এ মাঠ বয়স মানে না, প্রমাণ করল আবার

বয়স বাড়ছে বিরাট কোহলি রোহিত শর্মাদের। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকেই ভাবনা চিন্তা শুরু করে দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, কার জায়গায় কাকে রাখা যায়। এখন…

বয়স বাড়ছে বিরাট কোহলি রোহিত শর্মাদের। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পর থেকেই ভাবনা চিন্তা শুরু করে দেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড, কার জায়গায় কাকে রাখা যায়। এখন থেকে দু’বছর পর কার শরীর দেবে, কে টিকে থাকবে, কেউ জানে না। রাজার হাড়ও ধুঁকে যায়, এ আর এমন কি!

কিছুদিন আগে কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার এক সাক্ষাৎকারে বেশ ক্ষোভের সাথেই বলেছিলেন, অজিঙ্ক্য রাহানে কেন? দলে এত ছেলে থাকতে তাঁকে সহ অধিনায়ক কেন করবে? পরবর্তী অধিনায়কত্বের সারিতে দাঁড় করালেন শুভমন গিল, অক্ষর পটেলকে। বয়েস ছোট, গরম রক্ত, আশ্বাস দিতে হবে তাঁদের, “তোমরা আছো, তৈরী হও।”

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার তাঁর অবসর নিয়ে কথা বলার সময় একবার বলেছিলেন যে দলের সমস্ত সিনিয়র দুম করে একসাথে অবসর নেবেন না, বিশেষত তিনি এবং উসমান খোয়াজা। দল ফাঁকা করে দিয়ে ছোটদের হাতে সঁপে দিয়ে সরে যাবেন না তাঁরা।

ভারতীয় দল থেকে সরাসরি এমন কিছু বলেনি কেউ, তবে ম্যানেজমেন্টের হাব ভাব হয়তো সেরমই বলছে। যদি চলেও যায় সব, তবু যেন ভরা থাকে মাঠ।

যদিও অধিনায়কত্ব নিয়ে যে কে সেই কুলুপ। দরবারে শুধু “কোহলি গেলে রোহিত আনো, রোহিত গেলে কোহলি আনো” চলে। ঘরোয়া ক্রিকেটে শিবম মাভির মতোন কিছু ছেলেপুলেকে সোজা অধিনায়কের আসনে বসানোর সাহস আন্তর্জাতিক দলের ম্যানেজমেন্টের আছে কিনা সন্দেহ!

তবে দল ঠিক থাকলে বোধহয় সব ঠিক থাকে। কোনো এক অধিনায়ক হার্দিক পান্ড্য যেমন বলেছিলেন, “আমি জানি না, যেমন মোহিত বলেছে, আমি তেমন করেছি।” ম্যানেজমেন্ট হয়তো সেই রাস্তাতেই হাঁটছে। দলটাকে আগে দাঁড় করাতে হবে। ছবির মতোন কোহলি আর রাহানের মাঝে কোনো এক শুভমনকে দাঁড় করিয়ে নিঃশব্দে জানান দিচ্ছে, “এবার তো তোমাদেরই টানতে হবে।” কোহলির ছায়ায় বেমালুম দাঁড়িয়ে থাকা জয়সওয়াল একদিন যশস্বী হবেন, সেই আশায় দিন গোণে ভারতবাসী।

সেই কোন কালে দল থেকে বার করে দেওয়া সিরাজকে ছাড়া এখন প্রথম একাদশ ভাবতেই পারে না দল। শামি নেই, বুমরা নেই, ফাস্ট বোলিংয়ের অঘোষিত দায়িত্ব তাঁরই। বল করছে, ফিল্ড করছে, ক্যাচ করছে, বিরাটের মতোন আগ্রাসনটাও পেয়েছে দিব্যি!

ঋষভ পন্থ এলে পর ঈষানের বা ভরতের ভাগ্য জানা নেই কারর। তবুও অভাব যেন টের না পায় কেউ, রোয়াব যেন বজায় থাকে! বাকিটাতো বড়োরা দেখবে। প্রয়োজনে সেই কোহলির রাজা- নির্দেশ দেবে সোজা দাঁড়াবে না সরে যাবে। প্রশংসাও করবে কিংবদন্তি সিনিয়রদের। এই না হলে সাহস!

ক্রিকেটে এমন জিনিস একেবারেই বিরল নয়। কোনো এক সৌরভ গাঙ্গুলী হাত ধরে ক্রিকেটের স্টেশনে পৌঁছে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। তিনি পরে হাত ধরলেন কোহলি রোহিতদের। আজ তাঁরা ক্রিকেটের মাথা- হাত ধরেছেন শুভমন, সিরাজ যশশ্বীর মতো কতো তরুণের। কাল তাঁরাও ধরবে কারর হাত, পৌঁছে দেবে গন্তব্যে।

এগিয়ে দিলে পর এই মাঠ বয়স মানে না। ওই পিচ শুধু ক্ষমতা বোঝে। বোঝে দক্ষতাও। সেই জিনিস এই সিনিয়রাই বুঝিয়ে দিয়ে যাবে। ব্যাট হাতে নিঃশব্দে প্রতিজ্ঞা করেছিল যে,

“অবশেষে সব কাজ সেরে
আমার দেহের রক্তে নতুন শিশুকে
করে যাব আশীর্বাদ,
তারপর হব ইতিহাস।।”