বুধবার এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত তৃতীয় এবং নির্ণায়ক ম্যাচে (IND vs AUS 3rd ODI) অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিরাট কোহলির অর্ধশতকের ইনিংস এবং হার্দিক পান্ডিয়ার লড়াইয়েও জিততে পারেনি ভারতীয় ক্রিকেট দল। এই ম্যাচে ভারতকে ২১ রানে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া দল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভারে ২৬৯রানে অলআউট হয়। ভারতীয় দল ৪৯.১ ওভারে ২৪৮ রানে অলআউট হয়ে যায়।
মুম্বাইয়ে প্রথম ম্যাচে ভারত জিতেছিল। এর পর বিশাখাপত্তনমে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতকে হারের মুখে পড়তে হয় এবং অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ১-১ সমতা করে। এই কারণে তৃতীয় ম্যাচটি নির্ণায়ক হয়ে ওঠে যেখানে অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল। এই জয়ে অস্ট্রেলিয়া দলও ওয়ানডেতে এক নম্বর দলে পরিণত হয়েছে।
ভারতের জন্য ভালো শুরু
পিচের দিকে তাকালে এই টার্গেটকে কঠিন মনে হচ্ছিল এবং এমন পরিস্থিতিতে ভারতের দরকার ছিল ভালো শুরু। রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল দলকে ভালো সূচনা এনে দেন এবং প্রথম উইকেটে ৬৫ রান যোগ করেন। কিন্তু এরপর পরপর দুই ব্যাটসম্যানই আউট হয়ে যান। প্রথমে ব্যক্তিগত ৩০ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রোহিত শর্মা। এরপর গিলকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান অ্যাডাম জাম্পা। এখানে বিরাট কোহলি এবং কেএল রাহুল দলকে সামাল দেন এবং তৃতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন। রাহুল ভালো খেলছিলেন কিন্তু তারপর বড় শট খেলার চেষ্টায় জাম্পার বলে শন অ্যাবটের হাতে ধরা পড়েন। রাহুল ৫০ বলে ৩২ রান করেন। তার ইনিংসে ছিল দুটি চার ও একটি ছক্কা।
কোহলি হাফ সেঞ্চুরি, সূর্য ব্যর্থ
রাহুলের পরে, অক্ষর প্যাটেলও (২) রান আউট হন এবং এতে ভারতের স্কোর হয় চার উইকেটে ১৫১ রানে। এদিকে উইকেটে জমে গেছেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। কিন্তু তার পর ৩৬তম ওভারের প্রথম বলেই আউট হন অ্যাশটন অ্যাগার।৭২ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের বলেই সূর্যকুমারকে বোল্ড করেন এগার। এই সিরিজে টানা তৃতীয়বার যখন খাতা না খুলেই আউট হলেন সূর্যকুমার।
পান্ডিয়া লড়াইয়ের মনোভাব দেখিয়েছিলেন
এখান থেকেই হারের শঙ্কায় দল।হার্দিক পান্ড্য আবারও লড়েছেন রবীন্দ্র জাদেজাকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচে। দুজনেই ৩৩ রান যোগ করলেও জাম্পার বলে বড় শট খেলার চেষ্টায় আউট হন পান্ডিয়া। ৪০ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৪০ রান করেন তিনি। জাম্পা জাদেজাকে আউট করেন।জাদেজা ১৮ রান করেন। ভারতের পরাজয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছিল এখান থেকেই। মোহাম্মদ শামিকে বোল্ড করেন মার্কাস স্টোইনিস। ১৪ রান করেন তিনি। ছয় রান করেন কুলদীপ।
ভালো শুরুর পরও বিপর্যস্ত অস্ট্রেলিয়া
এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়।মিচেল মার্শ এবং ট্র্যাভিস হেড দলকে ভালো সূচনা এনে দেন এবং প্রথম উইকেটে ৬৮ রান যোগ করেন।এই জুটি ভাঙার সাথে সাথেই অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস ভেঙে পড়তে শুরু করে।হার্দিক পান্ডিয়া প্রথমে হেড আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে প্রথম ধাক্কা দেন। হেড ৩১ বলে ৩৩ রান করেন। এরপর স্টিভ স্মিথকে আউট করে ভারতকে আরেকটি সাফল্য এনে দেন। মিচেল মার্শকে প্যাভিলিয়নে পাঠান পান্ডিয়া। মার্শ ৪৭ বলে ৮টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৭ রান করেন। খাতাও খুলতে পারেননি স্মিথ।
ডেভিড ওয়ার্নারকে নিজের শিকারে পরিণত করেন কুলদীপ। মোট ১২৫ রানে ২৩ রান করা ওয়ার্নারের উইকেট পড়ে যায়। কুলদীপ এরপর মারনাস লাবুশেনকে ১৩৮ রানের মোট স্কোরে আউট করেন। তিনি করেন ২৮ রান। মার্কাস স্টয়নিস ২৫ রান করে অক্ষর প্যাটেলের শিকার হন। ৩৮ রানে অ্যালেক্স কেরির ইনিংসের শেষ বলে বোল্ড হন কুলদীপ যাদব।
কেরির উইকেটের পর, অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ছিল সাত উইকেট হারিয়ে ২০৩ রান এবং মনে হচ্ছিল এই দল দ্রুতই অলআউট হয়ে যাবে। কিন্তু লোয়ার অর্ডার দলকে নিয়ে যায় সম্মানজনক স্কোরে। শন অ্যাবট ২৩ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলেন, দুটি চার ও একটি ছক্কায়। আগার করেন ১৭ রান। মিচেল স্টার্ক করেন ১০ রান। জাম্পা ১০ রান করে আউট হন।ভারতের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন পান্ডিয়া ও কুলদীপ। দুটি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ ও অক্ষর প্যাটেল।