ভারতীয় ফুটবলের (Indian Football) শীর্ষ স্তরের টুর্নামেন্ট ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL) ভবিষ্যৎ এখনও অনিশ্চিত। আগামী মরসুমের জন্য লিগ আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে এই অনিশ্চয়তার মাঝেও এফসি গোয়া (FC Goa) নিজেদের প্রস্তুত করতে মরিয়া। কারণ আগামী মাসে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু’র গুরুত্বপূর্ণ প্লে-অফ ম্যাচে (ACL Two Playoff) খেলতে নামবে মানোলো মার্কুয়েজের (Manolo Marquez) ছাত্ররা। গত মরসুমে সুপার কাপ জিতে এফসি গোয়া মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। তবে আইএসএলের স্থগিত অবস্থার কারণে প্রস্তুতির সময় খুবই সীমিত। এই পরিস্থিতিতে ১৩ আগস্ট ওমানের চ্যাম্পিয়ন দল আল সীবের বিরুদ্ধে একক লেগের প্লে-অফ ম্যাচের জন্য গোয়ার প্রস্তুতি চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত রবিবার এফসি গোয়ার সিইও রবি পুস্কুর জাতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই পর্যায়ে প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর প্রশ্নই ওঠে না। এটি কেবলমাত্র উল্লেখযোগ্য নিষেধাজ্ঞার কারণ হবে না, বরং গত এক দশকে আমরা যা গড়ে তুলেছি তাতে এক স্থায়ী কলঙ্কের দাগ ফেলবে। এটি আমাদের খেলোয়াড়, সমর্থক এবং ভারতীয় ফুটবলের কাছে আমরা যে বার্তা দিতে চাই, তা নয়।” তিনি আরও জানান, দেশের প্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব গোয়া পুরোপুরি উপলব্ধি করে এবং এই মঞ্চে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইএসএলের স্থগিত অবস্থা এবং দেশীয় ফুটবলের কাঠামোগত সমস্যা দলের প্রস্তুতিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুস্কুর বলেন, “দেশীয় ক্যালেন্ডার নিয়ে স্পষ্টতার অভাব এবং কাঠামোগত সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে পরিকল্পনা করা অত্যন্ত কঠিন করে তুলেছে। এই বিঘ্ন নিশ্চিতভাবেই প্রভাব ফেলবে। তবে আমরা সব বাধা অতিক্রম করে এশিয়ার মঞ্চে ভারতীয় ফুটবলের মর্যাদা ও গৌরব বজায় রাখার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
এফসি গোয়া যদি আল সীবের বিরুদ্ধে প্রাথমিক রাউন্ডে জয়লাভ করে, তবে তারা গ্রুপ পর্বে উঠবে, যেখানে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর দল আল-নাসর এফসি অংশ নেবে। গোয়ার জন্য এক বড় সুযোগ, তবে চ্যালেঞ্জও কম নয়। পুস্কুর জানান, দল ইতিমধ্যেই তাদের ছয়জন বিদেশি খেলোয়াড়ের কোটা পূরণ করেছে। এই খেলোয়াড়রা হলেন দেজান দ্রাজিচ, বোরহা হেরেরা, ইকের গুয়ারোটক্সেনা, জাভিয়ের সিভেরিও, ডেভিড তিমোর এবং পল মোরেনো। তারা সকলেই এই সপ্তাহের শেষে গোয়ায় পৌঁছে প্লে-অফের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবেন।
এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টু এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (AFC) ক্লাব প্রতিযোগিতার মধ্যে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। ২০২৫-২৬ সিজনে এই টুর্নামেন্টে মোট ২৯টি দল অংশ নেবে, যার মধ্যে ১৪টি পশ্চিম অঞ্চল থেকে এবং ১৫টি পূর্ব অঞ্চল থেকে। এছাড়া ছয়টি দল পরোক্ষ স্লটে প্রাথমিক পর্বে খেলবে। প্রাথমিক পর্বের প্রতিটি ম্যাচের বিজয়ী দল গ্রুপ পর্বে উঠবে, আর পরাজিত দলকে তৃতীয় স্তরের এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলতে হবে।
গোয়ার লক্ষ্য ও সমর্থকদের প্রত্যাশা
এফসি গোয়ার জন্য এই ম্যাচ শুধু একটি খেলা নয়, বরং ভারতীয় ফুটবলের মর্যাদা বজায় রাখার একটি সুযোগ। সমর্থকরা আশা করছেন, গোয়া তাদের ঐতিহ্য অনুযায়ী দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখাবে। শেষ মরসুমে সুপার কাপ জয়ের মাধ্যমে দল ইতিমধ্যেই তাদের শক্তি প্রমাণ করেছে। এখন এশিয়ার মঞ্চে নিজেদের আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে তারা মাঠে নামবে। অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও এফসি গোয়ার এই প্রতিশ্রুতি ভারতীয় ফুটবলের জন্য ইতিবাচক বার্তা। আল সীবের বিরুদ্ধে ম্যাচটি কেবল গোয়ার জন্যই নয়, সমগ্র ভারতীয় ফুটবলের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হতে চলেছে।
Indian Football club FC Goa focus on ACL Two Playoff