পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচেই ক্রিকেটবিশ্ব পেল এক নতুন রেকর্ডের সাক্ষী। দীর্ঘদিন ধরে ফর্মে না থাকা বাবর আজ়ম (Babar Azam) যেন ব্যাট হাতে দিলেন নিজের ফিরে আসার ইঙ্গিত। এক ইনিংসেই ভেঙে দিলেন বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার রেকর্ড। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে (WTC) প্রথম এশিয়ান ব্যাটার হিসেবে ৩০০০ রানের গণ্ডি পার করলেন বাবর আজম (Babar Azam)।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে লাহোর টেস্টে প্রথমে ব্যাট করতে নামে পাকিস্তান। বাবর (Babar Azam) নামেন চারে। যদিও ইনিংসটি বড় করতে পারেননি, মাত্র ২৩ রানেই থামতে হয় তাঁকে। কিন্তু ওই ছোট্ট ইনিংসেই তৈরি হয় ইতিহাস। সাইমন হার্মারের বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে ৪৮ বলে ৪টি বাউন্ডারির সাহায্যে করেন ২৩ রান। আর সেই রানই তাঁকে পৌঁছে দেয় এক অনন্য উচ্চতায়। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে এখন তাঁর সংগ্রহ ৩০২১ রান।
৩৭ ম্যাচ খেলে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন বাবর। রয়েছে ৮টি সেঞ্চুরি ও ১৮টি অর্ধশতরানের ইনিংস। তাঁর ব্যাটিং গড়ও যথেষ্ট প্রশংসনীয়। এই রেকর্ড গড়ে বাবর টপকে গেলেন ভারতের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার বিরাট কোহলি (২৬১৭ রান, ৪৬ ম্যাচ) ও রোহিত শর্মাকে (২৭১৬ রান, ৪০ ম্যাচ)।
উল্লেখযোগ্য বিষয়, বিরাট ও রোহিত ইতিমধ্যেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে বাবরের (Babar Azam) এই রেকর্ড টপকে গিয়েছে ভারতের বর্তমান তারকা ক্রিকেটারদেরও। শুভমন গিল এখনও পর্যন্ত ৩৯ টেস্টে করেছেন ২৮২৬ রান, আর ঋষভ পন্থের সংগ্রহ ২৭৩১ (৩৮ টেস্ট)। তুলনায় বাবরের ধারাবাহিকতা অনেক বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠেছে WTC।
তবে বাবরের এই নজিরের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে কারণ গত কয়েক বছরে টেস্টে বাবরের ব্যাট একেবারেই চুপ ছিল। শেষ তিন বছরে তাঁর ব্যাটিং গড় নেমে গিয়েছিল ২৫ নিচে। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডও নতুন ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে গিয়ে বাদ দিয়েছিল বাবরকে। এমনকি অধিনায়কত্ব হারানো, ফর্মের জন্য সমালোচনা। এশিয়া কাপে ব্যর্থতা, সব কিছু মিলিয়ে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছিলেন তিনি।
তবুও হাল ছাড়েননি। নিজেকে প্রমাণ করার মঞ্চ খুঁজছিলেন। আর সেই সুযোগ পেতেই যেন পুরো আত্মবিশ্বাসে ব্যাট হাতে নেমে এলেন। যদিও ইনিংসটি বড় হয়নি, কিন্তু বাবরের এই রেকর্ড প্রমাণ করল, অভিজ্ঞতা ও ক্লাস কখনও হারিয়ে যায় না।
তাঁর এই ফিরে আসায় খুশি পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীরা। সামাজিক মাধ্যমে ভেসে আসছে প্রশংসার বন্যা। অনেকেই বলছেন, “বাবর ইজ ব্যাক!” এই রেকর্ড শুধু সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাবরের মনোবল, প্রতিজ্ঞা ও ধারাবাহিকতায় ফেরার বার্তা।



