Igor Stimach : র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬৫ ধাপ পিছিয়ে প্রতিপক্ষ, তবুও কেন চিন্তায় ভারতের কোচ স্টিমাচ?

বুধবার থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হচ্ছে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ফুটবলের আসর এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব, যেখানে তিনটি ম্যাচে সফল হলে ভারতীয় দল ২০১৯-এর…

Coach Igor Stimac

বুধবার থেকে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে শুরু হচ্ছে এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ফুটবলের আসর এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব, যেখানে তিনটি ম্যাচে সফল হলে ভারতীয় দল ২০১৯-এর মতো আগামী বছরেও এশিয়ান কাপের মূলপর্বে খেলবে। প্রতিপক্ষ কম্বোডিয়া এই ফিফা র‍্যাঙ্কিংয়ের ১৭১ নম্বর স্থানে। যেখানে ভারত রয়েছে ১০৬-এ। অর্থাৎ র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬৫ ধাপ পিছনে থাকা একটা দলের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুটা বেশ সহজ হবে বলেই ধারণা অনেকের।

তবে ভারতের হেডস্যার ইগর স্টিমাচ কিন্তু শোনালেন অড়ন্য কথা। তিনি পরিষ্কার বলে দিলেন, ‍‘কে কত নম্বরে রয়েছে, সে সব আমি দেখি না। কম্বোডিয়া এখানে শুধু অংশগ্রহণ করতে আসেনি। ওরাও এখানে জিততেই এসেছে। ভারত যখন ১৮৪ বা ১৫০ ছিল, তখন ভারতও শুধু অংশ নিতে বা হারতে যেত না, জিততেই যেত। কখনওই আমি বলব না যে কাউকে সহজেই হারানো যাবে। কারণ, তাতে আমার দলের মোটিভেশনে ক্ষতি হবে। আমাদের মধ্যে জেতার খিদে থাকতে হবে এবং জেতার জন্য আমাদের তৈরিও থাকতে হবে। আমাদের উজ্জীবিত হয়ে মাঠে নামতে হবে। আমরা যদি মনে করি কোনও ম্যাচ সহজেই জিতে নিতে পারব, তা হলে তা হওয়ার সম্ভাবনা কম। আধুনিক ফুটবলে সহজ ম্যাচ বলে কিছু হয় না। দুই দলের মানে খুব সামান্যই ফারাক থাকে। শুরুতেই যদি গোল করে দিতে পারি, তা হলে প্রতিপক্ষ ঘাবড়ে যেতে পারে। এতেই মানসিকতা, আত্মবিশ্বাস ও ফলের ওপর প্রভাব পড়ে। ফুটবলটাকে বাস্তব মানসিকতা নিয়ে দেখাই ভাল।’

ঘরের মাঠে সমর্থকদের বাড়তি সুবিধা নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার এই কোচ বলেন, ‍‘আশা করি, তাঁরা জাতীয় দলের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য দলে দলে স্টেডিয়ামে আসবেন, এসে ছেলেদের শক্তি বাড়াবেন। পায়ের, হৃদয়ের ও মনের শক্তি। ওঁরা গ্যালারিতে থাকলে আমাদের আনন্দও আরও বাড়বে। গতবারও ওঁরা হাজারে হাজারে খেলা দেখতে এসেছিলেন ও আমাদের প্রচুর সমর্থন জুগিয়েছিলেন। ছেলেদের প্রতি মুহূর্তে উজ্জীবিত করেছিলেন সমর্থকেরা। আশা করি এ বারেও সে রকমই সাহায্য পাব ওঁদের কাছ থেকে।’

স্টিমাচের প্রশিক্ষণে ভারতীয় দল এমন এক ফুটবল খেলছে, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। ফুটবলারদের মানসিকতায় কী পরিবর্তন এসেছে জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর সোজাসাপটা উত্তর, ‍‘এর চেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও যাতে আমরা শুরু থেকে বিপক্ষকে চাপে রাখতে পারি বা নিজেরা চাপে পড়ে গেলেও যাতে পাল্টা চাপ দিতে পারি, সে ভাবেই নিজেদের প্রস্তুত হয়েছি আমরা। এই গ্রুপে আমরাই যে ফেবারিট, তা প্রমাণ করার চেষ্টা আমরা করবই। এতে লুকনোর কিছু নেই। আমাদের ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রতিপক্ষের স্টাইল যেমনই হোক, তার জন্য তৈরি থাকতে হবে। যে কোনও পরিস্থিতির জন্যই তৈরি থাকতে হবে।’

শেষ তিন ম্যাচে ভারতীয় দল মাত্র একটি গোল করতে পেরেছে। দলের আক্রমণ বিভাগের ভূমিকা নিয়ে স্টিমাচ বলেন, ‍‘কোচ হিসেবে দলের কে গোল করল বা করল না, সেটা আমার কাছে বড় কথা নয়। আমার কাছে নিয়মিত গোল করে যাওয়াটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যারা শারীরিক ভাবে ও টেকনিকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে, যেমন জর্ডন, বাহরিন, বেলারুশ, এই দলগুলির বিরুদ্ধে আমাদের গোল করতে হবে। এই দলগুলির বিরুদ্ধে আমরা কিন্তু প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছি। সেই সময় অবশ্য সুনীল (ছেত্রী) দলে ছিল না এবং সেটা অন্যতম একটা কারণ।

এই ধরনের ম্যাচে গোল করার মতো মানের খেলোয়াড় আমাদের দলে নেই। আন্তর্জাতিক স্তরে চাপ সামলে ভাল খেলার মতো তরুণ ফুটবলার অবশ্য আমাদের দলে আছে। তবে এদের আরও আগে থেকে এ রকম পরিস্থিতির জন্য তৈরি শুরু করা দরকার। যাতে ওরা চাপ সামলে ভাল ফল এনে দিতে পারে। এই কাজটা করতে সময় লাগবে। আমরা যদি সেই ধৈর্য্য নিয়ে কাজ করতে পারি, তা হবে ভাল কিছু হতে পারে।’