Lyrebird: প্রকৃতির রেকর্ডার মিমিক পাখি! মানুষ-গাড়ির শব্দ হুবহু নকল করে

পাখি নয় যেন স্মার্টফোনের টকিং টম। মানুষের কন্ঠস্বর থেকে শুরু করে গাড়ির শব্দ সবকিছুই নকল করতে পারে এই পাখি। এই পাখি হল লায়ারবার্ড বা মিমিক…

Lyrebird

পাখি নয় যেন স্মার্টফোনের টকিং টম। মানুষের কন্ঠস্বর থেকে শুরু করে গাড়ির শব্দ সবকিছুই নকল করতে পারে এই পাখি। এই পাখি হল লায়ারবার্ড বা মিমিক পাখি। শুধু মানুষের কন্ঠস্বর নয় এই পাখি নকল করতে পারে কুকুরের ঘেউ ঘেউ সহ ঘড়ির এলার্ম। এই পাখি কণ্ঠস্বর ও ধ্বনি অনুকরণে পারদর্শী। তার এমন প্রতিভা অবাক এবং একইসঙ্গে মুগ্ধ করবে যে কোনও মানুষকে।

পৃথিবীতে অ্যালবার্ট লায়ারবার্ড ও সুপার লায়ারবার্ড এই দুই ধরনের লায়ারবার্ড রয়েছে। এই লায়ারবার্ড পাখিরা সাধারণত দক্ষিণ পূর্ব অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। এই পাখিরা আকারে বেশ বড় তবে এদের ডানা ছোট এবং পা শক্ত হয়। স্থলে বসবাসকারী এই পাখিটির দেখতে অনেকটা মুরগির মত। যে কারণে এই পাখিগুলো অন্য পাখিদের মতো আকাশে উড়তে পারদর্শী নয়।

কিন্তু দেখতে মুরগির মতো হলেও লায়ারবার্ড পাখিরা মুরগির চেয়েও দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। এক্ষেত্রে স্ত্রী মিমিক পাখির তুলনায় পুরুষ মিমিক পাখি দেখতে অনেক বেশি সুন্দর। সুন্দর পুরুষ লায়ারবার্ড পাখির রয়েছে একটি সুন্দর লেজ যার মধ্যে রয়েছে আট জোড়া পালক। যখন পাখিটি তার সবকটা পালক মেলে তখন তাকে দেখতে গ্রীক বাদ্যযন্ত্র লায়ারের মতো দেখায়। যে কারণে পাখিটিকে লায়ারবার্ড বলা হয়।

আবার কখনো কখনো এই পাখিগুলো ময়ূরের মত তাদের লেজ নাড়ায়। যা দেখে মনে হবে পাখি গুলো নৃত্য করছে। তবে স্ত্রী পুরুষ উভয় পাখির লেজের উপরের অংশ গাঢ় বাদামী রঙের। এবং নিচের অংশ রুপালী ধূসর রঙের। লেজ সহ মিমিক পাখি প্রায় ৮০ থেকে ১০০ সেন্টিমিটার এর মতো লম্বা হতে পারে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় পাখির শরীরের উপরের অংশের পালক বাদামী রঙের হয়। অন্যদিকে এদের ঘাড়ের উপরের দিকে রয়েছে হালকা বাদামি এবং লাল রঙের চিহ্ন। একইসঙ্গে এদের ঠোঁট ও পা এবং পায়ের পাতার রং কালো।

মিমিক পাখি উড়তে পারদর্শী না হলেও এদের রয়েছে এক অনন্য বৈশিষ্ট্য। যা আবার অন্য পাখিদের নেই। এই পাখি অনুকরণে অত্যন্ত পারদর্শী। অনেকে আবার জেনে অবাক হবেন যে এই পাখি মানুষের কন্ঠস্বর হুবহু নকল করতে পারে। আবার এই পাখি যখন সংকট অনুভব করতে পারে তখন কিছুক্ষণ চারিদিকে পর্যবেক্ষণ করে অন্য পাখিদের কাছে সংকেত পাঠায়। তারপর সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

অন্যদিকে একটি স্ত্রী মিমিক পাখি পাঁচ বা ছয় বছর বয়সে প্রজনন করতে পারে। অন্যদিকে পুরুষ পাখি ছয় থেকে আট বছর বয়সে প্রজনন শুরু করে। জানা যায় দীর্ঘজীবী এই পাখিটি প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।