বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে (WTC Final 2025) চোখ রাখছে গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। আগামী ১১ জুন ঐতিহাসিক লর্ডসের মাটিতে মুখোমুখি হতে চলেছে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে শুধু টেস্ট খেতাব জয়ের জন্য নয়, একাধিক ব্যক্তিগত রেকর্ডের দিকেও নজর থাকবে ক্রিকেট ভক্তদের। বিশেষ করে নজরে থাকবেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক (Australia Captain) প্যাট কামিন্স (Pat Cummins), যিনি একাধারে অজি বোলিং ইউনিটের নেতা এবং সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন একাধিক ঐতিহাসিক মাইলস্টোনের মুখে।
কামিন্সের সামনে ৩০০ উইকেটের মাইলস্টোন
এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটে প্যাট কামিন্সের ঝুলিতে রয়েছে ৬৭ টেস্টে ২৯৪ উইকেট। অর্থাৎ আর মাত্র ৬টি উইকেট পেলেই কামিন্স হয়ে যাবেন অস্ট্রেলিয়ার ষষ্ঠ বোলার যিনি টেস্টে ৩০০ উইকেটের গণ্ডি পার করবেন। তাঁর আগে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন গ্লেন ম্যাকগ্রা, শেন ওয়ার্ন, নাথান লায়ন, ডেনিস লিলি এবং মিচেল জনসনের মতো কিংবদন্তিরা। লর্ডসের ২২ গজে কামিন্স যদি তাঁর স্বাভাবিক ছন্দে থাকেন, তাহলে এই মাইলস্টোন স্পর্শ করা কেবল সময়ের অপেক্ষা।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বাধিক উইকেটধারী হওয়ার সম্ভাবনা
চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ সার্কেলে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উইকেট নিয়েছেন ভারতের জসপ্রীত বুমরাহ। তিনি ১৫ ম্যাচে ৭৭টি উইকেট নিয়েছেন। অন্যদিকে কামিন্স খেলেছেন ১৭টি ম্যাচ, উইকেট সংখ্যা ৭৩। অর্থাৎ ফাইনালে কামিন্স যদি চারটি উইকেট নিতে পারেন, তাহলে বুমরাহকে টপকে চলতি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চক্রে সর্বাধিক উইকেটধারী হয়ে যাবেন তিনি। এই পরিসংখ্যান নিঃসন্দেহে কামিন্সকে অনুপ্রাণিত করবে মাঠে সেরা পারফরম্যান্স উপহার দিতে।
ইংল্যান্ডে কামিন্সের দুরন্ত রেকর্ড
ইংল্যান্ডের মাটিতে কামিন্সের রেকর্ডও যথেষ্ট ভালো। তিনি এখানে ১১টি টেস্টে ৫১টি উইকেট নিয়েছেন। বিশেষ করে লর্ডসের মতো ঐতিহাসিক ভেন্যুতে তাঁর আগুনে স্পেল যে কোনও ব্যাটিং লাইন-আপকে ধ্বংস করে দিতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা এবার এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চলেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ক্রিকেটার টম মুডি মনে করেন, এই অস্ট্রেলিয়ান দলের মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ ঐতিহ্যবাহী চেতনা। তিনি বলেন, “এই দলের অনেক প্লেয়ার আগেও বড় মঞ্চে জিতেছে। অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের স্বর্ণযুগের ধারাবাহিকতা এখনও বজায় রয়েছে এই প্রজন্মের মধ্যে। তাই এবারের ফাইনালেও দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখাবে অজি শিবির।”
ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ভারতীয়রাও
এবারের ফাইনালে অনফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন ইংল্যান্ডের রিচার্ড ইলিংওর্থ ও নিউজিল্যান্ডের ক্রিস গাফানে। পাশাপাশি প্রাক্তন ভারতীয় পেসার জাভাগাল শ্রীনাথ থাকবেন ম্যাচ রেফারির ভূমিকায় এবং চতুর্থ আম্পায়ার হিসেবে থাকবেন নীতীন মেনন। আইসিসি ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেছে।
১১ জুন থেকে শুরু হতে চলেছে পাঁচ দিনের এই মহারণ। কামিন্স যদি নিজের ছন্দে থাকেন, তাহলে রেকর্ড বইয়ের আরও এক গৌরবময় অধ্যায়ে যোগ হতে চলেছে তাঁর নাম। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়া চাইবে টানা দ্বিতীয়বারের জন্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ট্রফি ঘরে তুলতে। এখন দেখার, লর্ডসের সবুজ গালিচায় শেষ হাসি হাসে কোন শিবির।