Durga Puja 2021: দিল্লি কালিবাড়ির সেই মিলনোৎসবের অভাব টের পাচ্ছেন বাঙালি

নিউজ ডেস্ক: শুরুটা হয়েছিল ব্রিটিশ সরকারের আমলে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার সময়। কলকাতা থেকে যে সব বাঙালিরা পেশার তাগিদে দিল্লিতে এসে বসবাস করতে…

festival in Delhi Kalibari

নিউজ ডেস্ক: শুরুটা হয়েছিল ব্রিটিশ সরকারের আমলে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরিত করার সময়। কলকাতা থেকে যে সব বাঙালিরা পেশার তাগিদে দিল্লিতে এসে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন, তাঁদের হাত ধরেই।

১৯৩১ সালে শুরু হওয়া সেই পুজো, যা একদিন নিউদিল্লি দুর্গাপূজা সমিতির নামে শুরু হয়েছিল, সেটাই আজ নিউদিল্লি কালীবাড়ির পূজা নামে পরিচিত। একদিকে আরাবল্লি পর্বতের শুরু, অন্যদিকে রাইসিনা হিলস।মাঝের এই জায়গাটুকু ঘিরে গড়ে উঠেছে কালীমন্দির, সেখানেই হয় শারদীয়ার আবাহন।

দিল্লি চলে আসা বাঙালিরা নিজেদের বসবাসের জন্য এই জায়গাটিকেই বেছে নিয়েছিল। কারণ পার্লামেন্ট থেকে শুরু করে অন্যান্য সরকারি ভবন, সবই কাছাকাছির মধ্যে। বাঙালি আর দুর্গাপুজো তো সমার্থক।

festival in Delhi Kalibari

তবে অনেক আগে কিন্তু পুজো এরকম ছিল না। তখন আজকের নিউদিল্লি কালীবাড়ির পুজো নির্দিষ্ট এক জায়গায় হত না। পুজোর যিনি সম্পাদক হতেন, মায়ের পুজো হত তাঁর বসবাসের এলাকায়। এই অসুবিধা দূর করতে তখনকার ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন করা হয় মায়ের পুজোর জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা দেওয়ার। সেই সময় ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে ‘উপহার’ হিসাবে পাওয়া ১ একর জমিতেই গড়ে উঠেছিল আজকের কালীবাড়ি । যেখানে এখন প্রতি বছর মহা সমারোহে পালিত হয় দুর্গাপুজো।

৯০ বছরের এই পুজো আজ হাতবদল হয়ে তৃতীয়, চতুর্থ প্রজন্মের হাতে। কিন্তু ফাঁকি নেই পুজোর নিয়মনিষ্ঠার। প্রত্যেক বছর ভক্তিভরে, নির্ঘণ্ট মেনে দেবীর আরাধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রকমারি বাঙালি খাবারের স্টল বসে এখানে। সেজে ওঠে মন্দির প্রাঙ্গণ। যদিও অতিমারির আবহে কাটছাঁট সব জায়গাতেই।

কমিটির তরফে স্বপন গাঙ্গুলি জানালেন, করোনাকালে পুজোর অনুমতি মিলেছিল গত বছরও। কিন্তু গত বছর কার্যত নিয়মরক্ষায় পুজো সারতে হয়েছিল। এ বছরেও মাত্র দশদিন আগে অনুমতি পাওয়া গিয়েছে। তার মধ্যেই দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে সম্পূর্ণ কোভিড বিধি মেনেই মায়ের পুজো হবে। প্রতিমা দর্শন, অঞ্জলি, ভোগ বিতরণ সবই থাকবে। তবে সব কিছুই হবে সরকারি নির্দেশিকা মেনে। করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখেই এবারে কোনও পংক্তি ভোজন হবে না।

প্রত্যেকবারের মতো এবারও কৃষ্ণনগর থেকে এসেছে মূর্তি তৈরির কারিগর। বোলপুর থেকে এসে গিয়েছে ঢাকিরা। সবমিলিয়ে ১০ দিনের প্রস্তুতিতেই সেজে উঠেছে দিল্লি কালীবাড়ির দুর্গাপুজো। এক উদ্যোক্তা আক্ষেপের সুরে জানালেন, গোটা দিল্লিতে প্রায় তিনশোর কাছাকাছি দুর্গাপুজো হয়। আগে নিয়ম ছিল, রাজধানীর সমস্ত দুর্গাপ্রতিমা এখানে এসে জড়ো হবে।

তারপর এখান থেকে শোভাযাত্রা বের হবে। উদ্দেশ্য ছিল, দিল্লিবাসীকে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। কিন্তু বছর তিনেক আগে যমুনা দূষণের কারণে দিল্লি সরকারের পক্ষ থেকে এই নিরঞ্জন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই দিল্লিবাসী বাঙালিদের আক্ষেপ, কালীবাড়ি প্রাঙ্গণ দশমীর দিনে যে মিলনক্ষেত্রে পরিণত হতো সেটার অভাব এখন তাঁরা অনুভব করেন।