হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে হেরে গিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan) কোচ হুয়ান ফেরান্দো। আক্রমণে ধার যে আরও বাড়াতে হবে তাদের, তা স্বীকার করে নিলেন তিনি। সেইসঙ্গে মঙ্গলবার সকাল থেকে সেমিফাইনালের পরিকল্পনা তৈরি করতে শুরু করবেন বলে জানান স্প্যানিশ কোচ।
হার দিয়ে এবারের আইএসএলে লিগ পর্ব শেষ করেছেন বাগান। স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ সমর্থক থেকে কর্মকর্তা- সকলেরই। আর এই তালিকায় রয়েছে ফেরান্দোও। তিনি বলেন, ‘মোটেই ভালো লাগছে না। দু’গোলে জেতাটা সহজ কাজ ছিল না। ওরা গোল করার পরে কাজটা আরও কঠিন হয়ে গেল। আমরা ম্যাচে ফেরার জন্য সব কিছুই করেছি। কিন্তু সফল হতে পারিনি। তবে পাসিং, ক্রস এগুলোতে আমরা এগিয়ে থাকতে পারিনি। তাই যে ফল হওয়ার সেটাই হয়েছে। এখন সেমিফাইনাল নিয়ে ভাবনা শুরু করতে হবে।’
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ানোর জন্য ডেভিড উইলিয়াম, প্রবীরদের মাঠে নামান ফেরান্দো। তবে হুগো বুমৌসকে এই ম্যাচে পাননি তিনি। তাহলে বুমৌসের না থাকাটই এক্স-ফ্যাক্টর? একথা মানতে নারাজ। সবুজ-মেরুন হেডস্যারের পরিষ্কার উত্তর, ‘রয়, উইলি, লিস্টন, মনবীর, কিয়ান, প্রবীর, শুভাশিস সবাই মিলেই খুব চেষ্টা করেছে গোল করার। একজন ছিল না বলে অজুহাত দেওয়াটা উচিত হবে না। সব রকম ভাবেই চেষ্টা করেছিলাম আমরা। বক্সের খুব কাছাকাছিই খেলেছি আমরা। ওদের গোল এরিয়ায় প্রচুর পাসও খেলেছি। কিন্তু ওদের দুর্ভেদ্য ডিফেন্সে আমরা আটকে গিয়েছি। আমাদের আক্রমণে আরও ধার বাড়াতে হবে। জায়গা কাজে লাগানোর ব্যাপারে আরও উন্নতি করতে হবে। ভুলগুলো শোধরাতে হবে। একজন খেলোয়াড় না থাকা নিয়ে হা হুতাশ করে লাভ নেই।’
এই ধরনের হারের পরে অন্য কোচেদের অনেককে বিরক্ত হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে দেখা গিয়েছে। সেই পথে হাঁটেননি ফেরান্দো। মাঠে দাঁড়িয়ে বিপক্ষের ও নিজের দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেন। এটি পূর্বপরিকল্পিত কি না জানতে চাওয়া হলেন তিনি বলেন, ‘ওরা টানা সাতটা ম্যাচ জিতে লিগ টেবলে এক নম্বর জায়গাটা অর্জন করতে পেরেছে। মাঠে থেকে ওদের অভিনন্দন জানানোটা আমার কর্তব্য ছিল। সেটাই করেছি। সারা মরসুমই ওরা ভালো খেলেছে। জামশেদপুরের এটা প্রাপ্য ছিল।’ এবার লক্ষ্য সেমিফাইনাল। শেষ চারের যুদ্ধ নিয়ে তিনি বললেন, ‘দলের কারও মন ভালো নেই। এখন কোচ হিসেবে আমার প্রধান কাজ খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফদের চাঙ্গা করে তোলা।’
সেমিফাইনালে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে খেলতে হবে মোহনবাগানকে। এই দলটার বরাবরই প্রশংসা করেছেন পালতোলা নৌকার সারথি। ফলে লড়াইটা যে কঠিন হবে, তা মেনে নিলেন তিনি। বললেন, ‘সেমিফাইনালে যতগুলো দল উঠেছে, তাদের প্রত্যেকেই যোগ্য দল হিসেবে এই জায়গায় পৌঁছেছে। মরসুমটা ভালো কাটছে তাদের। এখন আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত উপভোগ করে ফুটবলটা খেলা। চাপ তো থাকবেই। তবে হায়দরাবাদের মতো ভালো দলের বিরুদ্ধে খেলাটাও দারুণ অভিজ্ঞতা। আমার মনে হয় নক আউট পর্বে প্রতিটা ম্যাচই ভালো হবে। প্রত্যেক দলই জেতার চেষ্টা করবে। আমার ধারণা, ২০টা ম্যাচ হয়ে যাওয়ার পরে এবার শেষ তিনটি ম্যাচ সবাই উপভোগ করার চেষ্টা করবে।