IND vs BAN: আস্ফালনই সার হল শেষমেশ! পাকিস্তানকে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করে একপ্রকার হুংকার শানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। তবে বর্তমানে টেস্ট এবং একদিনের ক্রিকেটের ক্রমতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতাটা যে অতটা সহজ হবে না ; সেটা বোধ হয় আন্দাজ করতে পারেননি শান্ত-লিটন- সাকিবরা। এমনিতেই পরস্পর দুটি টি টোয়েন্টি ম্যাচ জিতে সিরিজ পকেটে পুরে নিয়েছিলেন সূর্যকুমার যাদবের দল।
দিল্লিতে সপ্তমীর রাতে জেতার পর আজ দশমীর রাতে ১৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে সিরিজ জিতল ভারত। তবে আজ হায়দ্রাবাদে জয়ের নেপথ্যের কারিগর হিসেবে নিজেকে ফুটিয়ে তুললেন সঞ্জু স্যামসন। এদিন তাঁর সেঞ্চুরির ওপর ভর করেই প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৯৭ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা খাড়া করে মেন ইন ব্লুজ।
হায়দরাবাদে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ছিল ভারতের কাছে শুধুই নিয়মরক্ষার। তবে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ব্যাটে -বলে এমন খেলল ভারত, যা দেখে মনে হতে বাধ্য যে এই ম্যাচের উপরেই সিরিজ়ের জয় নির্ভর করছে। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এদিন গোটা ম্যাচ জুড়েই বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে ছেলেখেলা করলেন ভারতের ব্যাটারেরা। বিগত দুই ম্যাচে রান না পেলেও এদিন ওপেন করতে নেমে মাত্র ৪০ বলে সেঞ্চুরি করে ভারতের হয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন সঞ্জু স্যামসন। এছাড়াও সূর্যকুমার যাদব ৩৫ বলে ৭৫ রান করেন এবং হার্দিক পান্ডিয়া মাত্র ১৮ বলে ৪৭ রান করেন। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটে এটিই ছিল সঞ্জুর প্রথম সেঞ্চুরি।
এছাড়াও অভিষেকের আউটের পর বোলাররা এসেছেন, বল করেছেন, আর সূর্য-স্যামসন চার-ছক্কা মেরেছেন। দুজন মিলে মাত্র ৭.১ ওভারে দলের রান এক শর ওপারে নিয়ে যান। সঞ্জু ততক্ষণে ফিফটি করে ফেলেছেন, সেটাও মাত্র ২২ বলে, বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোনো ভারতীয়র দ্রুততম ফিফটি এটি। আগের রেকর্ডটি ছিল রোহিত শর্মার (২৩ বল)। কিছুক্ষণ পর সূর্য ২৩ বলে ফিফটি করে ছুঁয়ে ফেলেন রোহিতকে। শেষমেষ এই দুই জুটির দৌলতেই ২৯৭ রানের লক্ষ্যমাত্রা রাখে ভারত।
তবে সূর্য বা সঞ্জু আউট হলেন বলেই হয়তো অল্পের জন্যই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের করা ৩ উইকেটে ৩১৪ রানের রেকর্ডটা ভাঙতে পারল না ভারত। তবে বল হাতে বাংলাদেশের কাছে এই দিনটি সবথেকে বড় লজ্জার দিন। তাসকিন আহমেদ, তানজিম সাকিব এবং মুস্তাফিজুর রহমান—তিনজনই ৫০ এর বেশি রান দেন। তানজিম সাকিব তার ৪ ওভারে ৬৬ রান খরচ করেন, যা বাংলাদেশের কোনো বোলারের সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার রেকর্ড।
বল হাতে ব্যর্থতার পর ব্যাট হাতেও চরম ব্যর্থ বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। তাওহিদ হৃদয়ের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৪২ বলে অপরাজিত ৬৩ রান ও লিটন দাসের ২৫ বলে ৪২ রানের ইনিংসের সৌজন্যে এই সিরিজের সর্বোচ্চ স্কোর পেয়েছে বাংলাদেশ। একমাত্র এই দুজনের কাঁধে ভর করেই একশো রানের লক্ষ্যমাত্রা টপকাতে পেরেছে বাংলাদেশ। শেষমেশ ১৬৪ রানেই গুটিয়ে যান তাঁরা। রেকর্ড ১৩৩ রানে হেরে লজ্জা’ শব্দটির সঙ্গে নিজেদের পরিচিতি আরও কিছুটা বাড়াল বাংলাদেশি ক্রিকেট দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত: ২০ ওভারে ২৯৭/৬ (সঞ্জু ১১১, সূর্যকুমার ৭৫, পান্ডিয়া ৪৭, পরাগ ৩৪; তানজিম ৩/৬৬, মাহমুদউল্লাহ ১/২৬, তাসকিন ১/৫১, মোস্তাফিজ ১/৫২)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৬৪/৭ (হৃদয় ৬৩*, লিটন ৪২; বিষ্ণয় ৩/৩০, মায়াঙ্ক ২/৩২)।
ফল: ভারত ১৩৩ রানে জয়ী।
সিরিজ: ভারত ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সঞ্জু স্যামসন।
ম্যান অব দ্য সিরিজ: হার্দিক পান্ডিয়া।