পাকিস্তানের ক্রিকেটের জন্য সোমবারের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম ওডিআই একটি বিশাল আঘাতের সূচনা করল, যখন তাদের পেস বোলার নাসিম শাহ (Naseem Shah) আবারও আঘাতগ্রস্ত হলেন। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে নাসিম শাহ (Naseem Shah) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে আসার পর কিছু সময়ের জন্য অসাধারণ প্রতিভা প্রদর্শন করেন, তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি আবারও ইনজুরির কবলে পড়েন। এই পরিস্থিতি পাকিস্তানের সিরিজে আশা এবং তাদের বোলিং আক্রমণের উপর বড় প্রভাব ফেলে।
পাকিস্তান প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাদের শীর্ষ অর্ডার অস্ট্রেলিয়ার কঠোর বোলিং আক্রমণের মুখে পড়ে। কিছু সময়ের মধ্যে পাকিস্তান ১৪৮-৭ রানে পড়ে যায়, যেখানে ২০০ রানের কমে আউট হওয়ার হুমকি দেখা দেয়। তখন নাসিম শাহ মাঠে আসেন, যিনি নন-স্ট্রাইক পজিশনে দাঁড়িয়ে ৩৯ বলে ৪০ রান করেন, চারটি ছক্কা এবং একটি বাউন্ডারি মেরে। তার আক্রমণাত্মক ব্যাটিং পাকিস্তানকে ২০০ রানের সীমা অতিক্রম করতে সহায়তা করে, এবং তারা শেষ পর্যন্ত ২১৪ রানে ইনিংস শেষ করে।
নাসিমের এই ব্যাটিং ক্যামিও ছিল প্রত্যাশিত, তবে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগের ওডিআই রেকর্ড ছিল ১৪ ম্যাচে মাত্র ৩১ রান, কিন্তু এই ইনিংসে তার উদ্যমের প্রমাণ পাওয়া যায়। যদিও তার ব্যাটিংয়ে সাময়িক উত্তেজনা ছিল, তিনি আবারও বোলিংয়ে ফিরে আসার পর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।
নাসিমের দুঃখজনক বোলিং প্রত্যাবর্তন
দুর্ভাগ্যবশত, নাসিমের ব্যাটিংয়ে উত্থান বোলিংয়ে ভালোভাবে প্রতিফলিত হয়নি। ফিরে আসার পর তিনি তার লাইন এবং রিদমে সমস্যা অনুভব করেন এবং প্রথম ওভারে ১৪ রান দেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরও উন্নতি করেন এবং দ্বিতীয় ওভারে অস্ট্রেলিয়ার যুব প্রতিভা জেক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ককে আউট করেন। তবে খেলার শেষ দিকে এসে পরিস্থিতি আবারও খারাপ হয়।
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের মাঝখানে, নাসিম আচমকাই ইনজুরির কারণে মাঠ ছেড়ে চলে যান। দ্বিতীয় ওভারের শুরুতে তিনি স্পষ্টভাবে কষ্ট পাচ্ছিলেন এবং তার বাঁ পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। নাসিমকে মাঠ থেকে বের হয়ে যেতে দেখে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের জন্য এটি একটি বড় আঘাত ছিল, যারা তার গতির উপর নির্ভরশীল।
পাকিস্তানের সামনের পথ এবং উদ্বেগ
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই পরাজয় এবং নাসিমের ইনজুরি পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করেছে। নাসিমের সুস্থতা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পাকিস্তানের সামনে একটি ব্যস্ত আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চলমান ওডিআই সিরিজের পরে পাকিস্তান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে, যা 18 নভেম্বর শেষ হবে, এবং এরপর জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ওডিআই এবং টি-টোয়েন্টি সিরিজে অংশগ্রহণ করবে। নাসিমের ফিটনেস পাকিস্তানের সুযোগ-সুবিধার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নাসিমের ইনজুরি ইতিহাস একটি উদ্বেগের বিষয়, বিশেষ করে তিনি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট হারের পর বিশ্রাম নিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে পাকিস্তান তাদের দলে পুনর্বিন্যাস করতে পেরেছিল, যেখানে বাবর আজম এবং শাহীন আফ্রিদির মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তবে তার সাম্প্রতিক পুনঃআঘাত পাকিস্তানের পেস বিভাগে গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
শাহীন এবং রাউফের ভূমিকা, তবে কি তা যথেষ্ট?
নাসিমের অকালীন প্রস্থান সত্ত্বেও, শাহীন আফ্রিদি এবং হারিস রাউফ পাকিস্তানের জন্য কিছু আশার মুহূর্ত উপস্থাপন করেছেন। শাহীন জশ ইনগ্লিসকে আউট করেন, যিনি অস্ট্রেলিয়ার ধীর গতির চেজের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। রাউফের টানা দুই উইকেট পাকিস্তানকে কিছুটা শক্তি প্রদান করে, কিন্তু দলের বোলারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে আটকাতে পারেনি।
প্রথম ওডিআইয়ের পরে, পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্টের সামনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার চাপ রয়েছে। তারা মূল্যায়ন করতে হবে যে নাসিমের ইনজুরি একটি দীর্ঘ বিশ্রামের প্রয়োজন, নাকি তিনি টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য সময়মত পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জিং ক্যালেন্ডার মাথায় রেখে, তাদের পেস আক্রমণের স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য রোটেশন নীতি গ্রহণ করতে হতে পারে।