বিশেষ প্রতিবেদন: তাদের এবারের পুজোর থিম “মানবিক’। তাঁরা দুর্গাপুজোকে এক আলাদা মাত্রা এনে দেবার চিন্তাভাবনা করেছে। তাঁরা ছৌ-শিল্পীদের উন্নতিকল্পে সাহায্য করবে। এমনই ভাবনা ভবানীপুর ৭৫ পল্লীর সদস্যদের।
দক্ষিণ কলকাতার এই পুজোর সদস্যরা প্রতি বছর সমাজের প্রতি একটি বার্তা পৌছে দিতে চায়, এর জন্যই পুজোটি ধীরে ধীরে উল্লেখযোগ্যভাবে সামনের সারিতে উঠে এসেছে। তারই রেশ ধরে এবারের থিম ‘মানবিক’-এর মাধ্যমে তারা নিজেদের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে বদ্ধপরিকর। রামায়ণ, মহাভারত তথা ভারতের অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনী বর্ণনা করে নিজের শৈলীতে নাচের মাধ্যমে জনসমক্ষে তুলে ধরেন ছৌ শিল্পীরা, যা দেশ তথা বিদেশের মাটিতেও যথেষ্ট জনপ্রিয়।
পুরুলিয়া জেলার চড়িদা গ্রামটি ছৌ নৃত্যের মুখোশ তথা পোশাক তৈরির জন্য বিখ্যাত।লকডাউনের ফলে বাংলার এই অতি জনপ্রিয় লোকশিন্ন ‘ছৌ নৃত্য’ প্রদর্শন একেবারে বন্ধ। তার ফলে শিল্পীরা আর্থিকভাবে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। সেদিকে দৃষ্টিপাত করেই পুজো কমিটির এই সিদ্ধান্ত।
ক্লাবের সেক্রেটারি সুবীর দাস বলেন, “এ বছর আমরা ছৌ শিল্পীদের শিশু এবং পরিবারকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছি। রাজ্য সরকারের তরফেও যাতে তারা সাহায্য পায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে। ছৌ নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন সরঞ্জামের প্রদর্শনের মাধ্যমে যাতে ছৌ শিল্পীরা কিছুটা আর্থিকভাবে সাহায্য পায়, তারই চেষ্টা করছি আমরা। বিশ্ব কন্যা দিবসে তাই ২৫০ শিশুকন্যাকে বস্ত্র বিতরণ করা হবে এছাড়াও পুজো উপলক্ষে ৫০টি আর্থিকভাবে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত ছৌ শিল্পীর পরিবারকে নতুন বস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা হবে। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিন্তাধারা এবং অনুপ্রেরণায় আমরা এই কাজ করতে চলেছি নিজেদের সাধ্যমতো” ।
উল্লেখ্য, ভবানীপুর ৭৫ পল্লী এবারে ৫৭ তম দুর্গোৎসব পালন করছে, যার থিম রাখা হয়েছে “মানবিক’। মন্ডপ সজ্জা, প্রতিমা, পুজোর মন্ডপের পরিবেশ, সুরক্ষা, সংহতি প্রভৃতির উৎকৃষ্ট মেলবন্ধনে এই পুজো মানুষের মন জয় করে নিয়েছে ইতিমধ্যেই। “মায়ের আঁচল”, ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘আরশিনগর, ‘আমার স্বপ্ন ভবানীপুরে… লন্ডন’, ‘খুঁজে পাওয়া স্মৃতির খাতা- উল্টে পাতা শোনায় কথা” “মা’ ‘নীল সাদায় এক টুকরো ভবানীপুর’ এবং গত বছরের ‘নাগর দোলায় সবার পুজো’এর মতো থিম বিগত বছরগুলিতে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে এবং শহরের বিভিন্ন পুজোর মধ্যে এই পুজোর স্বাতন্ত্রতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। ক্লাবের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে এবারেও নিজেদের থিমের মাধ্যমে তারা শহরের পুজোগুলির মধ্যে আলাদা জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে।