাল থেকেই ওরা ভাবে কী করে আরও ভালো খেলব। যখন ছন্দ, আত্মবিশ্বাস এগুলো ভালো জায়গায় থাকে, তখন খিদেটা আরও বেড়ে যায়। আমাদের দলে এত ভালো মানের খেলোয়াড় আছে যে, ইশান পন্ডিতার মতো খেলোয়াড়কে আমি নিয়মিত খেলাতে পারিনি। এ ছাড়া আমাদের আরও অনেক ফুটবলারকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলাতে হয়েছে। যখনই তারা সুযোগ পেয়েছে, সেরাটা উজাড় করে দিয়েছে। প্রত্যেকেই জানে তাদের কী করতে হবে, প্রত্যেকেই তা করে দেখানোর জন্য মরিয়া। দলের প্রধান কোচ হিসেবে এই ছেলেগুলোর সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমি খুবই উপভোগ করেছি।’

এটিকে মোহনবাগানের কোচ ও ফুটবলাররা হারের পরেও আপনাদের সাফল্য উদযাপনের সময়ও মাঠে ছিল, যা বিশ্ব ফুটবলে বিরল ঘটনা। এই বিষয়ে কোইল বললেন, ‍‘এটিকে মোহনবাগানের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। মনে রাখবেন ফর্ম সাময়িক ব্যাপার। হার-জিত আছেই। ওদের কোচ হুয়ান ফেরান্দো একজন তরুণ ও সফল কোচ। ম্যাচে ওরা আমাদের প্রতি মুহূর্তে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। ওদের দলে অসাধারণ ফুটবলাররা আছে। যে কোনও ম্যাচে যে কোনও দলের পক্ষে ওরা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। প্লে অফেও ওরা যথেষ্ট ভালো খেলবে। ম্যাচের পরে ওরা যে সৌজন্যবোধ দেখিয়েছে, তার জন্য ওদের ধন্যবাদ। এই আচরণে ওরা বুঝিয়ে দিয়েছে ওরা অনেক বড় মাপের দল।’

সেমিফাইনালে বিপক্ষ কেরালা ব্লাস্টার্স সম্পর্কে জামশেদপুর দলের কাণ্ডারি বলেন, ‍‘আমাদের সামনে একটা ভালো দলের বিরুদ্ধে দুটো কঠিন ম্যাচ। ওদের কোচ খুবই ভালো। ব্যক্তিগত ভাবে একে অপরকে চিনি আমরা। পরষ্পরের বিরুদ্ধে খেলেওছি। ওঁর দল ভালো খেলবেই। ওদের দলে ভালো বিদেশি এবং ভারতীয় ফুটবলার আছে। আমাদের পরিশ্রম করে যেতে হবে। তরতাজা হয়ে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে পরিকল্পনা ছকা শুরু করব। এখন উপভোগ করার সময়। একদিন ছুটি, তারপর থেকে পরের লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু হবে।’