দেবীপক্ষে নেট পাড়ায় ভাইরাল ‘ভাগের মা’

নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: গত বছর পরিযায়ী মা, আর এই বছরে ভাগের মা। শিল্পী রিন্টু দাস চমক দিয়েই চলেছেন। মণ্ডপে অন্যরকম দুর্গা দেখতে হলে আবারও সেই…

parijayi-dirga Barisha

নিউজ ডেস্ক, কলকাতা: গত বছর পরিযায়ী মা, আর এই বছরে ভাগের মা। শিল্পী রিন্টু দাস চমক দিয়েই চলেছেন। মণ্ডপে অন্যরকম দুর্গা দেখতে হলে আবারও সেই আসতে হবে বেহালা বরিশা ক্লাবে।

শ্রমিকের আদলে প্রতিমা গড়ে সারা তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন শিল্পী। বলা হয় মৃন্ময়ী বা চিন্ময়ী হয়ে উঠছেন। ঠিক সেটাই হয়ে উঠেছিল ওই প্রতীকী দুর্গা মূর্তিতে। পরিয়ায়ী শ্রমিকের মা দুর্গার কোলে সন্তান। কোমরে বাঁধা পুটলি নিয়ে মা চলেছেন উদ্দেশ্যহীন পথে। করোনা আবহে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সারা দেশে প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা সমালোচিত হয়েছিল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে। জীবনের সেই বাস্তব গল্প জীবন্ত হয়ে উঠেছিল ওই মূর্তির মাধ্যমে। এবার আবারও পূজো মণ্ডপে শোরগোল ফেলতে তৈরি রিন্টু দাসের তৈরি ভাগের মা।

https://video.incrementxserv.com/vast?vzId=IXV533296VEH1EC0&cb=100&pageurl=https://kolkata24x7.in&width=300&height=400

এবার বড়িশার ওই ক্লাবের জন্য নতুন ভাবনাতে আবারও থাকছে সমাজ-চেতনা। শিল্পীর ভাবনায় ‘ভাগের মা’ বাংলায় একটা প্রবাদকে ঘিরে গড়ে উঠেছে যেখানে বলা হয় ‘ভাগের মা গঙ্গা পায় না’ ।

parijayi-dirga Barisha

শিল্পী রিন্টু দাসের , বল্লাল সেন স্বপ্নাদেশে মা দুর্গাকে পান। সেই দেবীকে তিনি পেয়েছিলেন ঢাকা অবস্থায়। তাই তাঁর নাম হয়, ঢাকেশ্বরী দুর্গা। ১৯৪৭ এ যখন দেশভাগকে কেন্দ্র করে বাংলা উত্তাল, তখন  লক্ষ লক্ষ মানুষকে ভিটেমাটি ছাড়া হতে হয়। ছাড় পাননি স্বয়ং মা দুর্গাও। বাস্তুহারা হতে হয় দেবীকেও। ঢাকেশ্বরী মায়ের মূর্তিকেও ঢাকা শহর থেকে কলকাতায় আনা হয়।

সেই মাতৃপ্রতিমা এখনও এই কলকাতা শহরে কুমোরটুলিতে নিয়মিত পূজিতা। কিন্তু শিল্পীর শঙ্কা, আবারও কোনও অস্থির সময় আসবে না তো? যখন ভিটেমাটি ছেড়ে মাকে আবারও কোথাও চলে যেতে হবে ? সন্তানদের নিয়ে মা যাবেন কোথায় ? শিল্পী-মনের আকাশে সেই দুশ্চিন্তার মেঘই প্রকাশ পেয়েছে তাঁর ভাবনায়। বাংলা প্রবাদের অর্থ, যে মায়ের সন্তানেরা চুলচেরা হিসেব করে মায়ের দায়িত্ব নেয়, সেই মায়ের দুর্দশার শেষ নেই। এই ভাবনার ফুটে রিন্টু দাসের মূর্তিতে। তাঁর প্রতিমা দাঁড়িয়ে সীমান্তে। তিনি কোনদিকে যাবেন জানেন না। এপার ওপর তোলপাড়।

শিল্পী রিন্টু দাস বরাবর মাতৃপ্রতিমার মধ্যে খুঁজে পেতে চান ঘরের-মাকেই। এবারের দেবীমূর্তির কম্পোজিশনে রয়েছে কাঁটাতার, ট্রাক। মা ভিটে ছাড়ার আগে ভাবছেন এই বাড়িতেই এসেছিলেন নববধূ হয়ে। আজ তিনি ঠিকানাহীন। মণ্ডপে শোনা যাবে ভাষ্যও – এই ভিটামাটি ছাইড়া, পোলাপান লইয়া আবার যামু কই? যেন দেশ ভাগের যন্ত্রণাই আবার ফিরে আসবে। সেই কম্পোজিশন দেখা অপেক্ষাতেই দর্শকমহল।