আর্জেন্টিনা, ফুটবল মানচিত্রে এক প্রতিবাদের ঝড়

ফুটবল বিশ্বে বিদ্রোহ মানে আর্জেন্টিনা (Argentina)। মার্টিনেজ সেরকমই এক প্রমাণ। না হলে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল্ডেন গ্লাভসকে কেউ গোপনাঙ্গের সামনে ধরে বিশেষ ইঙ্গিত করে না। কি…

Argentina

ফুটবল বিশ্বে বিদ্রোহ মানে আর্জেন্টিনা (Argentina)। মার্টিনেজ সেরকমই এক প্রমাণ। না হলে বিশ্বকাপের মঞ্চে গোল্ডেন গ্লাভসকে কেউ গোপনাঙ্গের সামনে ধরে বিশেষ ইঙ্গিত করে না।

কি বলছেন মার্টিনেজ নিজে। তার নিজস্ব যুক্তি হল উনি নাকি কাতারের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গোল্ডেন গ্লাভস পেয়ে আত্মহারা হয়ে পড়লেন তিনি। জেতার আবেগকে ওই বড় মঞ্চে ধরেই রাখতে পারলেন না। এমনই তাঁর প্রতিবাদ।।

বিশ্বকাপ শুরুর লগ্ন থেকেই তাঁরা এমন নানা প্রতিবাদ দেখিয়েছে। ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ। উরুগুয়ে বিশ্বকাপে ইওরোপের কোনও দেশ খেলতে রাজি হয়নি লাতিন আমেরিকা অনেক দূর বলে। টুর্নামেন্ট বয়কট করেন তাঁরা। আর্জেন্টিনা বিষয়টিকে ‘অপমান’ হিসেবে নিয়ে জানিয়ে দেয়, ফিফা থেকে সদস্যপদ তুলে নিয়ে প্যান আমেরিকান ফুটবল ফেডারেশন গড়বেন তারা। কাজে এসেছিল আর্জেন্টিনার রাগ। ইওরোপের বেশ কয়েকটি দেশ খেলতে রাজি হয়।

কিন্তু অনেকেই শুনলে অবাক হয়ে যাবেন, সেই বিশ্বকাপে ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ম্যাচ ছেড়ে দেয় আর্জেন্টিনা। সেবার মেসির সমতুল্য খেলোয়াড়ের নামটি হল লুই মন্টি। তৎকালীন আমেরিকা মহাদেশের সব চেয়ে সেরা ডিফেন্ডার। মন্টিকে তুলে নেওয়া হয়। বলা হয়, মন্টি চোটের কারণে বাইরে। আর্জেন্টিনা তখন ২-১ গোলে লিড নিচ্ছে। তবে এর বহু বছর পর মন্টির নাতনি লোরেনা মন্টি জানান, সেদিন তাঁর ঠাকুরদাকে হুমকি দেওয়া হয়। লোরেনা জানান, তাঁর দাদুকে বলা হয়, ম্যাচ না হারলে তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।

মজার ব্যাপার হল, এরপর মন্টি আর দেশের জন্য খেলেননি। না না তিনি অবসর নিয়েছিলেন, এমন তথ্যও নেই। বরং ১৯৩৪ বিশ্বকাপে তাঁকে দেখা যায় ইতালির জার্সিতে। হ মন্টি মুসোলিনির কাছে।জপ্রতি মাসে তাঁর বেতন ছিল ৫ হাজার মার্কিন ডলার। সঙ্গে একটি গাড়ি এবং একটি বাড়ি।
এবার আসা যাক ১৯৩৮ সালের কথায়—সেবার ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা খেলেনি। গোঁসা হয়েছিল। কেন তাঁরা বিশ্বকাপর হোস্ট হতে পারেননি। ১৯৩৪ সালে তো বিশ্বকাপ ইতালিতে হয়েছে। তাহলে আবার কেন ইওরোপের একটি দেশ (পড়ুন ফ্রান্স) টুর্নামেন্ট হোস্ট করার সুযোগ পাবে! লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা কেন নয়! কিন্তু সত্যিই কেন ফ্রান্স ফুটবল বিশ্বকাপ হোস্ট করতে পারল? উত্তর হল ফ্রান্স পেয়েছিল ফ্রান্সের পক্ষে ছিল ১৯টি ভোট আর আর্জেন্টিনা পেয়েছিল মাত্র ৩টি ভোট। ফিফাকে মামাবাড়ি ভেবে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের নাম তুলে নেয় আর্জেন্টিনা। হ্যাঁ দাদা, এও তো ‘প্রতিবাদ’।

এবার আসা যাক মারাদোনার কথায়। তিনি ফুটবলার নন, সাক্ষাৎ ঈশ্বর। সত্যিই ওমন পায়ের জাদু বিশ্ব খুব কম খেলোয়াড়ের মধ্যেই দেখেছে। কিন্তু ফুটবলকে দু’বার কলুষিত করেছেন মারাদোনা। হ্যাঁ কলুষিত করেছেন—

১৯৮৬ সাল। ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ। ফকল্যান্ড দ্বীপ নিয়ে আর্জেন্টিনা আর ইংল্যান্ডের মধ্যে প্রবল গন্ডগোল চলছে। প্রথম গোলের ক্ষেত্রে মারাদোনা হেড করতে ওঠার সময় বল তাঁর হাতে লেগে গোলে ঢোকে। ইংরেজ ফুটবলাররা অভিযোগ জানালেও কাজ হওয়া। পরে মারাদোনা বলেন, ওটা ‘হ্যান্ড অফ গড’।

চমকপ্রদ তথ্য ফাঁস করেছিলেন মারাদোনার সতীর্থ জর্জ ভলদানো। পরবর্তী সময়ে তিনি তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, মারাদোনা অনুশীলনেও একই রকম ভাবে গোল করতেন। স তখন মারাদোনা নাকি বলেছিলেন,, তাড়াতাড়ি কিক অফ শুরু করতে হবে।