ভারতের অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন (Ravichandran Ashwin) নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে অসাধারণ একটি ক্যাচ নিয়ে শোরগোল তুললেন। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান ড্যারিল মিচেলকে আউট করার সময় এই ক্যাচের মাধ্যমে ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্রেকথ্রু এনে দেন তিনি। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তার এই ক্যাচ নিয়ে দর্শকরা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন।
ভারত যখন মনে করছিল ম্যাচ থেকে তারা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছে, তখন মিচেল ও উইল ইয়ং মিলে একটি ৫০ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছিল। দল জানত যে এই পার্টনারশিপ ভাঙতে কোনও জাদুকরী মুহূর্ত প্রয়োজন, যা আসে অশ্বিনের হাত থেকে—এবার অবশ্য বল দিয়ে নয়, বরং ফিল্ডিংয়ে। মিচেল যখন বড় শট খেলতে গিয়ে তার স্ট্রোক মিস করেন, অশ্বিন তখন পেছন দিকে দৌড়ে হাত দু’টি ছড়িয়ে ক্যাচটি লুফে নেন। এই কৃতিত্বের পরে তিনি বলেন, “বল যতটা সম্ভব কাছে পাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। আমার হাতে আস্থা ছিল, তাই আমি জানতাম যে ক্যাচটি ধরতে পারব।”
Also Read | ঋষভের ফিটনেস গোপন রহস্য, ব্যক্তিগত শেফ তৈরি করছেন স্বাস্থ্য-পুষ্টিকর খাবার
শুধু ক্যাচ নয়, এই দিনে অশ্বিনের সেরা ম্যাজিক মোমেন্টগুলোতে আরও কিছু ছিল। অভিজ্ঞ স্পিনার হিসেবে তিনি তার বিশেষ কারাম বলটি ব্যবহার করে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে উইকেট তুলে নেন এবং নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং ধ্বংস করতে সাহায্য করেন। গ্লেন ফিলিপস তার এক ওভারে দুটি টানা ছক্কা মেরে চাপে ফেললেও, অশ্বিন তাকে কারাম বল দিয়ে বিভ্রান্ত করেন এবং তার ডিফেন্স ভেঙে আউট স্টাম্পে বলটি লাগান। ফিলিপস তখন ১৪ বলের মধ্যে ২৬ রান করে দ্রুতগতির ইনিংস খেলছিলেন।
অশ্বিন তার কারাম বল ব্যবহারের কারণ সম্পর্কে বলেন, “গেমটি দুই অর্ধে বিভক্ত, প্যাভিলিয়ন প্রান্ত এবং ড্রেসিংরুম প্রান্ত। ড্রেসিংরুম প্রান্ত থেকে উইকেট তুলনামূলকভাবে সমান নয়। সেখান থেকে অনেক কম বাউন্স হচ্ছে, তাই আমি ভিন্ন কিছু চেষ্টা করতে চেয়েছিলাম। ব্যাটাররাও জানে যে এই দিক থেকে আমাকে টার্গেট করা সহজ। আমি কিছু ভিন্ন কিছু করতে চেয়েছিলাম।”
Also Read | গম্ভীরের কোচিংয়ে ভারতের পরাজয়ের ‘কুখ্যাত’ রেকর্ডে ক্ষোভ প্রকাশ আকাশের
দ্বিতীয় দিনের খেলার শেষে রভীন্দ্র জাদেজা যখন ম্যাট হেনরিকে আউট করেন তখন আম্পায়াররা খেলা বন্ধ ঘোষণা করেন। নিউজিল্যান্ডের স্কোর তখন ১৭১/৯, যেখানে তারা ১৪৩ রানে এগিয়ে ছিল। অশ্বিন আশা করছেন, ভারতের স্পিনাররা দ্রুত নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শেষ করতে পারবে এবং খুব বেশি রান যোগ করতে দেবে না। তিনি বলেন, “আশা করি, খুব বেশি রান না। কয়েকটি রান ইকোনমি করে আমরা কাজ শেষ করতে পারব। এই ইনিংসে বাঁচানো প্রতিটি রান আমাদের চেজের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হবে।”
Also Read | বোপারার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টানা ৬ ছক্কায় উথাপ্পার ওভারে ৩৭ রান
ভারতীয় দলের স্পিনাররা পিচ থেকে যে স্পিন এবং বাউন্স আদায় করতে সক্ষম হচ্ছেন, তাতে ১৫০ বা ১৬০ রানও ভারতের জন্য তাড়া করা কঠিন হতে পারে। অশ্বিন মনে করেন যে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভালো করতে হবে যাতে সাদা ধোয়ায় ফেরত যেতে না হয়। তিনি বলেন, “এটা সহজ হবে না, আমাদের ভালো ব্যাট করতে হবে। আমি আশা করেছিলাম এই মুম্বাই পিচ থেকে আরও বেশি বাউন্স এবং গতি পাওয়া যাবে, কিন্তু পিচটি বেশ ধীর গতির এবং এটা আমার জন্য একটি চমক। এটি একেবারেই সাধারণ বোম্বাই পিচ নয়, বরং ধীরগতির।”