সংখ্যার খেলায় Football World Cup, দেখে নিন অজানা কিছু তথ্য

ফুটবল বিশ্বকাপ (Football World Cup) মানেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। উদীয়মান ফুটবলারদের সামনে যেমন বিশ্বদরবারে নিজের জাত চেনাবার সেরা মঞ্চ এটি, সেরকমই আবার অন্ধকারের অতল গহ্বরে…

ফুটবল বিশ্বকাপ (Football World Cup) মানেই রেকর্ড ভাঙা-গড়ার খেলা। উদীয়মান ফুটবলারদের সামনে যেমন বিশ্বদরবারে নিজের জাত চেনাবার সেরা মঞ্চ এটি, সেরকমই আবার অন্ধকারের অতল গহ্বরে হারিয়েও যেতে পারে দুনিয়া কাঁপানো কোনও ফুটবলারের কেরিয়ার। চলতি বছরের শেষেই কাতারে বসতে চলেছে ফুটবল বিশ্বকাপের আসর। স্বাভাবিক নিয়মেই বিশ্বসেরার এই যুদ্ধে বেশ কিছু খেলোয়াড় এবং কয়েকটি দেশের সামনে হাতছানি রয়েছে ইতহিাসের পাতায় নাম লেখানোর। এই প্রতিবেদনে দেখে নেওয়া যাক এরকমই ১০টি উল্লেখযোগ্য রেকর্ড।

১২৩

বিশ্বকাপের ইতিহাসে যখন থেকে কার্ড দেখানোর প্রচলন শুরু হয়েছে, তখন থেকে এখনও পর্যন্ত আর্জেন্টিনার চেয়ে কোনও দল বেশি হলুদ কার্ড দেখেনি। আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা মোট ১২৩টি হলুদ কার্ড দেখেছেন। লাল কার্ড দেখার শীর্ষে রয়েছে ব্রাজিল। তারা এখনও পর্যন্ত ১১টি লাল কার্ড দেখেছে বিশ্বকাপে। উরুগুয়ে দেখেছে মোট ৯টি। এবার তারা নিশ্চয়ই চেষ্টা করবে, সংখ্যাটা যেন দুই অংক স্পর্শ না করে।

১০৯

ব্রাজিল এবং জার্মানি- বিশ্বকাপে অন্যতম সফল দুটি দেশ। এই দুটি দলই এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১০৯টি করে ম্যাচ খেলেছে। এই দুই দলের যে কোনও একটি দল এককভাবে শীর্ষে উঠে যেতে পারে, কিংবা সমানও থাকতে পারে। কাতার বিশ্বকাপেই দেখা যাবে এই রেকর্ডটা লেখা হয় কার পক্ষে। আর্জেন্টিনা এই বিশ্বকাপেই ইটালিকে পেছনে ফেলে উঠে আসতে পারে তৃতীয় স্থানে। কারণ, এবার যেহেতু ইটালি নেই, সেই কারণে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের মুখোমুখি হলেই আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে খেলা হবে ৮৪টি ম্যাচ। ৮৩ ম্যাচ খেলে বর্তমানে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইটালি। আর্জেন্টিনার খেলা ম্যাচ সংখ্যা ৮১।

৭৩

আর্জেন্টিনা যদি গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচে জয়লাভ করে, তাহলে তাদের মোট জয়ের সংখ্যা হবে ৪৬টি। এ ক্ষেত্রেও ইতালিকে পেছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবে লা আলবিসেলেস্তারা। ৪৩ জয় নিয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনা, ৪৫ জয় নিয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইটালি। সর্বোচ্চ ৭৩টি জয় ব্রাজিলের, ৬৭টি জয় জার্মানির।

৭০

ইরানের বিপক্ষে যখন নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে ইংল্যান্ড, তা হবে বিশ্বকাপে তাদের ৭০তম ম্যাচ। সে সঙ্গে তালিকায় তারা উঠে যাবে পঞ্চম স্থানে। ইকুয়েডরের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামলেই বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ সংখ্যা হয়ে যাবে ৫২টি। সুইডেনকে পেছনে ফেলে তালিকায় সেরা দশে ঢুকে যাবে ডাচরা।

১২৫

বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি পরাজয় মেক্সিকোর। এখনও পর্যন্ত ১৬টি বিশ্বকাপে মোট ৫৭টি ম্যাচ খেলেছে তারা। মেক্সিকানরা বিশ্বকাপে শততম গোল হজম করার চেয়ে আর মাত্র দুটি ধাপ দুরে রয়েছে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে যেটা তৃতীয় সর্বোচ্চ গোল হজম করার ঘটনা। সবচেয়ে বেশি ১২৫টি গোল হজম করেছে জার্মানি। ব্রাজিল হজম করেছে ১০৫টি গোল।

২০

মাত্র ১১ জন ফুটবলার বিশ্বকাপের ইতিহাসে ২০টি কিংবা তার বেশি ম্যাচ খেলেছে। লিওনেল মেসির মতো খেলোয়াড় এই তালিকায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন। মেসির ২০ ম্যাচের মাইলফলক ছুঁতে প্রয়োজন আর একটি ম্যাচ। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর প্রয়োজন ৩টি ম্যাচ। পর্তুগালের হয়ে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচই যদি খেলেন, তাহলে তিনি এই তালিকায় উঠে আসতে পারবেন।

১৯

বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত ১৯টি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। তার নিজের দেশের প্রয়াত কিংবদন্তি দিয়েগো মারাদোনার ম্যাচ সংখ্যাকে ছুঁতে আর মাত্র ২টি ম্যাচ প্রয়োজন মেসির। বিশ্বকাপে ফুটবলের রাজপুত্র খেলেছিলেন ২১টি ম্যাচ। যদি মেসি এবং আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে এবং তিনি সাত ম্যাচের সবগুলোই খেলেন, তাহলে তিনি জার্মানির লোথার ম্যাথাউসকে ছাড়িয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়ে ফেলবেন।

১০

ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম এরই মধ্যে বিশ্বকাপে ১২টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন। কাতার বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত যে ২৯টি দল যোগ্যতা অর্জন করেছে, সবগুলো দেশের কোচদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব তাঁর। এরমধ্যে জিতেছেন ৯টি ম্যাচ। আর মাত্র একটি জয়, তাঁকে এনে দেবে গৌরবময় দশম জয়ের মাইলফলক। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আর মাত্র ৬ জন কোচ ১০টি জয়ের মাইলফলক অর্জন করতে পেরেছেন। তারা হলেন- হেলমুট স্কন, লুই ফেলিপে স্কলারি, মারিও জাগালো, জোয়াকিম লো, কার্লো আলবার্তো পেরেইরা এবং অস্কার তাবারেজ।

এখনও পর্যন্ত কাতার বিশ্বকাপে যে ২৯টি দল যোগ্যতা অর্জন করেছে, তাদের মধ্যে ৮টি দলের কোচ রয়েছেন, যারা সংশ্লিষ্ট দেশটির নাগরিক নন।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো এর আগে ৪টি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। যে রেকর্ড রয়েছে কেবল পেলে, উই সিলার এবং মিরোস্লাভ ক্লোসের। যদি কাতার বিশ্বকাপে একটি গোলও তিনি করতে পারেন, তাহলে তিনিই হয়ে যাবেন একমাত্র ফুটবলার, যাঁর ৫টি বিশ্বকাপেই গোল করার অভিজ্ঞতা অর্জিত হবে।

গত তিনটি বিশ্বকাপেরই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ইটালি, ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেই স্পেন এবং ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় জার্মানি। এবার কী হবে? ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের কাছে কিন্তু এই মিথ ভাঙাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।