২৮ অগস্ট মরশুমের প্রথম কলকাতা-ডার্বি। ডুরান্ড কাপে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। আর এটাই প্রথম ডার্বি যেদিন তিনি থাকবেন না। না বসবেন দু’দলের কোনও রিজার্ভ বেঞ্চে, না তার নিখুঁত বিশ্লেষণের ম্যাচ-রিপোর্ট পাওয়া যাবে কলকাতার জনপ্রিয় দৈনিকে। তিনি সুভাষ ভৌমিক (Subhash Bhowmik)।
প্রয়াত হয়েছেন ২০২২-এর ২২ জানুয়ারি। স্মৃতিমেদূর হয়ে পড়েছেন ছেলে অর্জুন। তার মনে পড়ছে শৈশব থেকে কোচ সুভাষ ভৌমিকের সঙ্গে ডার্বির দিনগুলোর কথা। সুভাষ ভৌমিকের গৌরবময় ফুটবল জীবনে অর্জুনের জন্ম হয়নি। কিন্তু কোচ ভৌমিককে খুব কাছ থেকে দেখেছেন অর্জুন। বললেন, “বড় দলের কোচ থাকাকালীন, ডার্বির দিন সকাল থেকেই বাবা খুব চুপচাপ হয়ে যেত। গম্ভীর মুখে সকাল সারাক্ষণ থেকে রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনত। যাবতীয় টেনশন গিয়ে পড়ত গাড়ির ড্রাইভারের ওপর। বাড়ি থেকে বেরিয়ে ড্রাইভার যদি একটু ভুল করে তাহলে শুরু হত বাবার চিৎকার। এমনকী, আমিও চড়-থাপ্পড় ক্ষেয়েছি। ডার্বি ম্যাচের দিন বাড়ির পরিবেশ অন্যরকম হয়ে যেত।”
অর্জুনের চোখে এখনও ভাসে দুটো দৃশ্য। একটা ডার্বি হারার পর সুভাষের গাড়ি ভাঙচুর হওয়া। আর একবার করিম বেঞ্চেরিফার কোচিংয়ে মোহনবাগাঙ্কে হারানোর পর বাড়ির সামনে এক বৃদ্ধের উচ্ছ্বসিত হয়ে বলা কথাগুলো, ‘সুভাষ তুমি আজ আমার বুকের ওপর দিয়ে হেঁটে বাড়ি যাবে!’
অর্জুন জানালেন তিনি ও তার মা সবথেকে স্বস্তিতে থাকতেন যখন দুই প্রধানের বাইরের কোনও দলের কোচ ছিলেন সুভাষ। “বাবাকে কলামনিস্ট হিসেবে দেখতে খুব ভাল লাগত। কোনও টেনশন ছিল না। বরং বাবার ম্যাচ বিশ্লেষণ করার অসাধারণ দক্ষতাটা চোখের সামনে দেখে খুব গর্বিত বোধ করতাম। ম্যাচ শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওই ডার্বি নিয়ে কত কিছু আলোচনা হত আমাদের মধ্যে।”
২৮ অগস্ট মাঠে যাবেন না অর্জুন ভৌমিক। টিভি-তে খেলাও দেখবেন কি না নিশ্চিতভাবে বলতে পারলেন না! সেদিনটা হয়ত বাবার স্মৃতি নিয়েই দিন কাটবে ভৌমিক পরিবারের।