বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির (Border Gavaskar Trophy) প্রথম টেস্টে ভারতীয় ক্রিকেট দল (Indian Cricket Team) একটি দুর্দান্ত জয় লাভ করে ইতিহাস গড়েছে দীর্ঘ ১৬ বছর পর। পার্থে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ভারত অস্ট্রেলিয়াকে (Australia) ২৯৫ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজিত করে। এই জয়টি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে, কারণ এটি ছিল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) শাপমুক্তির মুহূর্ত। ৪৯২ দিন পর বিরাট কোহলি আবার তাঁর সেঞ্চুরি ফিরিয়ে এনেছেন, যা শুধু তার জন্য নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের জন্যও একটি বড় উপলক্ষ। এবার তাঁকে নিয়ে বিস্ফোরক ব্যাখ্যা দিয়েছেন ভারতীয় পেসার (Indian Pacer) তথা এই টেস্টের অধিনায়ক জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)।
KKR : নিলাম শেষে প্রকাশ্যে এল নাইটদের ওপেনিং জুটি এবং অধিনায়কের নাম!
প্রথম ইনিংসে কিছুটা চাপে পড়লেও ভারতীয় দল পরবর্তী সময়ে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে দারুণভাবে পরাজিত করে। বিরাট কোহলির শতক সেই দিনটির সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। দীর্ঘ ৪৯২ দিন পর বিরাট আবার সেঞ্চুরি করে, যেন ক্রিকেটের পুরনো শক্তি ফিরে পেয়েছেন। তাঁর এই শাপমুক্তি শুধু তার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং পুরো ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
এদিকে, ভারতীয় দলের পেস বোলার জসপ্রীত বুমরাহ বিরাট কোহলি সম্পর্কে বলেছেন, “বিরাট কোহলির দরকার আমাদের নয়, বরং আমাদের দরকার বিরাট কোহলিকে।” বুমরার এই মন্তব্য থেকে পরিষ্কার যে, বিরাট কোহলির অবদান শুধুমাত্র তার ব্যাটিং ক্ষমতার জন্য নয়, তার অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের গুণের জন্যও অপরিহার্য।
East Bengal FC : ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়া, লাল-হলুদ জার্সি ছেড়ে কেন নতুন পেশা বাছলেন ফুটবলার?
কিন্তু এই জয়টি শুধু বিরাটের সেঞ্চুরির জন্যই নয়, ভারতীয় দলের জন্য আরও অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। ২৯৫ রানের এই বিশাল জয়ের ফলে ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা আরও বাড়ে। বিরাট কোহলি এই ম্যাচে নিজেকে প্রমাণ করেছেন, এবং এক সেঞ্চুরির মাধ্যমে তিনি শুধু নিজের ক্রিকেটীয় দক্ষতাই নয়, তার শাসনের জায়গাটাও আবার ফিরিয়ে এনেছেন।
বিশ্ব ক্রিকেটের কিংবদন্তি রিকি পন্টিং একবার বলেছিলেন, গত পাঁচ বছরে কোহলির দুই সেঞ্চুরি ছাড়া অন্য কেউ এই দলের সুযোগ পেত না। এই মন্তব্যের পর কোহলি নিশ্চুপ ছিলেন। দেশের মাটিতে যখন তার ব্যাট খরায় পড়েছিল, তখন অনেকেই মনে করেছিল, তার ক্যারিয়ার হয়তো শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু বিরাট কোহলি কখনও সেই সংকীর্ণ ধারনার মধ্যে আটকে পড়েননি। তিনি চুপচাপ অপেক্ষা করেছেন, এবং স্যর ডন ব্র্যাডম্যানের দেশে ফিরেই রাজা হয়ে ফিরে এলেন।
এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার মিচেল জনসনও বিরাট কোহলির কাছ থেকে সেঞ্চুরি দেখতে চেয়েছিলেন। তার সেই ইচ্ছা পূর্ণ হলো, বিরাট এক সেঞ্চুরির মাধ্যমে নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন। তিনি আবারও প্রমাণ করে দিলেন যে, তিনি এখনও সেরা।
বোরহা-সাদিকু প্রসঙ্গে কী বললেন মানোলো? জানুন বিস্তারিত
এই ম্যাচের পর, ভারতের সামনে এখন অ্যাডিলেডে দ্বিতীয় টেস্টের চ্যালেঞ্জ। ৬ ডিসেম্বর শুরু হতে যাওয়া গোলাপি বলে এই টেস্টটি হবে বিশেষ চ্যালেঞ্জ। তবে ভারতীয় দল এবার দৃঢ় প্রত্যয়ে মাঠে নামবে, বিশেষ করে বিরাট কোহলির ফিরে আসা এবং তার দুর্দান্ত ফর্ম দেখে। টিম ইন্ডিয়া এবার আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে দ্বিতীয় টেস্টে জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে।
পরিশেষে, পার্থের এই জয় ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বিরাট কোহলির শাপমুক্তি এবং দলীয় ঐক্যের মাধ্যমে ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যাওয়ার আশা আবার জেগে উঠেছে।