মুম্বই হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ ভারতের ক্রীড়ামহলের

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, কেঁপে উঠেছিল মুম্বই শহর (Mumbai attack)। জনা কয়েক যুবক কালাশনিকভ হাতে রাতের মায়াবী মুম্বই শহরে রক্তের হোলি খেলায় মত্ত। ভয়ঙ্কর স্মৃতি…

Mumbai attack

২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর, কেঁপে উঠেছিল মুম্বই শহর (Mumbai attack)। জনা কয়েক যুবক কালাশনিকভ হাতে রাতের মায়াবী মুম্বই শহরে রক্তের হোলি খেলায় মত্ত। ভয়ঙ্কর স্মৃতি আজও দগদগে।

শহরে জঙ্গি হামলা হয়েছে এটা বুঝতে গিয়ে মুম্বই পুলিসের সন্ত্রাসবাদী দমন শাখার উচ্চপদস্থ আধিকারিক সহ টিমের লোকজন জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াইতে শহীদ।মুম্বইর রাস্তা তখন দখল নিয়েছে পাকিস্তান এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই’র প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত জঙ্গিরা। এক পুলিস কর্মীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে পুলিসের জালে ধরা পড়ে জঙ্গি কাসভ।

আজ সেই দিন,১৪ বছর আগে গোটা দেশের সঙ্গে তামাম দুনিয়া দেখেছিল সন্ত্রাস আর সন্ত্রাসবাদীরা কোনও কাঁটাতারের বাধান মানে না।এমন এক দিনে মুম্বই সিটি এফসি ফুটবল টুর্নামেন্টের চাপ সামলে জঙ্গিদের হাতে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে ভুল করেনি।নিজেদের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানিয়েছে, “আজ, আমরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে চূড়ান্ত আত্মত্যাগ করার জন্য 26/11-এর বীরদের শ্রদ্ধা জানাই।
মুম্বই মনে পড়ে। “
একইভাবে, মুম্বই’তে জঙ্গি হামলায় নিহতদের শ্রদ্ধার্ঘ জানিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নিজেদের ইনস্ট্রাগাম পোস্টের মাধ্যমে।
২৬/১১ তারিখ শুধু একটা তারিখ নয়।এটা একটা আবেগ। ভারতের অখন্ডতা, সার্বভৌমত্বকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল পাকিস্তান এবং পাক গুপ্তচর সংস্থা ISI মদতপুষ্ট জঙ্গিরা।সারা রাত AK47 থেকে রাইফেল থেকে জঙ্গিরা নিশানা করেছিল মুম্বই’র নিরীহ সাধারণ মানুষকে।খবর পেয়ে মুম্বই পুলিসের জঙ্গি দমন শাখার আধিকারিক সহ গোটা টিম রাস্তায় নামলে তাদের সঙ্গেও গুলি বিনিময় হয় পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের।

এমন এক মুহুর্তে দাঁড়িয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ(IPL) টিম মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ইনস্ট্রাগাম পোস্ট দগদগে ক্ষতকে সজীব করে দিয়েছে।ওই পোস্টে লেখা,”এই দুর্ভাগ্যজনক দিনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন সেই সমস্ত সাহসী হৃদয়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানাই🙏”।

https://www.instagram.com/p/ClaSp1aKzTy/?utm_source=ig_web_copy_link

Advertisements

মুম্বইর রাস্তায় চারিদিক জুড়ে শুধু চাপ চাপ রক্ত,আর্তনাদে কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। ভারতের বাইরে খবর ছড়াতেই বিশ্ব সন্ত্রাসের ভয়াবহতায় তাজ্জব বনে যায় তাবড় সুপার পাওয়াররা।স্পেশাল ফোর্স,তিন বাহিনীর কম্যান্ডো ট্রুপস,মুম্বই পুলিস, সেনা যৌথ অভিযান চালায় মুম্বইর বিভিন্ন জায়গাতে,যেখানে জঙ্গিরা লুকিয়ে ছিল।জ্যান্ত ধরা পড়ে জঙ্গি কাসভ।ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের চক্রান্ত বেআব্রু হতে থাকে পরের সময়ে জঙ্গি কাসভকে হেফাজতে নিয়ে জিঞ্জাসাবাদের প্রক্রিয়াতে।

এই হামলার ১৪ তম বর্ষপূর্তিতে হুঁশিয়ারি দেশের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের।তিনি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ মানবতার শত্রু। আজ, ২৬/১১-র দিন ভারতের সঙ্গে গোটা দুনিয়াও নিহতদের স্মরণ করছে। যারা এই জঘন্য হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তাদের বিচার হবেই। বিশ্বের যাঁরাই জঙ্গি হামলায় নিহত হয়েছেন, আমরা তাঁদের কাছে ঋণী।”এখনও মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ডরা পাক ভূমিতে বহাল তবিয়ৎ’এ রয়েছে।এবং পাকিস্তান সরকার ভারত এবং সুপার পাওয়ার দেশগুলোর চাপে পড়ে মুম্বই হামলার মাস্টার মাইন্ডদের বিরুদ্ধে লোকদেখানো আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে নিজেদের বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে।

করাচি থেকে জলপথে মুম্বইয়ে পা রেখেছিল আজমল কাসভ সহ ১০ লস্কর জঙ্গি। প্রথমে ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাস রেল স্টেশনে হামলা চালায় তারা। এরপর এক এক করে কামা হাসপাতাল, লিওপল্ড ক্যাফে, তাজ হোটেল, ওবেরয় ট্রাইডেন্ট, নরিম্যান হাউসে হামলা চলে।কমান্ডো অপারেশনে নিহত হয় কাসভ ছাড়া বাকি জঙ্গিরা। বিচারে ফাঁসি হয় আজমল কাসভের।এরই সঙ্গে পাকিস্তানের ভারত বিরোধী যাবতীয় কারসাজি ফাঁস হয়ে যায় আন্তজার্তিক দুনিয়ায়।